ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

মৃত্যুর ২৬ বছর পরও জনপ্রিয়তার শীর্ষে সালমান শাহ

মো. মাসুম বিল্লাহ

সেপ্টেম্বর ৬, ২০২২, ১২:৫৩ এএম

মৃত্যুর ২৬ বছর পরও জনপ্রিয়তার শীর্ষে সালমান শাহ

আজ চলচ্চিত্রের সেই বিভীষিকাময় দিন। আজকের দিনেই বাংলাদেশ দেশীয় চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়ক, এখনো অনেক নায়কের অনুপ্রেরণা, ফ্যাশন আইকন, মেধাবী অভিনেতা, সর্বোপরি মৃত্যুর ২৬ বছর পরও সমান জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহ। আজ তার ২৭তম মৃত্যুবার্ষিকী। সালমানের মৃত্যুবার্ষিকী এলেই যেন বিশেষ শহরের দাড়িয়াপাড়ার নানার বাসায় সালমান ভক্তদের আসা-যাওয়াটা যেন একটু একটু করে বাড়তেই থাকে।

গেলো ৩ সেপ্টেম্বর বিকালে সালমান শাহর নানার বাসায় গিয়ে দেখা যায় গেটের সামনে দাঁড়িয়েই কয়েকজন ছবি তুলছেন। কারণ, এ বাসাতেই অর্থাৎ এই ‘সালমান শাহ হাউস’-এ কেটেছে সালমানের ছোটবেলা। দুরন্ত সময়টা তিনি সেখানেই কাটিয়েছেন বলে জানালেন তার মামা কুমকুম। বাসার সামনেই সালমান শাহর বেশ কয়েকজন ভক্তের ভিড়ের মধ্য থেকে জানতে চাইলাম তাদের সম্পর্কে, কে কোথা থেকে এসেছেন। তার ছোটবেলা কেটেছে টাঙ্গাইলের মধুপুরে। সেখানে শুটিং হয়েছিল প্রয়াত শিবলী সাদিক পরিচালিত ‘আনন্দ অশ্রু’ সিনেমার। 

সালটা ১৯৯৫। বললেন মধুপুরের সন্তান শাকিল আহমেদ প্রিন্স। মধুপুরের কাকরাইদের বিএডিসি ফার্মেই মূলত শুটিং হয়েছিল।প্রিন্স বলেন, ‘যেহেতু আমার নানা নূরুল ইসলাম রাজ এই সিনেমার প্রযোজক ছিলেন, তাই আমার প্রিয় নায়ক সালমান শাহকে কাছে থেকে দেখার সুযোগ হয়েছিল। সে সময় কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়েছিল শাবনূর, ডলি জহুর, হুমায়ূন ফরীদি, নানা শাহসহ আরও অনেককে। আমার খুব মনে পড়ে, সে সময়  বিএডিসি ফার্মের বাংলোতে বসে সালমান শাহর সঙ্গে খেলা উপভোগ করার সুযোগ হয়েছিল আমার। খুব মনে পড়ে আমার নানার একটি লাল এক্সেল হোন্ডা ছিল। সেটা সালমান শাহর খুব প্রিয় ছিল। সেই হোন্ডা তিনি শুটিংয়ের সময়ে ফাঁকে ফাঁকে চালাতেন। খুব মধুর ছিল সেই সময়টা।

এত জনপ্রিয় একজন নায়ক ছিলেন তিনি, কিন্তু তার মধ্যে বাচ্চাসুলভ আচরণটাই মুগ্ধ করেছিল আমাকে। তার অকাল প্রয়াণে সবাই যেমন কষ্ট পেয়েছিলেন, আমার কেন যেন মনে হতো আমিই বোধ হয় সবচেয়ে বেশি কষ্ট পেয়েছিলাম।’ প্রিন্সের মতো আরও এমন অনেক ভক্ত আছেন যারা একবার সিলেটে গেলে তাদের প্রিয় নায়কের কবরে যান, কবর জিয়ারত করেন। আবার প্রিয় নায়কের নানার বাড়িও ঘুরে যান।

বাংলাদেশের সিনেমার ইতিহাস সৃষ্টিকারী নায়ক সালমান শাহ। দেখতে দেখতে তার মৃত্যুর ২৫ বছর পেরিয়ে গেছে। মৃত্যুর ২৫ বছর পরও তিনি এখনো আকাশচুম্বী জনপ্রিয়। এখনো টিভি পর্দায় তার সিনেমা প্রচার হলে দর্শক আগ্রহ নিয়ে দেখেন। এখনো তার অভিনীত সিনেমার গান টিভিতে প্রচার হলে তা দর্শক এড়িয়ে যেতে পারেন না।

এমনও দেখা গেছে পাশাপাশি দুটি চ্যানেলের একটিতে নতুন কোনো সিনেমা প্রচার হচ্ছে; আবার অন্যটিতে সালমান শাহর সিনেমা প্রচার হচ্ছে। এতে দর্শক যেন সালমান শাহর সিনেমা দেখার প্রতিই বেশি আগ্রহ প্রকাশ করেন। আবার শুধুমাত্র সালমান শাহর সিনেমার ক্ষেত্রেই এমন দেখা গেছে যে, সিনেমা প্রচারের সময় নারী-পুরুষ দর্শক শুধু সালমান শাহর পারফরম্যান্সই বেশি উপভোগ করেন। তার সঙ্গে কে আছেন, তা কখনোই জরুরি কোনো বিষয় নয় দর্শকের কাছে।

