ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

নিলামে তোলা হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের মাইক!

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

মার্চ ৭, ২০২৪, ০২:৫৫ পিএম

নিলামে তোলা হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের মাইক!

বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে মাইকটিতে ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন সেটি ছিল ‘কল-রেডী’ নামক একটি প্রতিষ্ঠানের। কিন্তু স্বাধীনতার এত বছর পরেও দেশে যথাযোগ্য মর্যাদা না পাওয়ায় ৭ মার্চের ভাষণ দেয়া সেই মাইক নিলামে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কল-রেডীর বর্তমান কর্ণধার।

একাত্তরের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণে সেদিন রেসকোর্স ময়দানের জনসভায় সাউন্ড সিস্টেমের দায়িত্ব পালন করে কল-রেডী। ৭ মার্চের ৩ দিন আগে বঙ্গবন্ধু সমাবেশে মাইকের জন্য তার ধানমন্ডির বাসায় ডাক দেন কল-রেডীর মালিক হরিপদ ঘোষ ও দয়াল ঘোষকে। স্বৈরশাসকের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাতের অন্ধকারে লুকিয়ে মাঠে মাইক লাগান তারা। মাইক লাগিয়ে কাপড় দিয়ে ঢেকে দেন, যেন পাকিস্তানি সৈন্যরা বুঝতে না পারে। পরদিন সেই মাইকেই বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু।

১৯৭১ সালের ৭ মার্চ। পূর্ব ঘোষণা মোতাবেক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে জনসমুদ্রে পরিণত হলো তৎকালীন রেসকোর্স ময়দান। গোটা জাতি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন তার ভাষণ শোনার জন্য। পাকিস্তানি সামরিক সরকারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সেদিন ১০ লাখ জনতার মাঝে উপস্থিত হন বঙ্গবন্ধু। শোনান বাঙালির চিরমুক্তির সেই অমর কবিতা- ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ কিন্তু যে মাইক্রোফোনে ভেসে বঙ্গবন্ধুর সেই বজ্রকণ্ঠ দাবানলের মতো ছড়িয়েছিল বাংলার পথে-প্রান্তরে, স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও সেই মাইক্রোফোন, মাইক ও স্ট্যান্ড প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

কল-রেডীর বর্তমান কর্ণধার হরিপদ ঘোষের ছেলে সাগর ঘোষ। তিনি বলেন, উৎকণ্ঠিত পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে শুধু টাকার জন্য সাড়া দেয়নি কল-রেডী। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে পাকিস্তানি স্বৈরশাসকের হুমকির মুখে রাতের অন্ধকারে সেদিন প্রায় ১০ লাখ মানুষের সেই ঐতিহাসিক সমাবেশে মাইকের আয়োজন করে কল-রেডী। বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক ভাষণের সাক্ষী হতে পেরে কল-রেডী গর্ববোধ করে।

এদিকে দীর্ঘ সময়ে সরকারিভাবে যথাযথ সম্মান বা গুরুত্ব না পাওয়ার ক্ষোভে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ দেওয়া মাইক্রোফোনটি নিলামে বিক্রির চিন্তাভাবনা করছেন প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান কর্ণধাররা।

সাগর ঘোষের ভাই বিশ্বনাথ ঘোষ বলেন, দেশে যথাযথ মর্যাদা না পাওয়ায় ঐতিহাসিক সেই মাইক নিলামের জন্য ইতোমধ্যে জার্মানি পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে সেটি বিদেশে নিলামে তোলার প্রস্তুতি চলছে।

এদিকে ‘১৯৭১: গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর’ ট্রাস্টের সভাপতি অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে ব্যবহৃত একটি মাইক্রোফোন গণহত্যা জাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে। তখন তো অনেকগুলো মাইক ছিল। সেই মাইক্রোফোনকে বলা হতো ‘বুলেট’। আমাদের জাদুঘরের সংগ্রহে এমন একটা আছে। যেহেতু অনেকগুলো ছিল, ফলে তাদের কাছে আরও থাকতে পারে। সেগুলো যাচাই করে সংরক্ষণ করা উচিত।

তবে কল-রেডীর পরিচালক সাগর ঘোষের দাবি, এই মাইকের কোনো অংশ এখনো তারা কাউকে দেননি। ফলে গণহত্যা জাদুঘরে কীভাবে গেল সেটি তারা জানেন না। সেটি আসল কিনা, তা নিয়েও তাদের সন্দেহ রয়েছে।

ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন,৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু যে মাইক্রোফোনে ভাষণ দিয়েছিলেন, সেই মাইক্রোফোনটি আমাদের কাছে আছে। এছাড়া বিভিন্ন ঐতিহাসিক ভাষণের সাক্ষী হয়ে থাকা আরও কিছু মাইক্রোফোন, স্ট্যান্ড, এমপ্লিফায়ারসহ অন্যান্য সরঞ্জাম রয়েছে, যেগুলো ইতিহাসের সাক্ষী। কিন্তু এগুলো সংরক্ষণের জন্য কোনো প্রতিষ্ঠান থেকেই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি। আমরা আমাদের মত কিছু রেখে দিয়েছি, কিছু নষ্ট হয়ে গেছে।

মাইক্রোফোনটি নিলামের জন্য বিদেশে পাঠানোর যে তথ্য বিশ্বনাথ ঘোষ দিয়েছেন, সে বিষয়ে প্রশ্ন করলে সাগর বলেন, আমার ভাই যেটা বলেছেন, ঠিক আছে। এখানে থাকলে তো নষ্ট হয়ে যাবে। যদি সরকার বা কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে এটি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়, তবে এনে দেব।

ঐতিহাসিক ৭ মার্চের সেই নিদর্শন সংরক্ষণ করা জরুরি বলে মনে করেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির।

তিনি বলেন, কল-রেডীর ইতিহাস তো সবাই জানে। শুধু ৭ মার্চ নয়, আমাদের আন্দোলন সংগ্রামের নানান অধ্যায়ে তারা জড়িয়ে আছে। তাদের কাছে যে নিদর্শনগুলো আছে, সেগুলো যাচাই করে যদি প্রকৃতই হয়— তবে সেগুলো সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া উচিত। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর, জাতীয় জাদুঘর এবং গণহত্যা জাদুঘরের কেউ দায়িত্ব নিয়ে এই নিদর্শন সংরক্ষণ করা উচিত।

উল্লেখ্য, শুধু ৭ মার্চের ভাষণ নয়, ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে কল-রেডীর মাইক্রোফোনের সামনে দাঁড়িয়ে ভাষণ দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। তার আগে, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৬৬ সালের ৬ দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থান এবং ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনের সভা-সমাবেশেও কল-রেডীর মাইকে বক্তব্য দিয়েছেন নেতারা।

আরএস

Link copied!