ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

প্রতিবাদ ও প্রত্যয়ের ভাষা গ্রাফিতি নাপুউবি’র সীমানা দেয়ালজুড়ে নান্দনিকতা

আমার সংবাদ ডেস্ক

আমার সংবাদ ডেস্ক

আগস্ট ১৩, ২০২৪, ০৫:২২ পিএম

প্রতিবাদ ও প্রত্যয়ের ভাষা গ্রাফিতি নাপুউবি’র সীমানা দেয়ালজুড়ে নান্দনিকতা

কিছুদিন আগেও দেয়ালগুলো ছিলো বার্ধক্যের সাথে লড়তে থাকা আশাহীন মানুষের মতো। জীর্ণ-শীর্ণ, বিবর্ণ, মলিন ও উদাসীন! একটুখানি মমতাময় স্পর্শের অভাবে তারা যেনো নির্বিকার জীবন-যাপন করছিলো এতোদিন।

হঠাৎ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সরকার বদলের সাথে সাথে বদলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন দেয়ালের রূপ-যৌবন। দেশের আনাচে কানাচে এতোকাল প্রাণহীন থাকা দেয়ালগুলো নীরবতা ভঙ্গ করে উচ্চারণ করতে লাগলো ছাত্র সমাজের অব্যক্ত কথামালা।

মানুষের না বলা কথাগুলো ছাত্র-ছাত্রীরা একে দিতে লাগলো দেয়ালের সমগ্র শরীরজুড়ে; এত করে সীমানাপ্রাচীরগুলো হয়ে উঠে প্রতিবাদ, দেশপ্রেম, সাম্য, বিপ্লব ও ভ্রাতৃত্ববোধের সুন্দরতম প্রতীক।

এরই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার নাটমুড়া পুকুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের (নাপুউবি) সীমানাপ্রাচীর জুড়ে শোভা পাচ্ছে বহুমাত্রিক দেয়াল-লিখন ও গ্রাফিতি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগ্রামী প্রত্যয়ে বলীয়ান শহিদদের স্বপ্নকে হৃদয়ের সমস্ত কল্পনা দিয়ে রঙতুলিতে ফুটিয়ে তুলেছেন বিদ্যালয়টির বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার সকাল থেকেই অনেকটা উৎসব উৎসব বিরাজ করছিলো বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে।

কেউ দেয়াল ঘষে পরিষ্কার করছেন, কেউবা সেখানে রঙের প্রলেপ দিচ্ছেন। কেউবা প্রলেপ দেয়া জায়গায় আঁকছেন লাল-সবুজের পতাকা বা বাংলাদেশের মানচিত্র। কেউবা আবার স্লোগান লেখায় ব্যস্ত।

এভাবে প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের রংতুলির সুনিপুণ আঁচড়ে বিদ্যালয়ের সীমানাপ্রাচীর ফুটে উঠেছে নানা ধরনের চিত্রকর্মে ও  বিভিন্ন পঙক্তিতে। এসব গ্রাফিতিতে ছাত্র অভ্যুত্থানে শহিদদের প্রতিকৃতি ও তাদের প্রতি শ্রদ্ধার পাশাপাশি উঠে এসেছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি কথা, উচ্চারিত হয়েছে সমাজ ও রাষ্ট্রে সমতার বাণী, স্বাধীনতা সংগ্রামের চেতনা, স্বৈরতন্ত্রের অবসান কথা, মুক্তবুদ্ধি চর্চার স্বরূপ, শৃঙ্খল-মুক্তির বার্তা, বাক্-স্বাধীনতার কথা, মাথা নত না করার প্রত্যয়, বিশ্বাস ও দ্রোহের কথা, বাঙ্গালি জাতীয়তাবাদের বুলি, সম-অধিকার থেকে শুরু করে সমস্ত অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ আর প্রতিরোধের অগ্নিময় উক্তি ও সাহসী চিত্রায়ণ। বিবর্ণ অতীত সাদা কালিতে মুছে তারা যেনো আগামী প্রজন্মের জন্য স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ হাজির করতে বদ্ধপরিকর। যে শিক্ষার্থী কখনো রংতুলি হাতে নেয়নি; সেও যেনো আঁকতে চাইছে তার ভাবনার কথা, সাহসের কথা কিংবা তার স্বপ্নের কথা।

বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অন্যান্যদের মতো হাজির হয়েছিলেন ২০১৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. ইমতিয়াজ উদ্দীন।

তিনি বলেন,‘ছাত্র-সমাজের সাথে সাথে সাধারণ মানুষের অর্ন্তভুক্তিতে এ আন্দোলন গণআন্দোলনে রূপ নেয়। আন্দোলনে শহিদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে এবং ভবিষ্যতে কেমন বাংলাদেশ হবে তা বর্তমান ও আগামী প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে আমাদের এই উদ্যোগ। এর সাথে সম্পৃক্ত হতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান মনে হচ্ছে।

অন্য অনেকের মতো রঙতুলি হাতে আঁকছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী ফাতেমা জান্নাত তানিশা।

অনুভূতি ব্যক্তকালে তিনি বলেন, এটা মূলত প্রতীকি প্রতিবাদ। এই প্রতিবাদের মাধ্যমে আমরা মূলত ‍‍`জিরো ডিসক্রিমিনেশন (সম্পূর্ণ বৈষম্যহীন)‍‍` নীতির বাস্তবায়ন চাই। অনেক সময় নিজেরা যা মুখ ফুটে বলতে পারি না, তা দেয়ালের মুখ দিয়ে বলাচ্ছি; যা লিখতে পারি না, তা রঙতুলিতে ফুটিয়ে তুলছি। যে কেউ দেয়ালের পাশ দিয়ে হেঁটে গেলেই যেন সাম্য, সম্প্রীতি ও অসাম্প্রদায়িকতার এক সুন্দর সম্মিলন দেখতে পায়।

সবচেয়ে ব্যস্ত পথচারীটাও একটু ঝিরিয়ে এক পলকে অবলোকন করছেন এসব সৃজনশীল কর্মযজ্ঞ। যেনো কৌতূহলী নয়নে দেখছেন ছাত্র-সমাজের আগামীর সোনার বাংলাকে। বিদ্যালয়টির অবস্থান সড়কের পাশে হবার কারণে এই উদ্যোগটি শুধু বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীরকে নয়, বরং পথচারীদের মনকেও নতুন করে রাঙিয়েছে। প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের এই সৃজনশীল প্রয়াস ভবিষ্যতের বৈষম্যহীন সাম্যের বাংলাদেশ গড়ার এক শুদ্ধতম প্রতিচ্ছবি।

ইএইচ

Link copied!