Amar Sangbad
ঢাকা মঙ্গলবার, ১৭ জুন, ২০২৫,

তজুমদ্দিনে মেঘনার স্লুইসগেট বাঁধ ভেঙে ভয়াবহ প্লাবন

তজুমদ্দিন (ভোলা) প্রতিনিধি

তজুমদ্দিন (ভোলা) প্রতিনিধি

মে ৩০, ২০২৫, ০৪:৩০ পিএম


তজুমদ্দিনে মেঘনার স্লুইসগেট বাঁধ ভেঙে ভয়াবহ প্লাবন

ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলায় মেঘনা নদীর তীরবর্তী স্লুইসগেট সংলগ্ন বাঁধ হঠাৎ ভেঙে পড়ায় কয়েক হাজার মানুষ ভয়াবহ দুর্ভোগে পড়েছেন। 

বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে বাঁধটি ভেঙে যায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে নির্মাণাধীন এই স্লুইসগেটের কাজ সময়মতো শেষ না হওয়ায় এবং নির্মাণে গাফিলতির কারণে বাঁধ দুর্বল হয়ে পড়েছিল।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বাঁধ ভাঙার সঙ্গে সঙ্গে প্রচণ্ড স্রোতের পানি গ্রামে ঢুকে পড়ে। মুহূর্তেই শত শত বাড়িঘর, ফসলি জমি এবং রাস্তাঘাট ডুবে যায়। নদীর প্রবল স্রোতে স্লুইসগেটের মুখে থাকা ছয়টি ঘর ভেঙে পানিতে তলিয়ে গেছে। আতঙ্কে অনেক পরিবার ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছেন।

একজন ক্ষুব্ধ বাসিন্দা বলেন, “বহুবার ঠিকাদার আর পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বলছি, কাজটা ঠিকমতো করেন। কেউ শোনে নাই। আর এখন আমাগো সর্বনাশ হইলো।”

আরেকজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, “স্লুইসগেটের নির্মাণে ব্যবহারের জন্য সংরক্ষিত মাটি স্থানীয় কিছু নেতা ও ঠিকাদারের যোগসাজশে কেটে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। আমরা বাধা দিতে গেলে হুমকি দিয়েছে। সেই মাটি বাঁধে ব্যবহার হলে আজ এই দুর্যোগ হতো না।”

ঘটনার খবর পেয়ে বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান তজুমদ্দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শুভ দেবনাথ। 

তিনি জানান, “বাঁধ ভেঙে বহু মানুষ বিপাকে পড়েছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে এবং জরুরি সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।”

ইতোমধ্যে ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্র খোলার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জরুরি সহায়তা হিসেবে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি পরিবারকে ৫০ কেজি করে চাল দেওয়া হচ্ছে।

এই ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্তরা অবিলম্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন, যাতে দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা যায়। একই সঙ্গে তারা দ্রুত বাঁধ মেরামত এবং নদীভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানিয়েছেন।

একজন ভুক্তভোগী বলেন, “অনিয়ম, দুর্নীতি ও অবহেলার দায় কার—তা নির্ধারণ করা জরুরি। আমরা জানতে চাই, তজুমদ্দিনের মানুষ কবে পাবে টেকসই নিরাপত্তা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার ব্যবস্থা?”

ইএইচ

Link copied!