Amar Sangbad
ঢাকা মঙ্গলবার, ০৩ জুন, ২০২৫,

দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট

গরুর ট্রাক ও যানবাহন পারাপার নির্বিঘ্ন করতে প্রস্তুতি

কাজী আনোয়ারুল ইসলাম টুটুল, রাজবাড়ী

কাজী আনোয়ারুল ইসলাম টুটুল, রাজবাড়ী

জুন ১, ২০২৫, ০৬:৩২ পিএম


গরুর ট্রাক ও যানবাহন পারাপার নির্বিঘ্ন করতে প্রস্তুতি

আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা ২০২৫ উপলক্ষে দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ঘরমুখো মানুষ ও কোরবানির পশুবাহী যানবাহনের নির্বিঘ্ন যাত্রা নিশ্চিত করতে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে যানজট নিরসন, যাত্রীসেবা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রশাসন, পুলিশ ও বিআইডব্লিউটিসি একযোগে কাজ করছে।

বিআইডব্লিউটিসি ও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঈদে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ সামাল দিতে এ রুটে ছোট-বড় মিলিয়ে ১৭টি ফেরি এবং ২০টি লঞ্চ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। দৌলতদিয়া প্রান্তের তিনটি ঘাটের আটটি পকেট সচল থাকবে এবং পদ্মার পানি বৃদ্ধি পেলে আরও একটি ঘাট চালু করা হবে। বিশেষ করে কোরবানির পশুবাহী ট্রাকগুলো দ্রুত পারাপারে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

পদ্মা সেতু চালুর পর এ রুটে যানবাহনের চাপ কিছুটা কমলেও ঈদ মৌসুমে তা কয়েক গুণ বেড়ে যায়। ঈদের সময় প্রতিদিন প্রায় ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার যানবাহন এবং ৩৫ হাজার থেকে ৪০ হাজার যাত্রী পারাপার হয়ে থাকে। এর মধ্যে গরুবোঝাই অতিরিক্ত ট্রাক যুক্ত হওয়ায় ঘাট ব্যবস্থাপনায় বাড়তি চাপ তৈরি হয়।

ভোগান্তি কমাতে ঈদের আগে ও পরে সাত দিন নদীতে বালুবাহী বাল্কহেড চলাচল বন্ধ থাকবে। একইসঙ্গে ঈদের ১০ দিন আগে ও পরে পচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক ছাড়া সব ধরনের ট্রাক পারাপার বন্ধ থাকবে।

নিরাপত্তা নিশ্চিতে ঘাট এলাকায় থাকবে একাধিক স্তরের নজরদারি। মোতায়েন থাকবে পোশাকধারী ও সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। যাত্রী হয়রানি, চাঁদাবাজি, দালাল, ছিনতাই ও মলমপার্টি দমনে পুলিশের বিশেষ টিম কাজ করবে। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পেলে পরিচালিত হবে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

স্থানীয় বাসিন্দা, যাত্রী ও পরিবহন চালকরা জানান, পদ্মা সেতু চালুর পর যানবাহনের চাপ কিছুটা কমেছে এবং প্রশাসনের তৎপরতায় আগের মতো ভোগান্তি নেই। তবে বৈরী আবহাওয়া ও পদ্মায় পানি বৃদ্ধির কারণে কিছুটা উদ্বেগ রয়েছে।

দৌলতদিয়া লঞ্চঘাটের ম্যানেজার নুরুল আনোয়ার মিলন জানান, অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ন্ত্রণে ঘাটে প্রশাসনের তৎপরতা থাকবে। ২০টি লঞ্চ চলাচলে যাত্রী পারাপারে কোনো সমস্যা হবে না।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, ঈদ উপলক্ষে ফেরিগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে ১৭টি ফেরি প্রস্তুত আছে এবং প্রয়োজন হলে অতিরিক্ত ঘাট চালু করা হবে। কোরবানির পশুবাহী ট্রাকগুলো পারাপারে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার মো. কামরুল ইসলাম জানান, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ, যানবাহনের গতিবিধি মনিটরিং ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে জেলা পুলিশ সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েছে। নদীপথে পশুবাহী ট্রলারের চলাচলে গোয়ালন্দ থানা পুলিশ, নৌ পুলিশ ও কোস্টগার্ড যৌথভাবে দায়িত্ব পালন করছে। সড়কে নিরাপত্তায় হাইওয়ে পুলিশ কাজ করবে।

রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক সুলতানা আক্তার বলেন, যাত্রীদের নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন যাত্রা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের একাধিক মোবাইল টিম মাঠে থাকবে। যাত্রী হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পশুবাহী ট্রাক ও নাড়ির টানে ঘরমুখো মানুষের নির্বিঘ্ন যাত্রার মাধ্যমে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ঈদযাত্রা নিরাপদ ও স্বস্তিদায়ক হবে—এমনটাই প্রত্যাশা যাত্রী ও চালকদের।

ইএইচ

Link copied!