ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

লাইসেন্স ছাড়াই চলছে রমরমা ব্যবসা

রেদওয়ানুল হক

আগস্ট ৩, ২০২২, ০১:৩৩ এএম

লাইসেন্স ছাড়াই চলছে রমরমা ব্যবসা

মুক্তবাজার অর্থনীতির নিয়ম মেনে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় বাজারের ওপর ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এরপরই ডলার মার্কেটে টালমাটাল অবস্থা চলছে। বাণিজ্য ঘাটতির কারণে দেশে ডলারের সংকট থাকলেও অস্বাভাবিক চাহিদা বাজারকে অস্থিতিশীল করে তুলছে। জরুরি প্রয়োজন মেটাতেও ডলার সংগ্রহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। অতিরিক্ত এ চাহিদা কোথা থেকে আসছে তার কোনো তথ্য নেই সরকারের কাছে।

কারণ বেশির ভাগ লেনদেনই হচ্ছে ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে। দেশে কার্যরত মানিচেঞ্জারগুলোর বেশির ভাগই অবৈধ। এছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলোও মানছে না নিয়ম। কেউ এক লাইসেন্সে খুলে বসেছে একাধিক ব্রাঞ্চ। আবার কেউ  নিয়োগ করছে এজেন্ট।

তাই অস্থিরতা ঠেকাতে অভিযানে নেমেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স স্থগিত এবং প্রায় অর্ধশত প্রতিষ্ঠানকে শোকজ করা হয়েছে। এতে মার্কেটে স্থিতাবস্থা বিরাজ করলেও দীর্ঘমেয়াদে এর ফল মিলবে না বলে মত বিশ্লেষকদের।

তথ্যমতে, দেশে অনুমোদিত মানিচেঞ্জার আছে ৬০২টি। এর মধ্যে বৈধতা আছে মাত্র ২৩৫টির । বাকিগুলোর লাইসেন্স স্থগিত বা বাতিল রয়েছে। জানা গেছে, লাইসেন্স স্থগিত বা বাতিল হওয়া অধিকাংশ মানিচেঞ্জার ডলারের অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।

এছাড়া মানিচেঞ্জারের বাইরে ব্যক্তি পর্যায়ের অবৈধ লেনদেনে কোনো কাগজপত্র লাগে না। কিন্তু বৈধ মানিচেঞ্জারের দৈনন্দিন কেনাবেচার তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠাতে হয়। তবে অনেক মানিচেঞ্জার এজেন্ট নিয়োগ দিয়ে প্রতিষ্ঠানের বাইরে গ্রাহকের কাছ থেকে ডলার কেনাবেচা করে। এ ধরনের লেনদেনও অবৈধ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, মুক্তবাজার অর্থনীতি কাজ করছে না তাই হস্তক্ষেপ করতে হচ্ছে। সাম্প্রতিক অভিযানে ডলার নিয়ে কারসাজি করার অপরধে পাঁচ মানিচেঞ্জারের লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে। পাশাপাশি ৪২টিকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। এছাড়া লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা করায় ৯টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বলা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘মানি এক্সচেঞ্জের পাশাপাশি ব্যাংকগুলোতে পরিদর্শন চলছে। লেনদেনের বিভিন্ন তথ্য ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে সংগ্রহ করছি। বিষয়গুলো তদারকি করা হচ্ছে। তাদের কোনো অনিয়ম পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। এখন পর্যন্ত রাজধানীর বিসমিল্লাহ মানি এক্সচেঞ্জ, অঙ্কন মানি এক্সচেঞ্জ এবং ফয়েজ মানি এক্সচেঞ্জসহ পাঁচটির লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে।’

গতকাল নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে ডলারের বাজারে স্থিতিশীলতা ফেরার আভাস দিয়ে মুখপাত্র জানান, ডলার সংকটের কারণে আমরা আমদানিতে বেশ কিছু শর্ত দিয়েছি। এখন তিন মিলিয়নের (৩০ লাখ ডলার) বেশি আমদানি এলসি খোলার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমতি নিতে বলা হয়েছে।  আগে যেটা ছিল পাঁচ মিলিয়ন।

