ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

শিবিরের ৭ নেতাকে গুম ও নির্যাতনের অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে

আমার সংবাদ ডেস্ক

আমার সংবাদ ডেস্ক

নভেম্বর ১৭, ২০২৪, ০৫:৫২ পিএম

শিবিরের ৭ নেতাকে গুম ও নির্যাতনের অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ৭ নেতাকে গুম, নির্যাতন ও পঙ্গু করার ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। রবিবার (১৭ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন শাখায় পৃথকভাবে সাতটি অভিযোগ দায়ের করা হয়।

অভিযোগকারীদের মধ্যে ৬ জন ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন। তবে একজন এখনও গুম থাকায় তার পক্ষে স্বজনরা অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগকারীরা হলেন— দেলোয়ার হোসেন মিশু, নুরুল আমিন, মো. আলমগীর হোসেন, আব্দুল করিম, মো. জনি ইসলাম ও সাইফুল ইসলাম। আর কামরুজ্জামান এখনও নিখোঁজ।

অভিযোগ দায়েরের ক্ষেত্রে তাদের সহযোগিতা করেন ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় আইন সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান ও সহকারী আইন সম্পাদক আমানুল্লাহ আদিব। পৃথক সাতটি ঘটনায় র‌্যাব, পুলিশ ও ছাত্রলীগ-যুবলীগের ৫৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি।

১ নম্বর অভিযোগে বলা হয়েছে–– মো. জনি ইসলাম বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শাখার কর্মী হিসেবে কাজ করছিলেন। তিনি ২০১৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি রাতে পড়ার টেবিলে বসে পড়াশোনা করছিলেন। এমন সময় রাত ১১টার দিকে প্রশাসন ও ছাত্রলীগের ১৫ থেকে ২০ জন তাকে বাড়ির পড়ার টিবিল থেকে উঠিয়ে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে নিয়ে যায়। বিনোদপুর বাজারে অবস্থান করা গাড়িতে তাকে উঠিয়ে চোখ বেঁধে ফেলে। তাকে সেখান থেকে রাজপাড়া থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। থানায় নিয়ে গিয়েই রাত ১২টার পর থেকে জিজ্ঞাসাবাদের নামে চালানো হয় বর্বরতা।

রাত দেড়টার পর তাকে থানা থেকে বের করে গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় দাঁত তলা এলাকার একটি আম বাগানে। সেখানে তাকে বাম পায়ে শটগান ঠেকিয়ে তিনটি গুলি করা হয়। গুলির শব্দ শুনে এলাকাবাসী আসতে থাকলে তারা দ্রুত তাকে গাড়িতে উঠিয়ে ফেলে এবং আহত অবস্থায় তাকে উপর্যুপুরি আঘাত করতে থাকে পুলিশ। এরপর নিয়ে যাওয়া হয় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজে। হাসপাতালে দীর্ঘ সময় পড়ে থাকলেও কোনও চিকিৎসা নিতে দেওয়া হয়নি। এরপর পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়ে দেওয়া হয় পঙ্গু হাসপাতালে। সেখানেও পাঁচ দিন পর্যন্ত কোনও চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। সাত দিন পর পা থেকে দুর্গন্ধ বের হতে থাকলে ডাক্তারের পরামর্শে পা কেটে ফেলা হয়। এরপর সেখান থেকে ‘বন্দুকযুদ্ধের’ নাটক সাজিয়ে মামলা দিয়ে পাঠানো হয় কারাগারে। পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে ২৫টি মামলা দেওয়া হয়।

২ নম্বর অভিযোগে মো. আব্দুল করিম উল্লেখ করেন, তিনি ইসলামী ছাত্রশিবিরের চট্টগ্রামের বাঁশখালী থানার কর্মী ছিলেন। ২০১৩ সালের ৩ মার্চ দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায়ের প্রতিবাদে এবং মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা আকস্মিকভাবে হামলা ও গুলি চালায়। এক পর্যায়ে একটি বুলেট এসে তার মেরুদণ্ডে এসে লাগে। প্রাথমিক চিকিৎসা নেওয়ার পর ডাক্তার তাকে চট্টগ্রাম সদর হাসপাতালে দ্রুত নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত দেয়। কিন্তু প্রশাসন ও আওয়ামী লীগকর্মীদের বাধার কারণে স্থলপথে যাওয়া সম্ভব হচ্ছিলো না। তাই শিবির নেতারা বঙ্গোপসাগরের দিয়ে ট্রলারে চট্টগ্রাম ন্যাশনাল হাসপাতালে পৌঁছান। কিন্তু কর্তব্যরত চিকিৎসক অপারগতা প্রকাশ করেন এবং তার মেরুদণ্ডের চিরস্থায়ী ক্ষতি হয়েছে বলে জানান। এরপর থেকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ১১ বছর যাবৎ চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি।

