ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

ধামরাইয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো ‘বুচাই চাঁন পাগলার মাজার

নিজস্ব প্রতিনিধি

নিজস্ব প্রতিনিধি

সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৪, ১২:২০ এএম

ধামরাইয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো ‘বুচাই চাঁন পাগলার মাজার

ঢাকার ধামরাইয়ের বাটুলিয়া এলাকায় একটি মাজার ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো। নিজেদের তৌহিদি জনতা দাবি করে খননযন্ত্র (ভেকু) দিয়ে মাজারের খানকাহ ঘর ও পাগল ধাম ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছেন একদল লোক।

স্থানীয়দের কাছে মাজারটি ‘আধ্যাত্মিক সাধক’ বুচাই চাঁন পাগলার মাজার নামে পরিচিত।

বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মাজারটি ভাঙা শুরু হয়। বিকাল চারটা পর্যন্ত ভাঙচুর করা হয়। পরে সেনাবাহিনী ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেন।

উপজেলার সানোড়া ইউনিয়নের বাটুলিয়া এলাকায় কালামপুর-সাটুরিয়া আঞ্চলিক সড়কের পাশে অবস্থিত বুচাই চাঁন পাগলার মাজারটি।

ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর গত কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় মাজার ভাঙার ঘটনা ঘটছে। মাজারে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাকে ঘিরে মানুষজন আহতও হয়েছেন। এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইভেন্ট খুলেও মাজার ভাঙার আহ্বান জানানো হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় এবার বুচাই চাঁন পাগলার মাজার ভাঙা হলো।

দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড ও মাদকের ছড়াছড়ির অভিযোগে এনে আশেপাশের বিভিন্ন এলাকার ছাত্র-জনতা, মাদ্রাসাছাত্র-শিক্ষক, মসজিদের ইমামসহ আলেম ওলামারা মাজারটি ভেঙে দেন।

মাজার ভবনের তিনটি দেয়াল গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ভবনের চারপাশে সীমানা দেয়াল ভেঙে ফেলা হয়েছে। ছাদে মোট পাঁচটি গম্বুজ রয়েছে।এরমধ্যে তিনটি গম্বুজ ভেঙে ফেলা হয়েছে। মাজারের পাশে থাকা একটি টিনের কক্ষ পুরোপুরি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

এলাকাবাসীদের সূত্রে জানা গেছে, বাটুলিয়া এলাকার বাসিন্দা ছিলেন “বুচাই চাঁন পাগলা”। তার মধ্যে আধ্যাত্মিক গুণ ছিল বিশ্বাস করতেন স্থানীয় অনেকে। এ কারণে ধীরে ধীরে তার ভক্ত অনুসারী তৈরি হয়। আশির দশকে সড়ক দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়। এরপর বাটুলিয়ার সড়কের পাশে দাফন করা হয় বুচাই চাঁন পাগলাকে। ওই কবরকে ঘিরেই মাজার গড়ে ওঠে। প্রতিবছর সেখানে ওরশ ও মাসব্যাপী মেলা আয়োজন করা হয়। বাউল গানসহ নানা আয়োজন থাকে সে আয়োজনে। দূর দূরান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ যোগ দিতেন ওরশ ও মেলায়। তবে মুসল্লিদের অভিযোগ, সেখানে ধর্ম ও সমাজবিরোধী কাজকর্ম হয়। এরই জেরে বুধবার সেখানে হামলার ঘটনা ঘটে।

এদিকে এ হামলার ঘটনায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা। তারা বলছেন, এই মাজারে শরিয়াবিরোধী কর্মকাণ্ড কঠোরভাবে প্রতিরোধ করা হত। মাজারে সিজদা না দেওয়ার নির্দেশনা টাঙানো ছিল। মাজারের দানবাক্স সপ্তাহে এক দিন জনসম্মুক্ষে খোলা হত। দানের অর্থে একটি মসজিদ তৈরি করা হয়েছে। সেই মসজিদের ইমামের বেতন দেওয় হত মাজারের অর্থ থেকে। এছাড়া অসহায় দরিদ্রদের আর্থিক সহযোগিতা, মাদ্রাসায় আর্থিক সহায়তাসহ মানুষের কল্যাণে এই অর্থ ব্যয় করা হত।

স্থানীয় বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এলাকার একটা লোকও মাজার ভাঙার সঙ্গে ছিল না। তারা কেউ বুঝতেই পারেনি। এই মাজারে শরিয়াবিরোধী কোনো কাজকর্ম করতে দিইনি আমরা। মাদক সম্পূর্ণ নিষেধ ছিল। পুলিশ প্রশাসন সার্বক্ষণিক মাজারে নিরাপত্তা দিয়েছে। দূরের লোকজন এসে যেভাবে মাজার ভাঙল এটা অন্যায়। আল্লাহ এর বিচার করবেন।

মাজারের অর্থে পরিচালিত বাবা বুচাই চাঁন পাগলা জামে মসজিদে গত ১২ বছর যাবত ইমামতি করছেন মাওলানা মো. সোহেল মাহমুদ।

তিনি বলেন, এই মাজারে শরিয়াবিরোধী কর্মকাণ্ড আমরা কঠোরভাবে প্রতিরোধ করতাম। সিজদা করতে দেওয়া হতো না। মাজারের দানবাক্সের টাকা মানুষের জন্য ব্যয় করা হতো। তারা যেভাবে এটি ভাঙচুর করেছে, এটাই ইসলামবিরোধী কাজ। এলাকার মানুষ খুবই কষ্ট পেয়েছে।

সানোড়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মো. তিতুমীর হোসেন বলেন, তারা অতর্কিতে এসে ভাঙচুর করেছে। ইউএনও স্যারের ফোন পেয়ে দুইজন চৌকিদার নিয়ে এখানে এসেছিলাম। তবে তাদের সামনে যেতে পারিনি। পরে সেনাবাহিনী এলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

ধামরাই উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি প্রশান্ত বৈদ্য বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। দুপুরের দিকে বিক্ষোভকারীরা এখানে আসেন। তারা কিছু দাবি-দাওয়া জানিয়েছেন। তাদের সঙ্গে ইউএনও মহোদয় বৈঠক করবেন। আপাতত তাদের বুঝিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

ইএইচ

Link copied!