ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

ধুঁকছে কারিগরি শিক্ষা

মো. মাসুম বিল্লাহ

নভেম্বর ২০, ২০২২, ০১:৫২ এএম

ধুঁকছে কারিগরি শিক্ষা

দেশে ধুঁকে ধুঁকে চলছে কারিগরি শিক্ষা। অথচ কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা দেশে কর্মসংস্থানের পথ সুগমের সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু শিক্ষক সংকট, পাঠ্যসূচি হালনাগাদ না হওয়া এবং কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক না থাকায় পিছিয়ে পড়ছে দেশের কারিগরি শিক্ষা কার্যক্রম। বর্তমানে দেশের প্রায় অর্ধশত পলিটেকনিক এবং তিনটি মনোটেকনিক ইনস্টিটিউট শিক্ষক সংকটে ভুগছে। আর পাঠ্যসূচিও দীর্ঘদিন হালনাগাদ করা হয়নি।

বরং দিন দিন বাড়ছে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে দুর্নীতি, অনিয়ম আর অদক্ষতা। এভাবেই ধুঁকে ধুঁকে চলছে কারিগরি শিক্ষা। বর্তমানে কারিগরি শিক্ষায় মাত্র ১৬ শতাংশ শিক্ষার্থী রয়েছে। তার আগে ২০২০ সালের মধ্যে ২০ শতাংশ এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু আন্তর্জাতিক কারিগরি শিক্ষার সংজ্ঞা ও সরকারি তথ্য বিশ্নেষণ করে দেখা যায় বাস্তবে কারিগরিতে শিক্ষার্থীর হার মাত্র ৮ দশমিক ৪৪ শতাংশ। কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বর্তমানে দেশে ছয় হাজার ৮৬৫টি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। ওসব প্রতিষ্ঠানে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১০ লাখ ৬৭ হাজার ৪৮৪ জন। তবে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে তিন থেকে ছয় মাস মেয়াদি শর্টকোর্সের দুই হাজার ৬০০ ট্রেনিং সেন্টারকেও মূল কারিগরি শিক্ষার সঙ্গে যোগ করেছে। ওসব ট্রেনিংয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা দুই লাখ ৮০ হাজার ৩০১ জন।

ওই হিসাবে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৩ লাখ ৪৭ হাজার ৭৮৫ জন। কারিগরিতে শুধু নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার সুযোগ রয়েছে। ওসব শ্রেণির শিক্ষার্থীর সঙ্গে তুলনা করে কারিগরিতে ১৬ শতাংশ শিক্ষার্থী দেখানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক সংজ্ঞানুযায়ী সাধারণ শিক্ষার মতোই কারিগরিতেও অ্যাকাডেমিক ও সার্টিফিকেট কোর্স রয়েছে।

তবে সার্টিফিকেট কোর্স স্বল্পমেয়াদে হতে পারে। আবার তার ব্যাপ্তি সর্বোচ্চ ৩৬০ ঘণ্টাও হতে পারে। সার্টিফিকেট কোর্স কোনোভাবেই মূল কারিগরি শিক্ষার মধ্যে পড়ে না। তাছাড়া কারিগরি শিক্ষার আওতায় দুই হাজার ৬১৭ বিজনেস ম্যানেজমেন্ট স্কুল ও কলেজ রয়েছে, যা কোনোভাবেই কারিগরি শিক্ষার মধ্যে পড়ার কথা নয়। ফলে ওসব প্রতিষ্ঠানের তিন লাখ ৩৫ হাজার ২২৫ শিক্ষার্থী বাদ দিলে কারিগরিতে ২০১৮ সালে শিক্ষার্থীর সংখ্যা দাঁড়ায় সাত লাখ ৩২ হাজার ২৫৯ জন।

আর ওই বছরে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী ছিল ৮৬ লাখ ৬৬ হাজার ৩৮৯ জন। ওই হিসাবে কারিগরিতে শিক্ষার্থীর হার দাঁড়ায় ৮ দশমিক ৪৪ শতাংশ। সূত্র জানায়, দিন দিন কারিগরি শিক্ষায় সরকারি মেয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমছে। অথচ সাধারণ শিক্ষার প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে এখন ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের সংখ্যাই বেশি।

