ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

পাঁচ মাসে বিক্রি ছয় বিলিয়ন ডলার

রেদওয়ানুল হক

নভেম্বর ২৬, ২০২২, ১২:৩১ এএম

পাঁচ মাসে বিক্রি ছয় বিলিয়ন ডলার

চলতি অর্থবছরের এ পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে পৌনে ৬০০ কোটি ডলার (ছয় বিলিয়ন) বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। শুধু চলতি মাসের প্রথম ২৩ দিনেই ব্যাংকগুলোকে এক হাজার ১৩৮ মিলিয়ন বা ১১৩ কোটি ডলার সহায়তা দেয়া হয়েছে।

এ ধারা অব্যাহত থাকায় নভেম্বর মাস শেষে মোট বিক্রির পরিমাণ ৬০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। ফলে একদিকে যেমন রিজার্ভে ঘাটতি তৈরি হচ্ছে, অন্যদিকে বিঘ্নিত হচ্ছে ব্যাংকের তারল্য প্রবাহ ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, ডলার বিক্রির মাধ্যমে চলতি অর্থবছরে প্রতি ডলার ৯৬ টাকা দরে বাজার থেকে ৫৭ হাজার কোটি টাকার মতো তুলে নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত অর্থবছরে ৭৬২ কোটি ১৭ লাখ ডলার বিক্রির ফলে উঠে আসে ৬৮ হাজার কোটি টাকার বেশি। 

একই সাথে আমানত প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি ঋণে তারল্য সংকটি তৈরি হচ্ছে। ফলে ব্যাংকগুলোকে ধার করে চলতে হচ্ছে। সংকটের প্রভাব গ্রাহক পর্যায়ে পৌঁছাতেই ছড়িয়ে পড়ছে গুজব। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আর্থিক খাতে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, তেল, গ্যাস, চিনিসহ জরুরি পণ্য আমদানিতে রিজার্ভ থেকে এ সহায়তা দেয়া হচ্ছে। ডলার বাজার স্থিতিশীল রাখতে গত অর্থবছরের শেষদিকে সাময়িকভাবে ব্যাংকগুলোকে ডলার সহায়তা দেয়া শুরু করে সরকার। এরপর বাণিজ্য ঘাটতি অব্যাহত থাকার প্রেক্ষাপটে এটি নিয়মিত কার্যক্রমে রূপ নেয়।

এর সাথে করোনাকালীন বকেয়া পরিশোধ করতে গিয়ে দুই মাস অন্তর আকু পেমেন্ট বাবদ দেড় থেকে দুই বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে প্রতি মাসে দেড় থেকে দুই বিলিয়ন করে কমছে রিজার্ভ। সাম্প্রতিক সময়ে বেসরকারি ব্যাংকে ডলার সহায়তা বন্ধ করলেও সরকারি ব্যাংকগুলোকে নিয়মিত ডলার দিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এমন প্রেক্ষাপটে গত বছরের আগস্টে ৪৮ বিলিয়ন ডলারে থাকা রিজার্ভ কমে এখন ৩৪ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে রিজার্ভ প্রায় ১৪ বিলিয়ন ডলার কমে গেছে।

খাত-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ভারসাম্য রক্ষা করতে না পারলে বাণিজ্য ঘাটতি থেকে বের হওয়া সম্ভব নয়। আর বাণিজ্য ঘাটতি অব্যাহত থাকলে জরুরি পণ্যের জোগান মেটাতে রিজার্ভ থেকে ডলার খরচ করা ছাড়া বিকল্প নেই। একইসাথে প্রবাসী আয় বাড়াতে হবে। তবে উদ্বেগের বিষয় হলো, সাম্প্রতিক সময়ে রপ্তানি ও প্রবাসী আয় দুটোই কমছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, গত দুই মাস ধরে ধারাবাহিক কমছে রেমিট্যান্স। গত মাসে প্রবাসীরা এক দশমিক ৫২ বিলিয়ন ডলার দেশে পাঠিয়েছেন, যা আট মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। গত বছরের অক্টোবরে এক দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছিল বাংলাদেশ। সে তুলনায় রেমিট্যান্স কমেছে সাত দশমিক ৩৮ শতাংশ।

