ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

শিক্ষার্থী ঝরেপড়া বাড়বে

বেলাল হোসেন

আগস্ট ২১, ২০২২, ০৪:২০ এএম

শিক্ষার্থী ঝরেপড়া বাড়বে

জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে বাজারে লাফিয়ে বাড়ছে বিভিন্ন পণ্যের দাম। এতে করে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শিক্ষাউপকরণের দামও। ফলে বেড়েছে শিক্ষাব্যয়। নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের অভিভাবকরা লেখাপড়া খরচ চালাতে চরম বেকায়দায় পড়েছে। দুই বছর করোনার আঘাতে এমনিতেই অনেক পরিবারের শোচনীয় অবস্থা। এরপর জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। এমতাবস্থায় উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা।

তারা বলছেন, নিত্য জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বাড়ছে তাতে সন্তানদের ন্যূনতম পুষ্টি চাহিদা পূরণ করাই বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এরপর তো আছে শিক্ষাউপকরণের মূল্যবৃদ্ধি। এভাবে চলতে থাকলে সন্তানদের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায় কি-না তা নিয়েও সংশয়ে অভিভাবকরা।  

শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দ্রব্যমূল্যের বর্তমান পরিস্থিতি এভাবে চলতে থাকলে করোনার চেয়ে বেশি শিক্ষার্থী ঝরে পড়বে।সাধারণ খেটে খাওয়া একটি পরিবার তার সন্তানদের মুখে প্রতিদিনের খাবার তুলে দিতেই চরম হিমশিম খাচ্ছে। এখন পরিবারে শিশুদের পুষ্টি জোগান দেয়া ডিম যেন বিরাট ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।

গত দুই মাস আগে শিক্ষাউপকরণের যে দাম ছিল তার চেয়ে ৩৫-৫০ শতাংশ বাড়িয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। আগে যে খাতার দাম ছিল ৬০ টাকা এখন তার দাম হয়েছে ৯০ টাকা। কলম, পেন্সিলের দাম বেড়েছে পাঁচ থেকে ১০ টাকা। রঙ পেন্সিল বক্সের দাম বেড়েছে ৪০ টাকা। জ্যামিতি বক্সের দাম বেড়েছে ৩০-৪০ টাকা, সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটরে বেড়েছে ৪০০ টাকা। এরপর আছে টিউশন ফির বাড়তি খড়গ।

এছাড়াও বিভিন্ন বিদ্যালয়ে মাসিক বেতনের সাথে আছে কয়েক ধরনের ফি। এ প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় আব্দুল বাকী নামে এক অভিভাবকের। তিনি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। রাজধানীর বিয়াম মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে তার দুই সন্তান লেখাপড়া করছে।

তিনি আমার সংবাদকে বলেন, দ্রব্যমূল্যের যে অবস্থা তাতে সংসার চালাতেই হিমশিম খাচ্ছি। শিশুদের ঠিকমতো পড়াতে পারছি না। একজন শিক্ষক বাসায় এসে আট হাজার টাকার নিচে পড়াতে চাইছেন না।

তিনি বলেন, আবার স্কুলের অত্যাচার তো আছেই। করোনার অবস্থায় সরকার বেতনের বেশি না নেয়ার ঘোষণা দিলেও, স্কুলে বেতনের পাশাপাশি অন্যান্য ফি নিয়মিত নিয়ে যাচ্ছে। এই অভিভাবক বলেন, নতুন করে প্যারেন্টস মিটিং ডেকে সেখানে স্কুল কর্তৃপক্ষ বলেছে— আমরা কোচিং করাব, ১০ হাজার টাকা করে দিতে হবে।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কথা উল্লেখ করে এই অভিভাবক আরও বলেন, সন্তানদের পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে পারছি না। ঠিকমতো ডিম ও মাছ কিনতে পারছি না। এখন শাকসবজি, ডাল-ভাত দিয়ে কোনোরকমে বেঁচে আছি। তিনি বলেন, চাল, আলু, পেঁয়াজের দাম তো বেড়ে গেছে। তেল তো আকাশচুম্বী।

