ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad
শিশু আয়ানের মৃত্যু

ইউনাইটেড হাসপাতালকে ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে রুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

জানুয়ারি ১৫, ২০২৪, ০২:২০ পিএম

ইউনাইটেড হাসপাতালকে ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে রুল

চিকিৎসায় গুরুতর অবহেলায় আয়ানের মৃত্যুতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে শিশুটির পরিবারকে পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। আয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারকে কেন ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়েছেন আদালত। এ বিষয়ে জারি করা রুলের বিষয়ে জবাব দিতে সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে।

রাজধানীর বাড্ডায় ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সুন্নতে খতনা করার পর এক সপ্তাহ ধরে চিকিৎসাধীন থাকার পর আয়ান নামে পাঁচ বছরের এক শিশুর মৃত্যুর ঘটনা কীভাবে কোন কারণে ঘটেছে তা যথাযথ অনুসন্ধান করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে (ডিজি) প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

শিশুর বাবা শামীম আহমেদের করা রিট আবেদনের প্রাথমিকভাবে শুনানি নিয়ে সোমবার (১৫ জানুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে আজ রিটের পক্ষে আইনজীবী এ বি এম শাহজাহান আকন্দ নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়। শুনানির সময় শিশুটির বাবা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

জনস্বার্থে স্বপ্রণোদিত হয়ে মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ বি এম শাহজাহান আকন্দ মাসুম রিটটি দায়ের করেন।

‘লাইফ সাপোর্ট থেকে ফিরল না আয়ান: খতনা করাতে গিয়ে মৃত্যু’ শিরোনামে ৮ জানুয়ারি একটি দৈনিকে প্রতিবেদন ছাপা হয়। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন যুক্ত করে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এ বি এম শাহজাহান আকন্দ ৯ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিট করেন। রিটে আবেদনকারী হিসেবে যুক্ত হন শিশুটির বাবা শামীম আহমেদ। পাশাপাশি হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিল ও নতুন রোগী ভর্তি না করাতে নির্দেশনা চেয়ে সম্পূরক আবেদন করে রিট আবেদনকারীপক্ষ। শুনানি নিয়ে আদালত রুলসহ আদেশ দেন।

রিটে এ ঘটনার যথাযথ তদন্ত ও ১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে রুল জারির আবেদন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে এ ঘটনায় জড়িত ডাক্তারদের সনদ বাতিল চাওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, হাসপাতালেরও নিবন্ধন বাতিলে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষের প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

আদেশের পর আইনজীবী এ বি এম শাহজাহান আকন্দ বলেন, গত ১৫ বছরে চিকিৎসায় অবহেলার কারণে কতজন মারা গেছেন, সে বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে তিন মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতেও বলা হয়েছে।

রাজধানীর বাড্ডায় ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খতনার পর পাঁচ বছর বয়সী শিশু আয়ানের মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান করে সাত দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে (স্বাস্থ্যসেবা) নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ‘চিকিৎসায় গুরুতর অবহেলায়’ আয়ানের মৃত্যুতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে শিশুটির পরিবারকে পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে হাইকোর্ট রুল দিয়েছেন।

সারা দেশে লাইসেন্স ও অনুমোদনহীন কতগুলো হাসপাতাল রয়েছে, তার তালিকা এক মাসের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে (স্বাস্থ্যসেবা) নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

আদেশের পর আয়ানের বাবা শামীম আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছে বলে গতকাল রোববার টেলিভিশনের খবরে দেখেছেন তিনি। আসলে এটাকে স্থায়ীভাবে সিলগালা করে দেওয়া উচিত, যেহেতু এত বড় একটি ঘটনা তারা ঘটিয়েছে। পাশাপাশি অভিযুক্ত কাউকে এখনো গ্রেপ্তার করা হয়নি। হাসপাতালের পরিচালকসহ দায়ী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছেন তিনি।

