ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা মঙ্গলবার, ০১ জুলাই, ২০২৫
Amar Sangbad

বিদ্রোহীদের ক্ষমা নেই

মো. মাসুম বিল্লাহ

মে ৯, ২০২২, ০১:১৪ এএম

বিদ্রোহীদের ক্ষমা নেই
  • প্রভাবশালী নেতা ও সাংসদের মাইম্যান তৈরিতে ক্ষোভ প্রকাশ 
  • বিতর্কমুক্ত রাখতে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন ইভিএমে 
  • মেয়াদোত্তীর্ণ সহযোগীদের দ্রুত সম্মেলনের নির্দেশ
  • নেতা ও এমপিদের এলাকায় যোগাযোগ বৃদ্ধির তাগিদ
  • বিরোধীদের সভা-সমাবেশে বাধা না দেয়ার পরামর্শ

ক্ষমা পাবেন না আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীরা। দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে যারা স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে বিদ্রোহী হয়েছিলেন, তাদের দল থেকেও বাদ দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেছেন, ‘দল করতে হলে দলীয় সিদ্ধান্ত মানতেই হবে। সিদ্ধান্ত না মানলে দল করার প্রয়োজন নেই। বিদ্রোহ করে যারা এখন দলীয় পদে বহাল, তাদের বহিষ্কার করতে হবে। ফিরিয়ে আনতে হবে দলীয় শৃঙ্খলা।’ 

দীর্ঘদিন পর গত শনিবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে তারই সভাপতিত্বে বৈঠকে বসে আওয়ামী লীগ। দলের ২২তম জাতীয় সম্মেলন ও আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে পাঁচ ঘণ্টা ১৮ মিনিটের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে দলের সিনিয়র এবং বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের আরও গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা দেন দলটির সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

তুলে ধরেন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে নৌকার পরাজয় ও দলের প্রভাবশালী নেতা এবং সংসদ সদস্যদের মাইম্যান তৈরি নিয়েও ক্ষোভ ঝাড়েন তিনি। দলের পাশাপাশি যে সব সহযোগী সংগঠনের মেয়াদোত্তীর্ণ, দ্রুত সেগুলোর সম্মেলনের নির্দেশনা দেন। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে বিরোধী দলের সভা-সমাবেশ ও মিছিল-মিটিংয়ে বাধা না দেয়া পরামর্শও দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা বিষয়গুলো আমার সংবাদকে নিশ্চিত করেছেন। 

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বিতর্কমুক্ত রাখতে চান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিগত দিনের মতো কেউ যেন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলতে না পারে, সে জন্য অধিক জনপ্রিয়, গ্রহণযোগ্য ও ক্লিন ইমেজের নেতাদের নৌকার মনোনয়ন দেয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে কোনো ধরনের ঝুঁকি নিতে চাই না। যাদের নৌকার মনোনয়ন দেয়া হবে, তাদের  ভোটের মাঠে প্রতিযোগিতার মধ্যে দিয়ে নিজ গুণে বিজয় অর্জন করে আসতে হবে। এ জন্য নির্বাচনি আসন ধরে ধরে জরিপ চলছে। জরিপের আলোকে প্রার্থী বাছাই করা হবে। যাকে দিয়ে বিজয়ী হওয়া সম্ভব তাকেই মনোনয়ন দেয়া হবে। 

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন ইভিএমে হলে কোনো বিতর্ক থাকবে না জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে আরও বলেন, ইভিএমে ভোট হলে নির্বাচন নিয়ে কোনো অভিযোগ থাকে না। ইভিএমে ভোট নিয়ে কেউ কথাও বলে না। ফলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ইভিএমে হবে। যেন নির্বাচন নিয়ে কেউ কথা না বলতে পারে। ইভিএমের বিষয় মাথায় রেখেই নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। দলীয় নেতাকর্মী এবং এমপিদের এলাকায় যোগাযোগ বাড়াতে হবে। কর্মীবান্ধব হতে হবে। সরকার উন্নয়ন মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে। যেন দেশের সব মানুষ আবারো নৌকায় ভোট দেয়।  