অন্যদিকে, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যমতে, চলতি বছরের অক্টোবর মাসে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ৭.৮৫ শতাংশ কমেছে। অক্টোবর মাসে বাংলাদেশ ৪.৩৫ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে। এ মাসে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল পাঁচ বিলিয়ন ডলার। গত বছরের অক্টোবরে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ছিল ৪.৭২ বিলিয়ন ডলার।

এছাড়া সরকারি-বেসরকারি খাতে ঋণ চাহিদার তুলনায় আমানত বাড়ছে কম হারে। এর মধ্যে ডলার কিনতে গিয়ে ব্যাংকের টাকা চলে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংকে। সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোকে ধার দেয়া বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

পাশাপাশি ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকার যে ঋণ নিচ্ছে, তার বেশিরভাগই দিচ্ছে এ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। তবে ঋণ দেয়া হচ্ছে ভিন্ন কৌশলে ‘ডিভল্বমেন্ট’ পদ্ধতিতে। গত এক বছরে ডিভল্বমেন্টের পরিমাণ ১৮৭ শতাংশের বেশি বেড়ে ৭২ হাজার ৬৮ কোটি টাকায় ঠেকেছে।

জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংক ট্রেজারি বিল ও বন্ডের বিপরীতে সরকারকে এখন নতুন করে ঋণ সরবরাহের পাশাপাশি আগের অনেক বন্ডও কিনে নিচ্ছে। যে কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডিভল্বমেন্টের পরিমাণ বাড়ছে। বাজারে তারল্য বাড়াতে যা সহায়ক হচ্ছে। পাশাপাশি পুনঃক্রয় চুক্তির (রেপো) এবং তারল্য সহায়তার বিপরীতে ধার দেয়া বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, তারল্য সংকটের বেসরকারি ব্যাংকগুলো সরকারি খাতে বিনিয়োগ করতে পারছে না। চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকার নিট ২৮ হাজার ২৯৫ কোটি টাকার ঋণ নিয়েছে। অথচ এ সময়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকে সরকারের ঋণ কমেছে তিন হাজার ৪৭ কোটি টাকা। আর বাংলাদেশ ব্যাংকে বেড়েছে ৩১ হাজার ৩৪২ কোটি টাকা।

সংকটের কারণে গত কয়েক দিন ধরে ধার নেয়া বাড়ছে ব্যাংকগুলোর। গত ১৭ নভেম্বর ১২টি ব্যাংককে ১১ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা ধার দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর মধ্যে পাঁচ দশমিক ৭৫ শতাংশ সুদের রেপোর বিপরীতে দেয়া হয় ৯ হাজার ২২২ কোটি টাকা। আর আট দশমিক ৭৫ শতাংশ সুদের তারল্য সহায়তা হিসেবে দেয়া হয় দুই হাজার ৬৪৯ কোটি টাকা। টাকার টান থাকার কথা গ্রাহক পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়ায় গুজব ডাল-পালা মেলছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনা এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বেড়েছে পণ্যমূল্য। মধ্য ও নিম্নবিত্ত শ্রেণির অনেকে এখন সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। নতুন সঞ্চয় তো দূরে থাক, কেউ কেউ পুরোনো সঞ্চয় ভেঙে ফেলছেন। ধারদেনা বা ঋণ করে চলছেন কেউ কেউ। এর মধ্যে একদিকে ডলারের বিপরীতে বাজার থেকে তারল্য উঠে যাচ্ছে। আরেক দিকে ব্যাংক থেকে আমানত তুলে নেয়ার ষড়যন্ত্রমূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে না পারলে এ সংকট আরও বাড়তে থাকবে। তাই রেমিট্যান্স বাড়ানো ও রপ্তানি বহুমুখীকরণের পাশাপাশি অর্থপাচার বন্ধে জোরালো পদক্ষেপ নেয়া উচিত বলে মনে করেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র জিএম আবুল কালাম আজাদ আমার সংবাদকে বলেন, জরুরি প্রয়োজনীয় পণ্যে ডলার সহায়তা অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনার জন্য কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একইসঙ্গে রেমিট্যান্স বাড়াতে ইতোমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

Link copied!