ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

বিদেশি হস্তক্ষেপ অশুভ লক্ষণ

আবদুর রহিম

নভেম্বর ১৭, ২০২২, ০২:০৬ এএম

বিদেশি হস্তক্ষেপ অশুভ লক্ষণ

অশুভ লক্ষণ! জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিদেশি হস্তক্ষেপে। বাংলাদেশের ভোট নিয়ে, মানবাধিকার বিষয় নিয়ে এবার প্রকাশ্যে কথা বলছে প্রভাবশালী দেশগুলো। এটি দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ের জন্য অশুভ ইঙ্গিত বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, প্রত্যেকটি দেশেই কিছু গোপনীয়তার বিষয় থাকে তা কূটনৈতিক মহলে যাওয়া উচিত নয়। এটি তখনই বিস্ফোরণ ঘটে যখন রাজনীতিতে বিভক্তি দেখা দেয়। তখন তারা দেশের অভ্যন্তরীণ গোপন সম্পদ অন্য দেশের কাছে পৌঁছে দেয়। আর বিদেশিরা তখনই কথা বলে যখন তাদের হাতে কোনো শক্ত ডকুমেন্ট থাকে।

সমপ্রতি জাপান, কানাডা , যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘ বাংলাদেশের ভোট ও মানবাধিকার বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। আগামী দ্বাদশ নির্বাচন তারা সব দলের অংশগ্রহণে দেখতে চেয়েছে। স্বচ্ছ নির্বাচনের দাবি তুলেছে। আগাম এমন বক্তব্যকে দেশের অস্তিত্বের জন্য হুমকি মনে করা হচ্ছে। বিদেশিরা কোনোভাবেই এমন বক্তব্য দিতে পারে না। তাদের নিজস্ব একটি সীমানা রয়েছে তার বাইরে না যাওয়াই ভালো। দেশীয় বিষয়গুলো দেশের নাগরিকরা ঠিক করবে। যেমন মুক্তিযুদ্ধের সময় এ দেশের নাগরিকরা ভাগ্য ঠিক করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবার বাংলাদেশের রাজনীতিতে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হাওয়া বইতে শুরু করেছে দেড় বছর আগ থেকে। মাঠের অবস্থানের সাথে বিএনপিসহ সরকারবিরোধী দলগুলো কূটনৈতিক তৎপরতাও বৃদ্ধি করেছে। মিশন নিয়ে দেশ-বিদেশে কাজ করছেন সাত-আটটি সরকারবিরোধী দলের কয়েক ডজন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা। গত সোমবার ঢাকায় নিযুক্ত কানাডিয়ান হাইকমিশনার লিলি নিকোলাসের সাথে প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গত মঙ্গলবার নরওয়ের রাষ্ট্রদূত এসপেন রিকটার ভেন্ডসেন এবং সুইডিশ রাষ্ট্রদূত অ্যালেক্স বার্গ ফন লিন্ডের সাথেও বিএনপির বৈঠক হয়।

এছাড়া গত ১৮ সেপ্টেম্বর জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি এবং ৭ সেপ্টেম্বর যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার রবার্ট ডিকসনের সাথে বৈঠক করে বিএনপি। এর আগে গত ১৩ জুলাই ইইউ রাষ্ট্রদূত এবং ১২ জুলাই জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক বিএনপি মহাসচিবের সাথে সাক্ষাৎ করেন। আরো কয়েকটি রাজনৈটিক দলের নেতাও রুটিন করে এখন দূতবাসের দরবারগুলোতে নিয়মিত সাক্ষাৎ করছেন। বৈঠকগুলোর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে মাঠে। 

গেলো সপ্তাহের সোমবার ঢাকাস্থ জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বলেছেন, নির্বাচনের আগের রাতে ব্যালট বাক্স ভর্তির দৃষ্টান্ত পৃথিবীর আর কোথাও শুনিনি। আমরা  বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও  অংশগ্রহণমূলক হবে এবং  বিরোধীরাও এতে অংশ নেবে বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমি শুনেছি, (গত নির্বাচনে) পুলিশের কর্মকর্তারা আগের রাতে ব্যালট বাক্স ভর্তি করেছেন। আমি অন্য কোনো দেশে এমন দৃষ্টান্তের কথা শুনিনি। আমি আশা করব, এবার তেমন সুযোগ থাকবে না বা এমন ঘটনা ঘটবে না। বাংলাদেশে এখন অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া দরকার। এটিই তার দৃঢ় প্রত্যাশা থাকবে।