তিনি বলেন, খুব খারাপ অবস্থার মধ্য দিয়ে দিন যাচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে কারো পক্ষেই ছেলেমেয়ে মানুষ করা সম্ভব হবে না বলেও জানান এই অভিভাবক। এ বিষয়ে সরকার যদি সহায়তা না করে তাহলে আমাদের পক্ষে পড়াশোনা করানো সম্ভব হবে না। চরম অনিশ্চয়তার ভেতর দিয়ে যেতে হচ্ছে আমাদের। শুধু ধনীদের ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করতে পারবে। গরিব-মধ্যবিত্তরা তো শেষ— বলে দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।

স্টেশনারি ব্যবসায়ী মো. রফিকুল আমার সংবাদকে বলেন, লেখার সাধারণ কলমগুলোতে তিন থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। কাগজের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় খাতার দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। যে খাতার দাম ছিল ৬০ টাকা তা বেড়ে এখন ৯০ টাকা আবার কোনোগুলো বেড়ে ১০০ টাকা হয়েছে। গাইড বইগুলোর দামও বেড়ে গেছে।

তিনি বলেন, জ্বালানি তেলে দাম বৃদ্ধির জন্য সব শিক্ষাউপকরণের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের করার কিছু নাই, পাইকারি ডিলাররা তো বেশি দাম নিচ্ছেন।  

এ বিষয়ে জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. একরামুল কবির আমার সংবাদকে বলেন, ‘দাম তো বেড়ে গেছে এটি সত্য কথা, তবে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাকার্যক্রম তো চালিয়ে যেতে হবে— বন্ধ রাখা যাবে না।’

তিনি বলেন, ‘সরকার অভিভাবকদের সাবসিডি দেবে তাও তো সম্ভব নয়।’ ড. একরামুল কবির আরও বলেন, ‘যাদের বেশি সমস্যা সে ক্ষেত্রে সরকার কিছু করতে পারে। যেমন— যারা সম্পদশালী তাদের উপর শিক্ষার জন্য আলাদাভাবে কিছু ট্যাক্স বাড়িয়ে যারা নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত তাদের সাহায্য করা সম্ভব, এটি করতে পারলে মনে হয় সবার জন্য সমান সুযোগ হতে পারে। এটি না করলে শিক্ষার্থীরা সমান সুযোগ পাবে না। শিক্ষা ক্ষেত্রে পৃথক ট্যাক্সেশনের বিষয়টি ভেবে দেখার সময় এসেছে। যারা ধনী তাদের ডাটাবেজগুলো স্কুল-কলেজ, ভার্সিটিতে আছে। মূলত তাদের কাছ থেকে বেতন বাড়িয়ে নেয়া যেতে পারে।

এ ছাড়া সরকারের মনে হয় আর কিছুই করার নেই, কারণ দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা তো তেমন ভালো নেই।

বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বেতনের সাথে নানান ফি জড়িয়ে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের বিষয়ে অধ্যাপক ড. একরামুল বলেন, ‘এ সব বিষয়ে সকারের মনিটরিং দিকটা নিয়ে আরও ভাবতে হবে। এ মুহূর্তে ইনকামের মোটিভেশন না নিয়ে সেবামূলক চিন্তা-ভাবনা করে স্কুল-কলেজগুলো চালাতে হবে। আমরাও এক সময় বলেছি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো যে বেতনটা নেয় তার প্রত্যেকটির ফি সরকারের কাছে অনুমতি নিতে হবে। সেই ব্যবস্থাটা কিন্তু এখনো হয়নি।’

তিনি বলেন, ‘ভালো মানের কথা বলে তারা দ্বিগুণ তিনগুণ বেতন নিচ্ছে।  এ বিষয়ে সরকারকে আরও বেশি পদক্ষেপ নিতে হবে যাতে করে অভিভাবকদের ওপর অতিরিক্ত আর্থিক চাপটা না আসে।

করোনায় যে পরিমাণ শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে তা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমান ঊর্ধ্বগতির বাজার অবস্থা যদি দীর্ঘায়িত হয় তাহলে শিক্ষার্থী ঝরে পরার সংখ্যা আরও বেড়ে যাবে।’

Link copied!