ঝালকাঠি প্রতিনিধি
মে ২১, ২০২৫, ০৮:১০ পিএম
ঝালকাঠি প্রতিনিধি
মে ২১, ২০২৫, ০৮:১০ পিএম
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা অনুযায়ী, এমপিওভুক্ত বেসরকারি কলেজে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সর্বোচ্চ ছয় মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত দায়িত্ব পালনের সুযোগ পান। কিন্তু ঝালকাঠির আকলিমা মোয়াজ্জেম হোসেন ডিগ্রি কলেজে প্রায় দুই বছর ধরে এই নিয়ম উপেক্ষা করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন যুথিকা মণ্ডল। তার বিরুদ্ধে নিয়ম লঙ্ঘন, প্রশাসনিক অনিয়ম, পক্ষপাতমূলক আচরণ এবং রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর অভিযোগ উঠেছে।
২০২৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর যুথিকা মণ্ডল কলেজটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। অথচ তার চেয়ে জ্যেষ্ঠ দুই শিক্ষক—দেবাশীষ ঘরামী (প্রভাষক, কৃষি শিক্ষা) ও খাদিজা খানম (প্রভাষক, ইসলামের ইতিহাস)—আছেন কলেজে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, জ্যেষ্ঠতম প্রভাষককেই ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার বিধান থাকলেও তা উপেক্ষা করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
কলেজের একাধিক শিক্ষক অভিযোগ করেন, যুথিকা মণ্ডল দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে প্রশাসনিক কার্যক্রমে স্বজনপ্রীতি, পক্ষপাতমূলক আচরণ, সহকর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার এবং পরীক্ষায় অর্থের বিনিময়ে পাস করিয়ে দেওয়ার মতো অনিয়ম ঘটছে। নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে শাস্তি থেকে ছাড় দেওয়ার ঘটনাও রয়েছে।
এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, একটি প্রশংসাপত্র নিতে গেলে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত দিতে হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক জানান, যুথিকা মণ্ডল কখনও কখনও প্রকাশ্যে বলেন, “আবার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসবে, তখন দেখে নেওয়া হবে।” এতে করে তিনি রাজনৈতিক প্রভাবের ইঙ্গিত দেন এবং নিয়মনীতি তোয়াক্কা করেন না বলেও অভিযোগ করেন তারা।
অভিযোগের বিষয়ে যুথিকা মণ্ডল বলেন, “আমি সব অভিযোগ অস্বীকার করছি। আগে যুব মহিলা লীগের একটি পদে দায়িত্বে ছিলাম, বর্তমানে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত নই। একটি মহল আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। সর্বশেষ প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ৬ মাস বা ১ বছরের মধ্যে পূর্ণকালীন অধ্যক্ষ নিয়োগ না হলে, ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করা যায়। আমি সেই অনুযায়ী দায়িত্বে আছি এবং এই পদে থাকার আগ্রহও নেই।”
স্থানীয় নাগরিক সমাজ এবং কলেজের শিক্ষকরা বলছেন, রাজনৈতিক প্রভাব নয়, বরং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে দ্রুত একজন নিয়মিত অধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন। এতে করে প্রতিষ্ঠানটির স্বচ্ছতা ও সুশাসন নিশ্চিত হবে বলে তারা মনে করেন।
উল্লেখ্য, কলেজটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজ পর্যন্ত কোনো নিয়মিত অধ্যক্ষ পায়নি। দীর্ঘদিন ধরে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের মাধ্যমেই প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হয়ে আসছে।
ইএইচ