কলমাকান্দা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
মে ১৫, ২০২৫, ০৪:১২ পিএম
কলমাকান্দা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
মে ১৫, ২০২৫, ০৪:১২ পিএম
এক সময় চলাচলের সীমাহীন দুর্ভোগে ছিলেন নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার পাহাড়ি অঞ্চলের মানুষ। চিকিৎসা, শিক্ষা বা নিত্য প্রয়োজনীয় কাজে পাহাড়ি জনগণকে পায়ে হেঁটে বা রোগী বহন করে পাহাড় পেরিয়ে যেতে হতো। সেই চিত্র এখন বদলে গেছে। কাঠাঁলবাড়ি এলাকার আদিবাসী ৬০০ পরিবার এখন রাস্তার সুবিধা পাচ্ছেন।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, সীমান্তবর্তী কলমাকান্দা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামীণ এলাকায় রাস্তার উন্নয়ন কার্যক্রম চলছে। এরমধ্যে কাঠাঁলবাড়ি পাহাড়ি এলাকার প্রায় অর্ধশত বছরের পুরনো একটি রাস্তা সংস্কার করা হয়েছে। প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ এই রাস্তায় এখন মোটরসাইকেল ও ব্যাটারি চালিত অটো চলাচল করতে পারছে। এতে খুশি স্থানীয় আদিবাসী জনগণ।
তবে রাস্তা সংস্কার করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছেন লেংগুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সাইদুর রহমান ভূঁইয়া।
বন বিভাগ দাবি করছে, তিনি পাহাড় কাটছেন এবং বন ও পরিবেশ বিধ্বংসী কার্যক্রম চালাচ্ছেন। এ বিষয়ে বনবিভাগের বিট অফিসের বনরক্ষী আখতারুল ইসলাম চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে পাহাড় কাটার অভিযোগ তোলেন, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
ইউপি চেয়ারম্যান ও কলমাকান্দা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সাইদুর রহমান ভূঁইয়া এ বিষয়ে বলেন, “এই রাস্তাটি বহু পুরনো। স্থানীয় মানুষ অনেক কষ্ট করে যাতায়াত করতেন। তাই এলাকাবাসীর স্বাক্ষরিত অনুরোধপত্রের ভিত্তিতে রাস্তাটি সংস্কার করা হয়েছে।” পাহাড় কাটার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “পাহাড় কাটা হয়নি। বরং বৃষ্টির পানির স্রোত যেন রাস্তার ওপর দিয়ে না আসে, সে জন্য পাশে ড্রেন নির্মাণ করা হয়েছে। এতে পাহাড় কাটা হয়েছে বলে মনে হতে পারে।”
তিনি আরও জানান, “এলাকাটি পাহাড়ি এবং পর্যটকদের যাতায়াতের গুরুত্বপূর্ণ পথ হওয়ায় উপজেলা প্রশাসনের বরাদ্দে কাজটি করা হয়েছে।”
স্থানীয় বাসিন্দা, কাঠাঁলবাড়ি গ্রামের আদিবাসী বৃদ্ধ সুবেন মানখিন বলেন, “এই রাস্তা অনেক পুরনো। আগে বর্ষায় হাঁটু সমান কাদা হতো। আমরা বহুদিন ধরে এই রাস্তা সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছিলাম।”
বনবিভাগের বিট অফিসে কর্মরত বনরক্ষী আখতারুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাইযুল ওয়াসীমা নাহাত বলেন, “এই রাস্তা পাহাড়ি জনগোষ্ঠী ও পর্যটকদের যাতায়াতের একমাত্র পথ। এটি পুরনো রাস্তা, যেটি কাবিখা প্রকল্পের আওতায় সংস্কার করা হয়েছে। নতুন করে কোনো পাহাড় কাটা হয়নি।”
ইএইচ