৩ নম্বর অভিযোগে মো. আলমগীর হোসেন বলেন, তিনি ইসলামী ছাত্রশিবিরের সদস্য ছিলেন। ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদির রায়ের প্রতিবাদে মির্জাপুর বাজার থেকে শন্তিপূর্ণ প্রতিবাদ মিছিল শুরু হয়। মিছিলে পুলিশ, বিজিবি ও আওয়ামী লীগের কর্মীরা গুলি চালাতে থাকে। একটি বুলেট এসে তার ডান কানে লাগে। তিনি আহত অবস্থায় পড়ে গেলে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে গাড়িতে ওঠানোর সময় আওয়ামী সন্ত্রাসীরা তাকে ছিনিয়ে নিয়ে মারধর করে। একপর্যায়ে তাদের হাতে থাকা রামদা দিয়ে দুপায়ে কোপ দিলে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে তারা তাকে মৃত ভেবে ৩০ ফুট উচু ব্রিজ থেকে ফেলে দয়ে। এতে তার মেরুদণ্ড ভেঙে যায়। গত ১১ বছর ধরে তার চিকিৎসা চলছে।

৪ নম্বরর অভিযোগে বলা হয়েছে, মো. দেলোয়ার হোসেন মিশু নোয়াখালীর মাইদি থানা সেক্রেটারি ছিলেন। ২০২২ সালের ২৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ১০ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে নোয়াখালীর মাইজদী পৌর বাজার থেকে শান্তিপূর্ণ মিছিল শুরু হলে পুলিশ হামলা চালায় ও গুলি বর্ষণ করে। ওই সময় একটি রাবার বুলেট তার ডান চোখে আঘাত করে। এরপর চিরদিনের জন্য তার এই চোখের আলো নিভে যায়।

৫ নম্বর অভিযোগে মো. সাইফুল ইসলাম তারেক উল্লেখ করেছেন, তিনি ইসলামী ছাত্রশিবিরের থানা শাখার কর্মী ছিলেন। ২০১৭ সালের ১৪ জুন সাদা পোশাকে র‌্যাব তাকে নিজ বাড়ির আঙিনা থেকে উঠিয়ে নিয়ে যায়। দুই দিন পর তাকে নিয়ে বান্দরবন ক্যাসিংঘাটা যায় এবং সেখান থেকে গুম থাকা জয়নাল আবেদীনকে নিয়ে আসে র‌্যাব-৭ এ, যেখানে ৫৯ দিন একটি কবরের মতো রুমে বন্দি রাখা হয়। এর মধ্যে তাকে ৩৯ দিন কোনও গোসলের সুযোগ দেওয়া হয়নি। পরবর্তীতে ৫৯ দিন পর তাকে চোখ বেঁধে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নামে চালানো হয় নির্যাতন। ২০১৯ সালে হঠাৎ সেখানে জয়নাল আবেদীনের সঙ্গে দেখা হয় এবং পরবর্তীতে তিনি জানান এটা র‌্যাবের উত্তরা ক্যাম্প। সেখানে থেকে সাইফুল ইসলাম তারেককে ২০২০ সালের ১৯ জুন ময়মনসিংহে র‌্যাব-১৫ তে নিয়ে যাওয়া হয়। পরদিন তাকে ফুলবাড়িয়া থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হলে ১০ মাস কারাভোগের পর জামিনে মুক্তি মেলে।

৬ নম্বর অভিযোগে বলা হয়েছে, মো. নুরুল আমিন ইসলামী ছাত্রশিবিরের ভাটারা থানা সভাপতি ছিলেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী ঢাকা থেকে গুম হওয়ার পর তাদের সন্ধানে গুলশান থানায় ২০১৩ সালের ২৬ জুন সাধারণ ডায়েরি করে গুলশান আজাদ মসজিদে মাগরিবের নামাজ আদায় করেন। মসজিদ থেকে বের হলে সাদা পোশাকে র‌্যাবের একটি টিম তাকে ও আব্দুস সালাম নামে শিবিরের আরেক নেতাকে ধরে মাইক্রোবাসে উঠিয়ে নেয় এবং চোখ বেঁধে ফেলে। ১ ঘণ্টা পথ চলার পর তাদের নিয়ে চার তলার একটি কক্ষে রাখা হয়। সেখানে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের নামে নিয়মিত নির্যাতন করা হতো। তিন মাস ১৫ দিন পর একদিন রাত ৩টার দিকে গাড়িতে করে চোখবাঁধা অবস্থায় নূরুল আমিনকে মানিকগঞ্জের ঘিওড় এবং আব্দুস সালামকে সাভারের ফেলে দেওয়া হয়।

৭ নম্বর অভিযোগে বলা হয়েছে, মো. কামারুজ্জামান ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঝিনাইদহের তৎকালীন রতনহাট উপজেলার একটি ইউনিয়নের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। ২০১৭ সালের ৪ মে সে তার বন্ধুর বাসায় যান এবং সেখানেই রাত্রিযাপন করে। হঠাৎ রাত ২টার দিকে সাদা পোশাকে ৮ থেকে ১০ জন লোক এসে জোর করে কামারুজ্জামানকে উঠিয়ে নিয়ে যান। তাদের পরিচয় জানতে চাইলে তারা প্রশাসনের লোক বলে পরিচয় দেয়। তাকে কেন নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তার কারণ জানতে চাইলে তারা গালাগাল শুরু করে। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত তার কোনও খোঁজ মেলেনি।

আরএস

Link copied!