কে.এম. শামীম রেজা, ইন্দুরকানী (পিরোজপুর)
আগস্ট ১, ২০২৫, ০৪:৫৬ পিএম
পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেওয়া মৌসুমি ফল বিলাতি গাবের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। রোপণ, যত্ন বা বিশেষ পরিচর্যা ছাড়াই গাছগুলোতে ফল ধরায় এটি চাষিদের জন্য অত্যন্ত লাভজনক একটি ফল হয়ে উঠেছে।
বিলাতি গাব মূলত দক্ষিণাঞ্চলে পরিচিত হলেও বর্তমানে দেশের বিভিন্ন শহর, বিশেষ করে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও ফেনিতে এর ব্যাপক চাহিদা দেখা যাচ্ছে। চাহিদা বাড়ায় গ্রামাঞ্চল থেকে ব্যবসায়ীরা ফল সংগ্রহ করে শহরাঞ্চলে সরবরাহ করছেন এবং লাভবান হচ্ছেন।
ব্যবসায়ীরা প্রতি কুড়ি (২০টি) বিলাতি গাব আকারভেদে ৮০ থেকে ১০০ টাকায় ক্রয় করে সংগ্রহ করেন। এরপর সেগুলো প্যাকেটজাত করে যাত্রীবাহী পরিবহনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
শহরের আড়ৎদাররা কেজি দরে ফল বিক্রি করে, এবং বিক্রয়লব্ধ অর্থ পাঠিয়ে দেন ব্যবসায়ীদের কাছে।
ইন্দুরকানী উপজেলার বালিপাড়া গ্রামের ব্যবসায়ী ইদ্রিস আলী জানান, “প্রতি বছর আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে আমি বিলাতি গাবের ব্যবসা করি। আমার সঙ্গে ১০-১২ জন শ্রমিক কাজ করেন। তাঁরা গ্রাম থেকে গাব সংগ্রহ, প্যাকেটজাতকরণসহ বিভিন্ন কাজে সহযোগিতা করেন। প্রতিদিন তাঁদের ৮০০ টাকা করে মজুরি দিতে হয়। প্রতি মাসে আমি প্রায় এক লাখ থেকে দেড় লাখ টাকা লাভ করে থাকি।”
স্থানীয় বাসিন্দা রহিম হাং ও হুমায়ুন বলেন, “বিলাতি গাবের জন্য বীজ বপন বা চারা রোপণের দরকার হয় না। পাখির মাধ্যমে ফলের বীজ ছড়িয়ে পড়ে এবং প্রাকৃতিকভাবেই গাছ জন্ম নেয়। ফলটি সুস্বাদু, কেমিক্যাল ও ফরমালিনমুক্ত হওয়ায় এর কদর দিন দিন বাড়ছে। অতিথি আপ্যায়নেও এই ফল এখন বেশ জনপ্রিয়।”
ইন্দুরকানী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেন, “এই অঞ্চলের মাটি অত্যন্ত উর্বর। ফলে সব ধরনের ফলের পাশাপাশি গাবের ফলনও ভালো হয়। প্রতি বছরই এখানে গাবের বাম্পার ফলন হয়। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এখন এটি দেশের বিভিন্ন স্থানে বাণিজ্যিকভাবে সরবরাহ করা হচ্ছে।”
ইএইচ