ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

নিরাপত্তা দুর্বলতায় জঙ্গিরা কয়েক সেকেন্ডে উধাও!

আবদুর রহিম

নভেম্বর ২১, ২০২২, ০১:৪৫ এএম

নিরাপত্তা দুর্বলতায় জঙ্গিরা কয়েক সেকেন্ডে উধাও!

রাজধানীর রায়সাহেব বাজার এলাকা। সবসময় ব্যস্ত জ্যামের সড়ক। থাকে মানুষের ভিড়। গতকাল রোববার দুপুর ১২টার দিকে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রধান ফটকের সামনে জঙ্গিদের ছিনিয়ে নিতে আসা সহযোগীরা পুলিশের চোখে স্প্রে ছিটিয়ে, কিল-ঘুষি মেরে তাদের মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই সদস্য জঙ্গিকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।

তারা জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সদস্য। স্প্রের ঝাঁজে পুলিশ চোখ কচলাতেই কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে তারা উধাও হয়ে যায়। জ্যামের শহর মানুষের ভিড়, চারদিকে ট্রাফিক ও পুলিশের চেকপোস্টের মধ্যে কয়েক সেকেন্ডে তাদের অদৃশ্য হওয়ার ঘটনায় বিস্মৃত আইনশৃঙ্খলাবাহিনী ও দেশের সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।

তারা বলছেন, স্পর্শকাতর মামলার ফাঁসির আসামি— তা ছাড়া জঙ্গি, এরপর তাদের হাতে-পায়ে  ডাণ্ডাবেডি ও হাতকড়া কেন পরানো হয়নি। তাদের ছিনিয়ে নেয়ার বিষয়টি রাষ্ট্রের জন্য বড়ই উদ্বেগের বিষয় এবং আইনশৃঙ্খলা ও গোয়েন্দা সংস্থার দুর্বলতা নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলছেন।

হ্যান্ডকাফ-ডান্ডাবেড়ি পরানো ছিল না, এটি দায়িত্বহীনতার পরিচয়- শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন আমার সংবাদকে বলেন, ‘আজকে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামিকে যেভাবে আদালতে নেয়া হলো বিষয়টি পুরোই প্রশ্নবোধক। কারণ একজন চোর-ডাকাতকেও আদালতে উঠানোর সময়  তার কোমরে দড়ি হাতে হ্যান্ডকাফ পরানো থাকে। কিন্তু বিস্ময়কর হলো— বাংলাদেশের খুবই স্পর্শকাতর একটি মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গিকে আদালতে উঠানো হলো তাদের শুধু কোমরে ধরে ছিল। হাতে হ্যান্ডকাফ কিংবা ডাণ্ডাবেডি পরানো ছিল না— এটি সম্পূর্ণ দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছে। তা ছাড়া রায়সাহেব বাজারের ওই এলাকাটিতে সবসময় জ্যাম থাকে, এই অল্প সময়ের মধ্যে জঙ্গিরা কিভাবে উধাও হয়ে গেল এটিও ভাবনার বিষয়। তাই এর সাথে যারা জড়িত ছিল তাদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে।

ফাসিঁর আসামিকে আদালতে নেয়ার প্রয়োজন নেই- ইসফাক এলাহী

নিরাপত্তা বিশ্লেষক ইসফাক এলাহী আমার সংবাদকে বলেন, পুরো বিষয়টি হাস্যকর, যতটুকু জানতে পেরেছি, জঙ্গিরা ছিনতাইয়ের সময় মরিচের গুঁড়া ও স্প্রে ব্যবহার করেছে। এটি খুবই স্বাভাবিক বিষয়।

এই স্বল্প কিছু ব্যবহার করে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে ফিল্মি স্টাইলে ছিনিয়ে নেয়া খুবই উদ্বেগের। তা ছাড়া ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত কোনো আসামিকে হাজিরার জন্য আদালতে নেয়া প্রয়োজন হয় না। এটিও সম্পূর্ণ নিয়মবহির্ভূত কাজ হয়েছে। তাই বলব, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে হাতকড়া কোমরে দড়ি ডাণ্ডাবেডি পরানো থাকে; কিন্তু ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গির শুধু কোমরে দড়ি ছিল কেন, তাদের ডাণ্ডাবেডি হ্যান্ডকাফ পরানো হয়নি— এর জবাব দেয়া প্রয়োজন। এই ঘটনার মাধ্যমে পুরো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থাসহ সবাই প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে— রাষ্ট্রের ভাবমর্যাদা নষ্ট হয়েছে । আর একজন জঙ্গিকে যেভাবে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা দিয়ে আদালতে নেয়া প্রয়োজন এর কিছুই করা হয়নি। এতে প্রমাণিত হয়েছে, জঙ্গিরা আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চেয়েও বেশি দক্ষ।’

