সাদুল্লাপুর (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি
মে ২১, ২০২৫, ০৬:৩১ পিএম
সাদুল্লাপুর (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি
মে ২১, ২০২৫, ০৬:৩১ পিএম
গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার কৃষকদের পাকা ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। ভেজা ধান কেটে ঘরে আনলেও রক্ষা হয়নি, পঁচে যাচ্ছে খড়, নষ্ট হচ্ছে ধান। একই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রবি মৌসুমের নানা ফসল।
বুধবার সাদুল্লাপুর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে সরজমিনে ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
৮ নম্বর ভাতগ্রাম ইউনিয়নের কৃষ্ণুপুর গ্রামের কৃষক আব্দুর রশিদ জানান, তিনি তিন বিঘা জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছিলেন। এর মধ্যে দুই বিঘার ধান ঘরে তুললেও, এক বিঘার পাকা ধান কেটে ক্ষেতেই শুকাতে দিয়েছিলেন। কিন্তু অতিবৃষ্টির কারণে জমিতে হাঁটু পানি জমেছে। ধান ভাসছে পানিতে, আর শ্রমিকের সংকটের কারণে তুলতে পারছেন না।
অন্য এক কৃষক নুরু বলেন, “যারা ধান ঘরে তুলেছেন তারা কিছুটা স্বস্তিতে থাকলেও, যাদের ধান কাটা বা শুকানোর প্রক্রিয়ায় ছিল, তারা আজ মারাত্মক সমস্যায় পড়েছেন।”
জ্যৈষ্ঠ মাসের এই অকাল বৃষ্টিতে অনেক ক্ষেতের ধান গাছ মাটিতে শুয়ে পড়েছে। ভেজা ধান রোদে শুকাতে না পারায় পচন ধরেছে। এমনকি যাঁরা আগেই ধান কেটেছেন, তারাও ঠিকমতো শুকাতে পারেননি, ফলে অনেক ধান নষ্ট হয়ে গেছে। কৃষকের কষ্টের ফলস ঘরে তোলা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। অনেকেই বলছেন, “পাকা ধানে প্রকৃতি দিয়েছে মই”।
অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে খরিপ-১ মৌসুমের পটল, করলা, শসা, ঝিঙ্গা, বেগুন, বরবটি, মূখি কচু, ঢেঁড়শ, পেঁপে, মরিচ, হলুদ, কাকরোলসহ বিভিন্ন সবজি ও ফলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঢলে মাঁচা ভেঙে পড়েছে, বাতাসে হেলে পড়েছে ভুট্টার গাছ।
এ বিষয়ে ধাপেরহাট ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জান্নাতুল ফেরদৌস ও ওমর ফারুক সরকার জানান, জমিতে জমে থাকা পানি দ্রুত নিষ্কাশনের ব্যবস্থা এবং বৃষ্টির পরবর্তী সময়ে ফসলের যত্ন নেওয়ার বিষয়ে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
সাদুল্লাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মাহাবুবুল আলম বসুনিয়া বলেন, “অতিবৃষ্টির কারণে প্রায় সব ধরনের ফসলের ক্ষতি হয়েছে, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ধান ও খড়। আবহাওয়া যদি স্বাভাবিক না হয়, তাহলে ক্ষতির মাত্রা আরও বাড়বে। কৃষকদের যথাযথ পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।”
ইএইচ