মৃত্যুর এত বছর পরও সালমান শুধুমাত্র তার দুর্দান্ত অভিনয় এবং ফ্যাশনে ভিন্নমাত্রা দিয়েই আজও দর্শকের হূদয়ে গেঁথে আছেন। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন নায়িকা ববিতার সঙ্গে সালমান শাহ তিনটি সিনেমায় অভিনয় করার সুযোগ পেয়েছিলেন। সিনেমাগুলো হচ্ছে বাদল খন্দকারের ‘স্বপ্নের পৃথিবী’, দীলিপ সোমের ‘মহামিলন’, শিবলী সাদিকের ‘মায়ের অধিকার’ ও জাকির হোসেন রাজুর ‘জীবন সংসার’।

দুটি সিনেমাতে সালমানের মায়ের ভূমিকায় এবং দুটিতে সালমানের ভাবির ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন ববিতা। দীলিপ সোমের ‘মহামিলন’ সিনেমার শুটিংয়ের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ববিতা বলেন : ‘কক্সবাজারে ওই সিনেমার শুটিং হয়েছিল। একটি দৃশ্য ধারণ করা হচ্ছিল পাহাড়ের ওপর। আমার হাতে পিস্তল ছিল। দৃশ্যটিতে শুটিংয়ে অংশ নিয়েছিলাম আমি, রাজীব ভাই, শারমিন, সালমান শাহ, শাবনূর।

সেই দৃশ্যটির ধারণের নানান সময়ে আমি শুটিংয়ে আনা অন্য একটি চেয়ারে বসি। কারণ হোটেল থেকে আমার চেয়ারটি নিতে মনে ছিল না। সালমান বিষয়টি খেয়াল করে এবং শুটিংয়ে তার নেয়া চেয়ারটি আমাকে গিফট করে। আমি না করার পরও সালমান তার নিজের ব্যবহূত চেয়ারটি তখনই আমাকে গিফট করে।

সেই চেয়ারটি দীর্ঘদিন আমার কাছে সংরক্ষিত ছিল। তারপর আবার যখন মোবাইল প্রথম বাজারে এলো, সে সময় সাইজে মোবাইল অনেক বড় ছিল। তো আমি সেই মোবাইল ব্যবহার করতে পারতাম না। সালমানই আমাকে একটি চিরকুটে মোবাইল ব্যবহার করার পদ্ধতি প্রথম শিখিয়ে দিয়েছিল। যে কারণে পরবর্তীতে মোবাইল ব্যবহার করা আমার কাছে বেশ সহজ হয়ে গিয়েছিল। সালমানের নিজের হাতের লেখা সেই চিরকুটটি এখনো আমার কাছে বেশ যত্নে রাখা আছে।

সেই চিরকুটের মাঝেই মাঝেমধ্যে আমাদের হারিয়ে যাওয়া সালমানকে খুঁজে বেড়াই। সালমান একটি কথা আমাকে প্রায়ই বলত যে, আপনি আমার আপন মা না হলেও আপনি আমার সুইট মা। মা ছাড়া সে আমাকে অন্য কিছুই আর ডাকত না। সত্যিই এতটা বছর পরও তাকে নিয়ে কথা বলতে গেলে আমি ভীষণ আবেগাপ্লুত হয়ে যাই।’

যদিওবা সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ সিনেমায় অভিনয় করেই আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা পান সালমান শাহ; কিন্তু তার আগেই তিনি নাটকে অভিনয় করেন।

অভিনেত্রী সুইটি সালমান শাহর সঙ্গে একটি নাটকে অভিনয়ের কথা স্মৃতিচারণ করে  বলেন, ‘আমার প্রথম নাটক স্বপ্নের পৃথিবী’ সালমান শাহর সঙ্গে। অসম্ভব মেধাবী একজন শিল্পী ছিলেন সালমান শাহ। অসাধারণ মনের মানুষ এবং চমৎকার ছিল তার ব্যবহার। তার আত্মর শান্তি কামনা করছি।’ ‘স্বপ্নের পৃথিবী’ নাটকে সালমান শাহ অভিনয় করেছিলেন শুভ চরিত্রে। সে সময় ‘তোমার প্রেমে আমি অন্ধ, বুঝি না ভালো মন্দ, তোমাকেই ভালোবাসি, তুমি আমার হাসি আনন্দ’ গানটি বেশ জনপ্রিয়তা পায়।

সুইটি বলেন, ‘সত্যি বলতে সালমানের চলে যাওয়ায় যে শূন্যতা তৈরি হয়েছিল, সেই শূন্যতা আজও পূরণ হয়নি, পূরণ হবেও না। কিছু কিছু শূন্যতায় কোনোভাবেই পূর্ণতা আসে না।’

Link copied!