এদিকে জীবনের নিরাপত্তা, আইনের শাসন চায় কানাডা। গত রোববার দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে কানাডার হাইকমিশনার লিলি নিকোলাসের সাথে রুদ্ধাদ্বার বৈঠক করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, কানাডা মানবাধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার, জীবনের নিরাপত্তা, আইনের শাসনকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়। কানাডাসহ কয়েকটা দেশ এগুলোতে দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে। বাংলাদেশে মানবাধিকার ইস্যু লঙ্ঘন হচ্ছে। বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট স্বাভাবিকভাবে আমাদের যে মানবাধিকার পরিস্থিতি, আগামী নির্বাচন, আইনের শাসন, জীবনের নিরাপত্তা ইত্যাদি সব বিষয়ে আলাপ হয়েছে।

এ ছাড়া বাংলাদেশে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে এমনটাই প্রত্যাশা করছে যুক্তরাষ্ট্র। বিরোধী রাজনৈতিক দলসহ সবার জন্য কোনো রকম ভয়ভীতি-দমন ছাড়া শান্তিপূর্ণ সমাবেশের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য বাংলাদেশে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র নেড প্রাইস। বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস জানিয়েছেন, সমপ্রতি রাজনৈতিক ইস্যুকে কেন্দ্র করে কিছু মানুষের আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এটি উদ্বেগের। এখানে যেন কোনো রাজনৈতিক সংঘর্ষ না ঘটে সে জন্য আমরা সবার প্রতি আহ্বান জানাই। 

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া-বিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আফরিন আক্তার জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে  অবাধ ও স্বচ্ছ এবং আন্তর্জাতিক মানের নির্বাচন চাওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ তিনটি রাজনৈতিক দল ও সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে এ বার্তাই জোরালোভাবে দেয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন আমার সংবাদকে বলেছেন, ‘নির্বাচন এলেই অনেক সময় আন্তর্জাতিক মাধ্যম থেকে কিছু কথা আসে। সেটি অতীতেও হয়েছে, এবারও হচ্ছে। কিন্তু কোনোভাবেই বিদেশিরা আমাদের দেশীয় বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়। আর তারা হস্তক্ষেপ করলেও এটি সফল হয়নি। বাংলাদেশের কিছু নিজস্ব বিষয়ে রয়েছে সেটি দেশের জনগণই  ঠিক করবে। আমরা দেখেছি ভারত-ফিলিপাইনসহ অনেক দেশেই অনেক কিছু নিয়মের ব্যত্যয় ঘটে। কিন্তু সেখানে বিদেশিরা তেমন হস্তক্ষেপ করতে পারে না। বাংলাদেশের জনগণ কি চায় তাই দেশের নাগরিকরা ঠিক করবে। যেমন অতীতেও আমাদের বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধার বিষয়টি নিয়ে অনেকগুলো দেশ বিরোধিতা করেছে আবার কেউ পক্ষেও ছিল। কিন্তু বাংলাদেশের ভালো-মন্দ বাংলাদেশকে ঠিক করতে হয়েছে। জীবন রক্ত ইজ্জত দিয়ে। এখন বাংলাদেশের বিষয় নিয়ে  এ রকম তৎপরতা কোনোভাবেই করা কূটনৈতিকদের  উচিত নয়। তারা যত কম কথা বলবে ততটি ভালো হবে।  অনেকেই বাংলাদেশের মানবাধিকার নির্বাচন বিষয়ে প্রশ্ন তুলছেন কিন্তু পৃথিবীর অনেক দেশেই এ বিষয়গুলোর ব্যর্থ ঘটে সেটির সমাধান নিজ নিজ দেশে সমাধান করেন। বাংলাদেশেও তাই হবে।’

নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুর রশীদ আমার সংবাদকে বলেন, ‘কূটনৈতিক বিষয়ে প্রত্যেকটি দেশে কিছু অভ্যন্তরীণ বিষয় রয়েছে। সেগুলোতে অন্য দেশের হস্তক্ষেপ করা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আর আমরা সবসময় দেখে আসছি, এ বিষয়গুলো তখই ঘটে যখন রাজনৈতিক বিভক্তি দেখা দেয়। তখন কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ কিছু গোপন বিষয় বিদেশিদের জানিয়ে দেন। এটি খুবই অশুভ লক্ষণ। তারা ক্ষমতাধর রাজনৈতিক দলকে চাপ সৃষ্টি করার জন্য সব ধরনের সহযোগিতা করে থাকে।  সমপ্রতি আমরা দেখেছি বাংলাদেশের নির্বাচন মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে বিদেশিরা কথা বলছেন। এর মানে হচ্ছে— তাদের কাছে এসব অনিয়মের কিছু দলিল হাতে এসে পৌঁছেছে। তাই তারা জোর দিয়ে কথা বলছেন। এটি কোনোভাবেই ভালো বিষয় নয়।’

Link copied!