ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad
ঢাকার শতাধিক স্পটে চলছে রমরমা বাণিজ্য

মাদকেই তারুণ্যের সর্বনাশ

খলিলুর রহমান

খলিলুর রহমান

অক্টোবর ২০, ২০২২, ১২:৪২ এএম

মাদকেই তারুণ্যের সর্বনাশ

রাজধানীতে নিয়মিত মাদকবিরোধী অভিযান চললেও শতাধিক স্পটে চলছে রমরমা মাদকবাণিজ্য। একইসঙ্গে দিন-দুপুরে চলছে মাদক সেবনও। তবে মাদক কারবারিদের নতুন কৌশলের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

বিশেজ্ঞরা বলছেন, মাদকের গ্রাস থেকে তরুণ প্রজন্মকে বাঁচাতে হলে শুধু পুলিশি তৎপরতা নয়, প্রয়োজন পারিবারিক ও নৈতিক শিক্ষাও।

অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আড্ডা জমায়। এর ফাঁকে জমে উঠে মাদকের আসর। সন্ধ্যার পর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত এভাবে নিরাপদেই মাদক সেবন করে থাকেন উঠতি বয়সিরা। তবে অভিভাবকদের অবহেলা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি না থাকায় এমন অবস্থা বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

রাজধানীর ফার্মগেটের গ্রিন রোডের এইচআর হোমস ও এশিয়া প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটির সামনে সন্ধ্যার পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের আড্ডা জমে। এ এলাকায় মধ্যরাত পর্যন্ত চলে ওই আড্ডা। এর মাঝেই চলে মাদক সেবন ও মাদক কেনাবেচাও।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফার্মগেট এলাকায় অনেক ছাত্রছাত্রীর জন্য আবাসিক হোস্টেল রয়েছে। আর সেখানেই রাজধানীর নামিদামি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বসবাস করেন। তবে ওইসব হোস্টেলে থাকা বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই এইচআর হোমস ও এশিয়া ইউনিভার্সিটির সামনে আড্ডা দেন।

এছাড়া কারওরান বাজার, পশ্চিম তেজতুরী বাজার, রাজাবাজার, ধানমন্ডি এলাকার শিক্ষার্থীরা অভিভাবকদের চোখ ফাঁকি দিয়ে সেখানে গিয়ে আড্ডা দেন। শুধু ফার্মগেট এলাকাই নয়, একইভাবে লালমাটিয়া খেলার মাঠ, মোহাম্মদপুর, মিরপুর লাভ রোড, উত্তরা, পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় মাদকের আসর বসে। বিশেষ করে দয়াগঞ্জ রেললাইনের আশপাশ এলাকা, পল্লবী দুয়ারীপাড়া, ভাষানটেকের সাগরিকা ও ১ নম্বর বস্তি, ধামালকোট মাঠসংলগ্ন বস্তি, মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্প, সবুজবাগের ওহাব কলোনি, কমলাপুর রেলস্টেশনের আশপাশ এলাকা, কারওয়ান বাজার, খিলক্ষেত বাজার সংলগ্ন এলাকা, বিমানবন্দর রেলস্টেশন এলাকা, দিয়াবাড়িসহ রাজাধানীর প্রায় ১০০টি স্পটে রমরমা মাদক কারবার চালিয়ে যাচ্ছে একাধিক চক্র। ওইসব এলাকা থেকে মাদক ক্রয় করে বাসাবাড়ি ও গোপন আস্তানায় নিয়ে যায় উঠতি বয়সি তরুণ-তরুণীরা। মাদক কারবারিরা স্থানীয় পুলিশকে মাসোহারা দিয়ে নিরাপদেই তাদের কারবার পরিচালনা করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, রাজধানীর ওইসব মাদকের আস্তানা থেকে বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে হোম ডেলিভারির মাধ্যমে মাদক পৌঁছে দেয়া হয়। এর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশের এলাকা, তেজগাঁও, গুলশান, নিকেতন, মিরপুর, পুরান ঢাকা ও উত্তরা উল্লেখযোগ্য। অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, রাজধানীর ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, পুরান ঢাকা, ভাটারা, উত্তরা, গুলশান, বানানী, বারিধারা ও মিরপুর এলাকায় বেশি মাদক বেচাকেনা হচ্ছে।

ওইসব এলাকায় তরুণ-তরুণীরা আড্ডার আড়ালে মাদক সেবন ও বিক্রিতে সময় পার করছেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ অভিভাবকের চোখ ফাঁকি দিয়ে; আবার কেউ পারিবারিক ও মানসিক বিষণ্নতার কারণে বিপথগামী হয়ে পড়ছেন। বিভিন্ন মাদকের স্পট ঘুরে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সাথে কথা বলে জানা যায়, রাজধানীতে মাদক কারবারিদের একটি তালিকা রয়েছে।

সে অনুযায়ী মাদক কারবারিদের গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু তারা জামিনে মুক্ত হয়ে ফের একই কারবারে জড়িয়ে পড়েন। পুলিশ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তার সাথে কথা বলে জানা গেছে, ধারাবাহিক অভিযানে মাদক কারবারিরা গা-ঢাকা দিয়েছে। তবে তাদের নতুন কৌশলের বিরুদ্ধে মাঠে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

মাদুকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা মেট্রো কার্যালয়ের (উত্তর) সহকারী পরিচালক মো. মেহেদী হাসান আমার সংবাদকে বলেন, রাজধানীতে মাদক কারবারের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। মাদক সেবন বা কারবারের সাথে জড়িত নারী কিংবা পুরুষ যে কেউ হোক না কেন, তাকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, মাদক কারবারিদের নতুন কৌশল নিয়ন্ত্রণে সমুদ্র, বিমান, স্থলবন্দর এলাকায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পাশাপাশি পুলিশ, র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে। তবে কৌশল পাল্টে যারা মাদক কারবার চালিয়ে যাচ্ছে, তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে বলেও জানান মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ওই কর্মকর্তা।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. ফারুক হোসেন আমার সংবাদকে বলেন, মাদক কারবারিদের তালিকা আমাদের কাছে রয়েছে। তালিকা অনুযায়ী আমাদের ভিন্ন ইউনিট নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে। প্রতিদিনই মাদক কারবারি ও সেবনকারীকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন আমার সংবাদকে বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে অনেক আসামিকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। বাকিদেরও গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. নেহাল করিম আমার সংবাদকে বলেন, মাদক কারবারিদের গ্রেপ্তারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছেন। তারপরও অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। অপরাধীরা নতুন নতুন কৌশলে মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সঠিকভাবে আইনের প্রয়োগ করলে এ ধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান আমার সংবাদকে বলেন, মাদক কারবারি ও সেবনকারীদের গ্রেপ্তারের পাশাপাশি মাদক আসার পথে নজরদারি বাড়াতে হবে। সীমান্ত দিয়ে মাদক আসা বন্ধ হলে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এছাড়াও সামাজিক ও পারিবারিকভাবে মাদক সেবনকারীদের সচেতন করতে হবে বলেও জানান তিনি।
 

Link copied!