 বৈঠকে থাকা একাধিক নেতা জানান, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে নৌকার বিরুদ্ধে থাকায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফকে প্রশ্নের মুখে ফেলেন দলটির সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘মাইম্যানকে বিজয় করাতে গিয়ে তুমি (হানিফ) ১০ স্থানে নৌকার প্রার্থীকে হারিয়েছ। মাইম্যানকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছ।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদ থেকে শুরু করে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে যারাই বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন তাদের ক্ষমা পাওয়ার সুযোগ নেই।  যারা এখনো পদে আছেন, বহিষ্কার হননি তাদের সরিয়ে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হবে। দল করতে হলে সিদ্ধান্ত মানতে হবে। সিদ্ধান্ত না মানলে দল করার প্রয়োজন নেই। বহিষ্কার করতে হবে। যেখানে এখনো সম্মেলন হয়নি কিন্তু বিদ্রোহী ব্যক্তি দলীয় পদে আসীন আছে তাকে বাদ দিয়ে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি করে সম্মেলন করতে হবে। কোনোভাবেই বিদ্রোহীদের মাফ করার সুযোগ নেই।’

বৈঠকে শুভেচ্ছা বক্তব্যে রাখেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, শাজাহান খান, ড. আবদুর রাজ্জাক, কর্নেল (অব.) মুহম্মদ ফারুক খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, ড. হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমসহ  কেন্দ্রীয় নেতারা। এ সময় সংগঠনের কার্যক্রম ও গতিবিধি নিয়ে নানা বিষয় তুলে ধরে বক্তব্যে দেন তারা। 

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, তৃণমূলে সংগঠনকে ঢেলে সাজাতে গিয়ে ত্যাগী-পরীক্ষিতদের বাদ দেয়া, হাইব্রিড, নব্য লীগার ও টাকার কুমিরদের দলে পদ দেয়া হচ্ছে মর্মে দলীয় সভানেত্রীকে অবহিত করেন। দেশের আমলা নির্ভরতা নিয়ে কথা বলেন শাজাহান খান।

তিনি বলেন, দেশের আমলারা অনেক বেশি প্রভাবশালী হয়ে গেছে। তারা আর কাউকে গুরুত্ব দিতে চায় না। আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকলেও গুরুত্ব দেয় না। তার এমন প্রশ্নের জবাবে সরকারপ্রধান বলেন, সবাইকে নিয়ে কাজ করতে হবে। 

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, ‘বিএনপি একটি সন্ত্রাসী দল। তাদের কেন আমরা নির্বাচনে আনব? তারাই নির্বাচনে আসতে চায় না।’ হানিফের কথার জবাব দেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। 

হানিফকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘তুমি তো ১০ জন নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থীকে হারিয়েছ ‘মাইম্যান’ বিজয়ী করতে গিয়ে। তুমি চাইবে বিএনপি নির্বাচনে না আসুক। যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনে ভয় পায় তারাই চায় না বিএনপি নির্বাচনে আসুক। যাতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া যায়। আমি চাই সবার অংশগ্রহণ। ত্যাগী লোকদের জায়গা দিতে হবে। ত্যাগীরা দুঃসময়ে ঝুঁকি নেয়। মাইম্যানরা সবসময় সাইড লাইনে থাকে। সময়মতো পাওয়া যায় না।’

দীর্ঘদিন ধরেই দেশে বিরোধী শক্তিশালী রাজনৈতিক দল নেই বলে দাবি করে আসছে আওয়ামী লীগ। এ নিয়ে গণমাধ্যমে সরাসরি কথা বলেছেন দলটির সভাপতি সাধারণ সম্পাদক কেন্দ্রীয় সিনিয়র নেতারা। আগামী দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে মাঠে শক্তিশালী বিরোধী দল চান খোদ আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিএনপিসহ সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সভা-সমাবেশ, মিছিল-মিটিংয়ে যেন বাধা দেয়া না হয়। সে জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। 

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে ফের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসতে চায় আওয়ামী লীগ। এ জন্য দলের পাশাপাশি সহযোগী সংগঠনগুলো সাংগঠনিকভাবে আরও শক্তিশালী করার তাগিদ দিয়েছেন দলটির সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মেয়াদোত্তীর্ণ সব সহযোগী সংগঠনের সম্মেলন করতে শেষ করতে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘জেলা-উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন করলেই শেষ হবে না। সহযোগী এবং ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর সম্মেলনও শেষ করতে হবে। অনেক সংগঠনের মেয়াদ শেষ হয়েছে। সেগুলো সম্মেলন করতে হবে। 

এদিকে দলীয় প্রধানের নির্দেশনার পর আগামী মঙ্গলবার ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ ও সহযোগী সংগঠনের সাথে যৌথসভার আয়োজন করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। গত শনিবার আওয়ামী লীগের বৈঠকে থাকা এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে  বলেন, যৌথসভায় মহানগর উত্তর-দক্ষিণ ও মেয়াদোত্তীর্ণ সহযোগী সংগঠনের সম্মেলনের নির্দেশনা দেয়া হতে পারে।

Link copied!