Amar Sangbad
ঢাকা রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪,

আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রযন্ত্রকে সন্ত্রাসে পরিণত করেছে: মির্জা ফখরুল

মো. মাসুম বিল্লাহ

অক্টোবর ২০, ২০২৩, ০৬:৫৫ পিএম


আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রযন্ত্রকে সন্ত্রাসে পরিণত করেছে: মির্জা ফখরুল

ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রযন্ত্রকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্রে পরিণত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শুক্রবার (২০ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে সোনালী দল বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত ‘কৃষি উপকরণ ও খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি: সরকারের অব্যবস্থাপনা- কৃষক এবং জনগণের নাভিশ্বাস’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘গতকাল (বৃহস্পতিবার) আওয়ামী লীগের নেতারা বলেছেন বিএনপি নাকি সন্ত্রাসী দল। অথচ তারাই (আওয়ামী লীগ) ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে রাষ্ট্রযন্ত্রকে পুরোপুরি সন্ত্রাসী রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের হাতে বন্দুক-পিস্তল নেই যে আপনাদের ভয় দেখাবো, গ্রেফতার করে নিয়ে আসবো। নিয়ে গিয়ে অত্যাচার করবো, নির্যাতন করবো। সেই পথ আমাদের নেই। নিয়মতান্ত্রিকভাবে, গণতান্ত্রিক উপায়ে আমরা নির্বাচনের দাবি জানিয়েছি। আমাদের হাতে একটাই উপায়, জনগণকে সম্পৃক্ত করা। আমরা রাষ্ট্রের সবাইকে আহ্বান জানাই, রাস্তায় বেরিয়ে আসুন। হাতে আর কয়েকটা দিন সময় আছে, এই সরকারকে সরাতে না পারলে মানুষের কোনও অস্তিত্ব থাকবে না।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অনেকে বলে আমরা ক্ষমতায় যেতে চাই। আমরা ক্ষমতায় যেতে চাই না। আমরা চাই জনগণের ন্যূনতম যে অধিকারগুলো আছে সেগুলো যেন তারা পায়। সরকারের দুর্নীতি, দুঃশাসন এমন একটা জায়গায় পৌঁছেছে যে মানুষের নাভিশ্বাস না শুধু, মৃত্যুবরণ করার মতো অবস্থা।

আমরা যখন বাজারে যাই তখন এটা টের পাই। সাধারণ মানুষ ডিম কিনতে পারছে না, লাউ, শাক কিনতে পারছে না। কিন্তু ইলেকশনে গুন্ডা, ইউএনও, ডিসিদের জন্য ৬৫ কোটি টাকার গাড়ি দিচ্ছে। তাদের আলাদা করে টাকা দেওয়া হচ্ছে। শোনা যাচ্ছে ইতোমধ্যে ডিসি, এসপি যারা নির্বাচন পরিচালনা করবে তাদের কাছে টাকা পৌঁছে গেছে।’

তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর সব দেশেই খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নজিরবিহীন। এর কারণ, এই সরকারকে কোনও কিছুর জন্য জবাব দিতে হয় না। ১৫ বছর ধরে সরকার দেশটাকে লুটের রাজ্যে পরিণত করেছে। প্রতিটি পয়সা মানুষের পকেট থেকে নিচ্ছে। তাদের এই লুটের পরিণতি আজ বাংলাদেশের মানুষকে ভোগ করতে হচ্ছে। যে ঋণ করছে সেগুলো মানুষের পকেট থেকেই নিচ্ছে। তারা তাদের ইচ্ছামতো যা খুশি তাই করছে।’

সরকারকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমার খাদ্য নিরাপত্তার অধিকার তো নিশ্চিত করতে হবে। সেই অধিকার তো গেছেই, আমাদের ভোটের অধিকারটাও কেড়ে নিয়েছে। বিচার পাওয়ার অধিকারও নাই। মগের মুল্লুক তৈরির যে প্রক্রিয়া, এ থেকে তারা সহজে বের হতে চায় না। সুতরাং সরকারকে সরানোর বিকল্প কিছু নেই। একটাই ডাক, এই সরকারকে সরাতে হবে। শেষবারের মতো সরকারকে বলতে চাই, দয়া করে পদত্যাগ করুন। নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা দিয়ে সরে যান। দেশের মানুষকে বাঁচতে দেন।’

সেমিনারে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, ‘কৃষিতে উৎপাদন পরবর্তী দুটি ধাপ রয়েছে- মার্কেট চেইন আর সাপ্লাই চেইন। এই দুটি ঠিক না থাকলে উৎপাদন করলেও লাভ নেই। এই সরকারের প্রতিপালিত সিন্ডিকেট এই দুটোই দখল করে রেখেছে। এই সরকার নিজেই বলেছে মূল্য নিয়ন্ত্রণ করলেও কার্যকর করতে পারছে না। কারণ, সরকারের সুবিধাভোগীরা মন্ত্রীদের কথা পাত্তা দেয় না।’

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সোনালী দলের সভাপতি অধ্যাপক গোলাম হাফিজ কেনেডির সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আব্দুস সালাম, অধ্যাপক ড. তাজমেরী এস এ ইসলাম, জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফর তুহিন প্রমুখ।

এইচআর

Link copied!