ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad
রামপালে রেমালের ছোবল

পাঁচশত কোটি টাকার ক্ষতি দিশেহারা দুর্গত মানুষ

সুজন মজুমদার, (বাগেরহাট) রামপাল

সুজন মজুমদার, (বাগেরহাট) রামপাল

মে ২৮, ২০২৪, ০৮:৩৩ পিএম

পাঁচশত কোটি টাকার ক্ষতি দিশেহারা দুর্গত মানুষ

ঘূর্ণিঝড় রেমালের ছোবলে বিধ্বস্ত গোটা রামপাল উপজেলা। প্রায় অর্ধলক্ষ মানুষ দুর্গত হয়ে পড়েছে। প্রতি মুহূর্তেই এখনো ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। প্রাথমিকভাবে প্রায় পাঁচ থেকে ছয়শত কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। বাগেরহাট জেলা প্রশাসনের বরাদ্দ অপ্রতুল হওয়ায় ত্রাণ দপ্তরের ত্রাণ কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

উপজেলার ত্রাণ দপ্তরসহ বিভিন্ন দপ্তরে গিয়ে সর্বশেষ পাওয়া তথ্য মোতাবেক জানা গেছে, এ উপজেলায় ১০ টি ইউনিয়নে প্রায় পৌনে ২ লক্ষ মানুষের বসবাস। এর মধ্যে প্রায় অর্ধলক্ষ মানুষকে দুর্গত বলে চিহ্নিত করেছে উপজেলা প্রশাসন।

উপজেলা পিআইও মো. মতিউর রহমান জানান, এ উপজেলার ১০ টি ইউনিয়নে মোট ১ হাজার ৪১০ টি বাড়ী বিধ্বস্ত হয়েছে। এর মধ্যে পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে ৪৫০ টি বাড়ী। এতে শতকোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। রেমালের ক্ষতি কমাতে ১৬৯ টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছিল। এতে প্রায় ১২ হাজার দুর্গত মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন। প্রশাসনের নজরদারি থাকায় কোন মানুষ আহত বা নিহত হননি।

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অসীম কুমার ঘোষ জানান, এ উপজেলায় মাছের ঘের ভেসেছে ৮ হাজার টি ও পুকুর ভেসে গেছে ১ হাজার ৫০০ টি। এতে তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষতির পরিমাণ ধরা হয়েছে প্রায় ২০০ কোটি টাকা। যা আরো বাড়তে পারে। মৎস্য খামারি মো.রেদওয়ান মারুফ জানান, আমি সর্বস্বান্ত হয়ে গেছি। আমার খামারের সব মাছ ভেসে গেছে। কি করে ব্যাংকের লোন শোধ করবো ভোবে পাচ্ছি না। একই কথা বলেন সদরের মৎস্যঘের মালিক শেখ মো. আতাহার আলী। তিনি জানান, ৫/৬ টি ঘেরের সব মাছ ভেসে গেছে। ধারদেনা করে মাছপোনা ফেলেছি। এখন আমি নিঃস্ব হয়ে গেলাম। একই কথা বলেন সদরের ঘের ব্যবসায়ী কাজী কামরুল, কাজী জামির হোসেন।

রাস্তাঘাট ও অবকাঠামোর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি। উপজেলা এলজিইডি ইঞ্জিনিয়ার গোলজার হোসেন জানান, রাস্তাঘাট পানির নিচেয় এখনও তলিয়ে থাকায় ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি। তবে মাঠে কাজ চলছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা জি, এম অলিউল ইসলাম জানান, ঝড়ে মোট ২ হাজার ৯৩ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আম, কলা, পেঁপে, সবজি ও মরিচের ক্ষতি বেশি হয়েছে। এতে ক্ষতির পরিমাণ কয়েক কোটি টাকারও উপরে।

মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আনোয়ারুল কুদ্দুস জানান, মোবাইল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় সকল এলাকার তথ্য পাওয়া সম্ভব হয়নি। তবে স্কুল ও মাদ্রাসা মিলে মোট ১০ প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোর ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাওয়া গেছে। যার ক্ষতির পরিমাণ প্রায় সাড়ে ২২ লক্ষ টাকা। এছাড়াও অফিস কক্ষে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে চেয়ার টেবিলসহ লক্ষাধিক টাকার মালামালের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়বে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান জানান, মোবাইল নেটওয়ার্কের সমস্যার কারণে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তথ্য পেতে বিলম্ব হচ্ছে। মাত্র ৬ টি প্রতিষ্ঠানের ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাওয়া গেছে। এতে ক্ষতির পরিমাণ ১৫ লক্ষ টাকার বেশী, যা আরো বাড়বে।

পোল্ট্রি ও গবাদিপশুর ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে প্রাণ সম্পদ হাসপাতালের প্রতিনিধি সুবাস চন্দ্র জানান, বেশকিছু পোল্ট্রি মালিকের মুরগিসহ ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ চলছে বলে জানান।

রামপাল উপজেলা বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান জানান, ১০ টি ইউনিয়নে ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণের জন্যে তথ্য চক শিট প্রেরণ করা হয়েছে। বুধবার বা বৃহস্পতিবার নাগাদ সম্পূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে। তবে রেমালের প্রভাবে কেহ মৃত্যুবরণ না করলেও মৎস্য ঘের, বাড়ীঘর, পোল্ট্রি শিল্পের, অবকাঠামো, স্থাপনা ও কৃষির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। যার পরিমাণ পুরোপুরি নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি। তবে প্রাথমিকভাবে ৫০০ কোটি টাকা ধরা হলেও তা হাজার কোটি টাকা ছাড়াতে পারে বলে ধারণা করছেন ওই কার্মকর্তা।

এ বিষয়ে রামপাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রহিমা সুলতানা বুশরা এঁর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, রেমেলের আঘাতে এ উপজেলায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। মানুষের বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। মৎস্য ঘের ভেসে গেছে, কৃষি, অবকাঠামো, স্থাপনা ও পোল্ট্রি ফার্মের ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়েছে। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে ৫ টন চাল পেয়েছি। যা আশ্রয় কেন্দ্রের দুর্গতদের দেওয়া হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মহোদয়সহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর বরাদ্দের জন্যে লেখা হচ্ছে। বরাদ্দ পাওয়ার সাথে সাথে তা ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মাঝে বিতরণ করা হবে।

আরএস

Link copied!