আমার সংবাদ ডেস্ক
আগস্ট ১, ২০২৫, ০৪:২১ পিএম
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ অভিযোগ করেছেন, কুমিল্লার মুরাদনগরে একটি মহল ত্রাসের রাজত্ব কায়েমের অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
তিনি দাবি করেন, এই পরিস্থিতির জন্য স্থানীয় প্রশাসনের কিছু সদস্য এবং ক্ষমতাসীন দলের ঘনিষ্ঠ এক উপদেষ্টা দায়ী।
সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কায়কোবাদ বলেন, “আমি একটি দলের রাজনীতি করি, তাই বিচারাধীন বিষয়ে মন্তব্য করা উচিত নয়। তবে মুরাদনগরে যেসব ঘটনা ঘটছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক, এবং এসবের পেছনে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।”
তিনি অভিযোগ করে বলেন, পুলিশের কিছু সদস্য এক যুবক উপদেষ্টার তদবিরে মুরাদনগরে অবস্থান নিয়েছেন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। “পুলিশ প্রশাসনের নিরপেক্ষ থাকা উচিত ছিল, কিন্তু এখানে তারা একপক্ষীয় আচরণ করছে,” বলেন তিনি।
কায়কোবাদ আরও দাবি করেন, মুরাদনগরে প্রশাসনিক পদে রদবদলের মাধ্যমে কিছু বিতর্কিত ব্যক্তিকে পুনরায় সক্রিয় করা হয়েছে, যারা পূর্বে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল। “এসপি ও ওসি বদলির পর পরিস্থিতিতে নাটকীয় পরিবর্তন এসেছে। একই সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের ছত্রচ্ছায়ায় থাকা কিছু দুষ্কৃতিকারী আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে,” বলেন তিনি।
এই অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের নাম উল্লেখ করে কায়কোবাদ বলেন, “এই তরুণ উপদেষ্টা দলে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ না দিলেও দলের হয়ে কাজ করছেন। প্রশাসনে তার ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। সরকারি অনুদান বণ্টন থেকে শুরু করে এলাকায় সন্ত্রাস কায়েম—সবকিছুতেই তাদের হাত রয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “মুরাদনগরে তিনজন মানুষকে হত্যা করা হয়েছে—এটা অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং বর্বরোচিত ঘটনা। অথচ মূল অভিযুক্তদের এখনও গ্রেপ্তার করা হয়নি, বরং আমাদের ৭০-৮০ বছরের নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলায় কারাগারে পাঠানো হচ্ছে।”
নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়ে কায়কোবাদ বলেন, “এই ঘটনার প্রকৃত তদন্ত হওয়া উচিত। দোষীদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। সৎ ও সাহসী তদন্ত কর্মকর্তার অধীনে তদন্ত ছাড়া সত্য প্রকাশিত হবে না।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, “আওয়ামী লীগের কিছু সন্ত্রাসী গ্রুপ এখনো সক্রিয় রয়েছে। তারাই দলকে বিতর্কিত করেছে। সাধারণ আওয়ামী লীগ কর্মীরা এসবের সঙ্গে জড়িত নয়। কিন্তু এই গোষ্ঠীগুলোকে উৎসাহ দেওয়ার ফলেই এলাকায় আজ ত্রাসের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।”
নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে কায়কোবাদ বলেন, “১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ সালের মধ্যে আমাকে হত্যাচেষ্টা করা হয়েছিল। আজ সেই একই চক্র আবারও সক্রিয় হয়ে আমাকে দমন করার ষড়যন্ত্র করছে। তবে আল্লাহর রহমতে আমি এখনো রাজনীতির মাঠে আছি, এবং জনগণের পাশে আছি।”
সাক্ষাৎকারের শেষে কায়কোবাদ বলেন, “এই অন্যায়-অবিচারের বিচার একদিন হবেই। যারা নিরপরাধ নেতাকর্মীদের জেলখানায় পাঠিয়েছে, তাদের বিচার হবে এ দুনিয়াতেই কিংবা হাশরের ময়দানে। আল্লাহর উপর আমার পূর্ণ আস্থা রয়েছে।”
ইএইচ