 ‘এটি বিস্ময়কর-আতঙ্কের, হিসাব মেলাতে পারছি না’ - লেখক দীপনের বাবা 

জানতে চাইলে দীপনের বাবা লেখক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক আমার সংবাদকে  বলেন, ‘এটি বিস্ময়কর, বিষয়টি আতঙ্কের। আমি হিসাব মেলাতে পারছি না যে, এ ধরনের ঘটনা কীভাবে সম্ভব। তাদের গ্রেপ্তারে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে বলে খবর দেখলাম। দেখা যাক কী হয়।’

জানা যায়, ঢাকার সিজেএম আদালতের অষ্টম তলায় সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালে এ দুই জঙ্গির মামলার শুনানির দিন গতকাল ধার্য ছিল। ছিনতাই হওয়া মইনুল হাসান শামীম ওরফে সিফাত সামির ও মো. আবু ছিদ্দিক সোহেল মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ছিলেন। মইনুল হাসান শামীম ওরফে সিফাত সামিরের বাড়ি সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার মাধবপুর গ্রামে। মো. আবু ছিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিবের বাড়ি লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার ভেটেশ্বর গ্রামে। উল্লেখ্য, গত  ২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর আজিজ সুপার মার্কেটে খুন করা হয় জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশক দীপনকে। গত ১০ ফেব্রুয়ারি মামলার রায়ে আসামিদের সবার মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন আদালত।

ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ‘একটি মামলায় শুনানি শেষে আদালত থেকে হাজতখানায় নেয়ার পথে সহযোগীরা হাজতখানা পুলিশের চোখে স্প্রে ছিটিয়ে, কিল-ঘুষি মেরে মইনুল হাসান শামীম ও মো. আবু ছিদ্দিক সোহেলকে ছিনিয়ে নেন। এরপর তারা দুটি মোটরসাইকেলে করে রায়সাহেব বাজার মোড়ের দিকে পালিয়ে যান। ছিনিয়ে নেয়া জঙ্গিদের ধরতে অভিযান চলবে।’

ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি গোলাম সারোয়ার খান বলেন, ‘আদালতে শুনানি শেষে এই দুজনকে হাজতখানায় নেয়ার পথে তাদের ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) উপকমিশনার ফারুক বলেন, দুই আসামি আদালতে হাজিরা দেয়। আদালত থেকে বের হওয়ায় সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের চোখে জঙ্গিরা এক ধরনের স্প্রে ছিটায়। পুলিশ সদস্যরা চোখ কচলে যখন তাকান তখন দেখতে পান, আসামিরা মোটরসাইকেলে পালিয়ে যাচ্ছে।

ধরিয়ে দিলে ২০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা : ঢাকার নিম্ন আদালতে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়া দুই জঙ্গিকে ধরিয়ে দিতে ১০ লাখ করে ২০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে সরকার। পুলিশ সদর দপ্তর এ তথ্য জানিয়েছে। এছাড়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, দুই জঙ্গিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ১০ লাখ টাকা করে মোট ২০ লাখ পুরস্কার দেয়া হবে।

তিনি বলেন, ‘আমি ও আইনমন্ত্রী একসঙ্গে বসে বলে দিয়েছিলাম, মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামিদের আদালতে আনতে হবে না; যেহেতু তাদের ফাঁসির আদেশ হয়েই গেছে। এই আদেশ কেন মানা হলো না, তা খতিয়ে দেখা হবে।’

রাজধানীতে রেড অ্যালার্ট জারি : ঢাকার সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনাল থেকে ছিনিয়ে নেয়া দুই জঙ্গিকে গ্রেপ্তারে রাজধানীতে রেড অ্যালার্ট জারি করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ-ডিএমপি। ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) ফারুক হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

Link copied!