চরফ্যাশন (ভোলা) প্রতিনিধি
মে ৩০, ২০২৫, ০৪:২৪ পিএম
চরফ্যাশন (ভোলা) প্রতিনিধি
মে ৩০, ২০২৫, ০৪:২৪ পিএম
ঘূর্ণিঝড় 'শক্তি'র প্রভাবে ভোলার চরফ্যাশনে তীব্র জলোচ্ছ্বাস ও ভারী বর্ষণে কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার দিনের বেলায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ও হালকা বাতাস থাকলেও, রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আবহাওয়ার অবনতি ঘটে। গভীর রাতে ঘূর্ণিঝড় শক্তির তাণ্ডবে পুরো উপজেলায় প্রবল বাতাস ও মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়, যা কয়েক ঘণ্টা স্থায়ী ছিল।
এর ফলে বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চল—চর কুকরী মুকরী, ঢালচর, চর মুজিবনগরসহ বিভিন্ন এলাকায় কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। তীব্র বাতাসে চরাঞ্চলের শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড় দুর্বল হলেও এখনো উত্তাল রয়েছে মেঘনা, তেতুলিয়া ও বঙ্গোপসাগর। ফলে নৌযান চলাচল স্বাভাবিক হয়নি, এবং অন্য জেলার সঙ্গে চরফ্যাশনের যোগাযোগও ব্যাহত হচ্ছে। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় মোবাইল নেটওয়ার্কও কার্যত অচল, এতে পুরো উপজেলার সঙ্গে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের যোগাযোগ বিঘ্নিত হয়েছে।
চর কুকরী মুকরীর বাসিন্দা আমির হোসেন জানান, “বৃহস্পতিবার দিনভর বৃষ্টি ও বাতাসে নিচু এলাকাগুলো ডুবে যায়। রাতের দিকে বাতাসের তীব্রতা বাড়ে, ফলে ৪-৫ ফুট পানি উঠে উঁচু জায়গার ঘরবাড়িও পানির নিচে চলে যায়। আমরা পরিবার নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে ছিলাম। আজ (শুক্রবার) সকালে পানি কিছুটা কমলে বাড়িতে ফিরে এসেছি। ঘূর্ণিঝড় আমাদের ঘর, ফসল, মাছের ঘের—সবকিছুই তছনছ করে দিয়েছে।”
চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসনা শারমিন মিথি জানান, “চর কুকরী মুকরীর চর পাতিলায় ৪০০, ঢালচর ইউনিয়নে ১,০০০ এবং চর মুজিবনগরের শিকদারের চরে ৩০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ৭০-৮০টি পরিবারের ঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে এবং ৬-৭০০টি গবাদি পশু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, “সরকারি উদ্যোগে আজই ৪০০ পরিবারকে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। প্রতি পরিবারকে ৩০ কেজি চাল, ডাল, আলু, তেল, চিড়া সহ শুকনো খাবারের প্যাকেট দেওয়া হচ্ছে। ঢালচরে ২০০, চর মুজিবনগরে ১০০ এবং চর কুকরী মুকরীতে ১০০ পরিবারের মাঝে ত্রাণ দেওয়া হয়েছে। দুর্গত এলাকায় ত্রাণ পৌঁছাতে কিছুটা সময় লাগছে, তবে প্রশাসন সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সবাইকে সাহস রাখার আহ্বান জানাচ্ছি এবং সহযোগিতা কামনা করছি, যেন আমরা এ দুর্যোগ কাটিয়ে উঠতে পারি।”
ইএইচ