এক প্রশ্নের জবাবে শামীম আহমেদ বলেন, ‘মামলা করেছি। মামলা মামলার মতোই আছে। এখন পর্যন্ত কোনো অগ্রগতি নেই। ৯ জানুয়ারি মামলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত একজনও গ্রেফতার হননি।’

টানা সাত দিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর রোববার (৭ জানুয়ারি) মধ্যরাতে আয়ানকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। সন্তান হারানোর শোকে পাগলপ্রায় আয়ানের পরিবার।

গত ৩১ ডিসেম্বর আনন্দ নিয়েই রাজধানীর সাতারকুল ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় শিশুটিকে। অনুমতি ছাড়াই ফুল অ্যানেস্থেসিয়া দিয়ে সুন্নতে খতনা করান চিকিৎসক। এরপর আর জ্ঞান ফেরেনি তার।

স্বজনরা জানান, আয়ানের সুন্নতে খতনার দিন অপারেশন থিয়েটারে মূলত ওই মেডিকেল কলেজের ৪০ থেকে ৫০ জন ইন্টার্ন চিকিৎসক ভেতরে ছিলেন।

আয়ানের বাবা শামীম আহমেদ তখন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘রাত সাড়ে ১১টার দিকে চিকিৎসক আমাদের ডেকে বলেন যে দুনিয়াতে আয়ান আর নেই। তারা খুব তড়িঘড়ি করে আমাদের বের করে দেন।’

আয়ানের পরিবারের অভিযোগ, অস্ত্রোপচারের সময় এমন ঘটনার পর অবস্থা বেগতিক দেখে সাতারকুল ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ থেকে পাঠানো হয় গুলশান-২ ইউনাইটেড হাসপাতালে। এমনকি প্রথমে ১০ হাজার টাকার প্যাকেজে অপারেশনের কথা থাকলেও বিল ধরানো হয় প্রায় ছয় লাখ টাকা।

আয়ানের চাচা জামিল খান বলেন, আয়ান যদি দুনিয়াতে থাকতো, তবে পুরো প্রায় ৬ লাখ টাকাই নিতো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এখনো তারা আমাদের কাছে এই বিলটাই চাচ্ছে। তারা বলছেন, এখন আপনারা চলে যান, বিলটা পরিশোধের জন্য পরে এসে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

আয়ানের দাদা আব্দুস সালাম কবির বলেন, ‘খতনার কাজ করেছেন ডাক্তার মেহেরজেবিন। অ্যানেস্থেসিয়া বেশি দেওয়া হয়েছে বলে তিনি ভুল স্বীকার করেছেন। অ্যানেস্থেসিয়া দিয়ে এক ঘণ্টা ক্লাস নেওয়াতে আমার নাতি এভাবে মারা গেলো।’

আয়ানের মামা রাসেল বলেন, ‘ডাক্তার কী ওষুধ ব্যবহার করেছেন, সেসব কিছু লিখা আছে। ফাইলটা এখানে নিয়ে এসেছি। কিন্তু আজকে যখন ওই ফাইলটা চাইলাম, তখন সেটা দেখছি গায়েব করে ফেলেছে’।

অভিযোগ এড়িয়ে গুলশান ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দায় চাপাচ্ছে সাতারকুল ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজের ওপর। গুলশান ইউনাইটেড হাসপাতালের নন-মেডিকেল ডিউটি ম্যানেজার সানাউল্লাহ কবির বলেন, প্রশাসন থেকে শুরু করে ব্যবস্থপানাসহ পুরো প্রক্রিয়াতেই দুই প্রতিষ্ঠান আলাদা।

এ ঘটনা তদন্তে ৪ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে কমিটিকে।

এদিকে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিবন্ধন বা লাইসেন্স ছাড়া কার্যক্রম পরিচালনা করায় ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সব কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধের আদেশ দেওয়া হয়েছে। রোববার (১৪ জানুয়ারি) অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার পরিচালক ডা. আবু হোসেন মোহাম্মদ মইনুল আহসানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশ দেওয়া হয়।

আরএস

Link copied!