বিজয় সরকার, মাভাবিপ্রবি
জুলাই ১৬, ২০২৫, ০৫:৩৩ পিএম
টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (মাভাবিপ্রবি) “জুলাই শহিদ দিবস” উপলক্ষে এক স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের সেমিনার হলে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল আজীম আখন্দ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, “আমরা আজ গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করছি সেইসব শহীদদের, যারা অন্যায়-অবিচার ও দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে জীবন উৎসর্গ করেছেন। তাদের আত্মত্যাগ আমাদের জাতীয় বিবেককে নাড়া দেয় এবং দায়িত্বশীলতার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। শিক্ষাঙ্গন সবসময়ই ছিল মুক্ত চিন্তার উৎসভূমি। ২০২৪ সালের সেই আন্দোলনে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাহসী ভূমিকা ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।”
মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন। তিনি বলেন, “বিগত সরকার শিক্ষাকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করেছিল। শিক্ষার্থীদের জোর করে মিছিলে নেওয়া হতো, সারারাত গেস্টরুমে দাঁড় করিয়ে রাখা হতো। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মানসম্মত শিক্ষক নিয়োগ হয় না, কারণ পছন্দের ভিসি ও প্রোভিসির মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হয়। যোগ্যতাকে মূল্যায়ন করা হয় না। জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের চেতনা বাস্তবায়ন করতে হলে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে যোগ্য ও স্বপ্নবাজ শিক্ষক নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জুলাই শহিদ দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. ফজলুল করিম এবং সদস্যসচিব অধ্যাপক ড. মো. দেলোয়ার জাহান মলয়।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শহিদ মারুফের মা। তিনি শহিদ পরিবারের প্রতিনিধি হিসেবে বলেন, “আমার সন্তান যে উদ্দেশ্যে প্রাণ দিয়েছে, সেই উদ্দেশ্য যেন বাস্তবায়িত হয়—আমি সরকারের কাছে সেই দাবি জানাই।”
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. মতিউর রহমান, বায়োটেকনোলজি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. মহিউদ্দিন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. ইমাম হোসেন এবং আন্দোলনকারী ও আহত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে মনিরুল ইসলাম ও আশরাফুল আলম হৃদয়।
আলোচনা শেষে শহিদের মায়ের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়া হয়।
আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই স্মরণসভা আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য হলো—জুলাই শহিদদের আত্মত্যাগকে গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করা এবং নতুন প্রজন্মের সামনে তাঁদের বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা তুলে ধরা, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সেই আদর্শে অনুপ্রাণিত হতে পারে।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
ইএইচ