এতে দেখা যাচ্ছে, অনেক এলসিতে অপ্রয়োজনীয় ও বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে। আমরা এগুলোর অনুমতি দেইনি। ফলে গত জুনের তুলনায় জুলাই মাসে আমাদের আমদানি এলসি অনেক কমেছে। এছাড়া রেমিট্যান্স ও রপ্তানিও বেড়েছে। এসব দিক বিবেচনা করলে আমরা বলতে পা?রি বাজার স্থিতিশীল হয়ে আসবে।

মুখপাত্র বলেন, বর্তমান গভর্নর দায়িত্ব নেয়ার পর যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছে এগুলো বাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে, আশা করছি এটা অর্থনীতিতে সুফল বয়ে আনবে।

ব্যাংকেও অনেক বেশি দামে ডলার কেনাবেচা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্ধারিত দামের তুলনায় ৮-১০ টাকা বেশি দামে ডলার বিক্রির তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। এ বিষয়ে ব্যাংকাররা বলছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক শুধু সরকারি এলসি ও জরুরি প্রয়োজনীয় পণ্যের ক্ষেত্রে ডলার সহায়তা দিয়ে থাকে।

তাই প্রয়োজন মেটাতে ব্যাংকগুলোকে বাজার থেকে ডলার কিনতে হচ্ছে। বেশি দামে কিনতে বাধ্য হওয়ায় বিক্রিও করতে হচ্ছে বেশি দামে। তাই ডলার মার্কেটের অস্থিরতার জন্য সবাই মানিচেঞ্জারগুলোর কারসাজিকে দায়ী করছেন।

কারসাজি চক্র ও অবৈধ মানিচেঞ্জারগুলোর দৌরাত্ম্য সম্পর্কে মানিচেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দিন সিকদার আমার সংবাদকে বলেন, ‘অবৈধ মানিচেঞ্জারগুলোর কারণে বাজার অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছে। তাদের উচ্চ রেটের কারণে বৈধ প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবসা করতে পারছে না।

এছাড়া কোনো কাগজপত্র ছাড়াই অবৈধরা যখন ডলার কেনাবেচা করছে, তখন কাগজপত্র চাইলে কেউ আর আমাদের কাছে আসে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে বেশ কয়েকবার চিঠি দিয়ে অবৈধ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকও মাঝে মধ্যে ব্যবস্থা নিয়েছে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শক্ত অভিযান ছাড়া এদের দমানো যাবে না।’

অন্যদিকে সঞ্চয়পত্র ও এফডিআরসহ ব্যাংকে মুনাফা কমে যাওয়ায় মানুষ ডলার মার্কেটে বিনিয়োগ করছে। শেয়ার বাজারে ধসের কারণে অনেকে এখানে বিনিয়োগ করছে। তাই বাজারে অতিরিক্ত চাপ হয়েছে বলে মনে করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক।

সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করেছে ৯৪ টাকা ৭০ পয়সা দরে। অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংক গতকাল মঙ্গলবার সরকারি আমদানি বিল মেটাতে এই দরে ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করেছে। নিয়ম অনুযায়ী এটাই ডলারের আনুষ্ঠানিক দর।

গত মে মাসের শুরুর দিকে এ দর ছিল ৮৬ টাকা ৪৫ পয়সা। এ হিসাবে তিন মাসের ব্যবধানে টাকার মান কমেছে আট টাকা ২৫ পয়সা। তবে খোলাবাজারে এক ডলার বিক্রি হচ্ছে ১০৯ টাকা থেকে ১১০ টাকায়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ব্যাংকগুলোতে এখন আমদানির জন্য ১০০ টাকার নিচে ডলার পাওয়া যাচ্ছে না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ১০৭ থেকে ১০৯ টাকায় ডলার কিনে আমদানি দায় মেটাতে হচ্ছে। রেমিট্যান্সের জন্যও ব্যাংকগুলোকে সর্বোচ্চ ১০৮ টাকা দরে ডলার কিনতে হচ্ছে।

গতকাল খোলাবাজারে ১০৯ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দেশে খোলাবাজারে প্রথমবারের মতো ১০০ টাকার ঘর পেরিয়ে যায় গত ১৭ মে। এরপর আবার কমে আসে। পরে গত ১৭ জুলাই ফের ১০০ টাকা অতিক্রম করে। গত সপ্তায় নগদ ডলার ১১২ টাকায় উঠেছিল।

 

Link copied!