আর উচ্চ মাধ্যমিকেও ছেলেমেয়ে সমান হওয়ার পথে। কিন্তু ওসব নিয়ে প্রতিবন্ধকতা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের কার্যত তেমন কোনো উদ্যোগও নেই। বরং শিক্ষক সংকটে ধুঁকছে বর্তমানে পুরো কারিগরি শিক্ষাব্যবস্থা। সারা দেশে রয়েছে ৪৭টি সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও তিনটি মনোটেকনিক ইনস্টিটিউটে তিন ভাগের এক ভাগ শিক্ষক দিয়ে চলছে। ওসব প্রতিষ্ঠানে অনেক বিষয়েরই শিক্ষক নেই। শিক্ষক ভাড়া করে কোনো কোনো ইনস্টিটিউটে চালানো হচ্ছে ক্লাস।

সূত্র আরও জানায়, টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজগুলোও শিক্ষক সংকটে ভুগছে। আগের পুরোনো ৬৬ টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজেই শিক্ষক সংকট ছিল। আর কোনো শিক্ষক নিয়োগ ছাড়াই নতুন আরও ৭০ টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ চালু করা হয়েছে। ফলে নতুন প্রতিষ্ঠানগুলো অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম চালাতে হিমশিম খাচ্ছে।

তাছাড়া কারিগরি শিক্ষায় অবকাঠামোগত সমস্যাও রয়েছে। আগে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোতে প্রতিটি টেকনোলজিতে ৫০টি করে আসন ছিল। কিন্তু কোনো রকম অবকাঠামোগত সুবিধা না বাড়িয়ে প্রতিটি টেকনোলজিতে একাধিক গ্রুপ বাড়ানো হয়। তাতে ইনস্টিটিউটগুলোতে রাতারাতি ক্লাসরুমের সংকট তৈরি হয়।

এদিকে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে দুর্নীতি ও অদক্ষতায় ডুবতে বসেছে। কারিগরি শিক্ষা বোর্ড আইন সংশোধন করে বোর্ডের একক ক্ষমতা খর্ব করে মন্ত্রণালয়ের ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। সেখানে বিধি লঙ্ঘন করে কর্মকর্তা নিয়োগ করায় দক্ষ ও অভিজ্ঞ লোকের অভাব প্রকট। আর বর্তমানে বোর্ডের প্রধান হিসাবে একজন নন-টেকনিক্যাল একজনকে চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আর বোর্ড প্রশাসনের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ সচিব পদে বেশ কয়েক বছর ধরে একজন উপসচিবকে প্রেষণে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তিনিও নন-টেকনিক্যাল। অথচ বোর্ডে জনবল নিয়োগের জন্য নিজম্ব একটি নিয়োগ বিধি রয়েছে। কিন্তু বোর্ডের নিয়োগ বিধি লঙ্ঘন করে টেকনিক্যাল পদে নন-টেকনিক্যাল ব্যক্তিকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

অন্যদিকে আট বছর ধরে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক নেই। ২০১৫ সালের জুন থেকে এক অতিরিক্ত সচিবকে ‘অতিরিক্ত’ দায়িত্ব দিয়ে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের চালানো হচ্ছে। এ পর্যন্ত তিন অতিরিক্ত সচিব দায়িত্ব পালন করেছে। সর্বশেষ গত ২৫ জানুয়ারি থেকে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিবকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী কাজী জাকির হোসেন জানান, কারিগরি শিক্ষার মান উন্নয়নে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। সবার আগে মানসম্মত ও প্রশিক্ষিত শিক্ষক দরকার। তারপর আধুনিক প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি। একই সঙ্গে যারা সহযোগী কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে তাদেরও প্রশিক্ষণ দরকার। শিক্ষক সংকট দূর করতে হবে। এটিই হবে বেকারত্ব দূর করার মূল হাতিয়ার।
 

Link copied!