ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

জিপিএ-৫ বেড়েছে কমেছে পাস

মো. মাসুম বিল্লাহ

নভেম্বর ২৯, ২০২২, ১২:৫০ এএম

জিপিএ-৫ বেড়েছে কমেছে পাস

করোনা মহামারি, সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি কাটিয়ে বিলম্বিত এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। ৯টি সাধারণ শিক্ষাবোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাবোর্ড মিলে এবার পাসের হার ৮৭.৪৪ শতাংশ। চলতি বছরের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষায় পাসের হার ও জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যার দিক দিয়ে এ বছরও এগিয়ে রয়েছে মেয়েরা।

নানান সংকটেও পরীক্ষার মনোবল হারায়নি শিক্ষার্থীরা— এমনটাই বলছেন শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা। ৯টি সাধারণ শিক্ষাবোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ড মিলে ছাত্রীদের পাসের হার ৮৭.৭১ শতাংশ। আর ছাত্রদের পাসের হার ৮৭.১৬ শতাংশ।

এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ৯ লাখ ৯৫ হাজার ৯৪৪ জন ছাত্রী অংশ নেয়। এর মধ্যে পাস করেছে আট লাখ ৭৩ হাজার ৫৭৩ জন। চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে আট লাখ ২৬ হাজার ৫৮২ জন। পাস করেছে সাত লাখ ৩০ হাজার ৮২৬ জন। পাসের হার ৮৮.৪৪ শতাংশ। দাখিল পরীক্ষায় এক লাখ ৩৪ হাজার ২৪২ জন অংশ নেয়। পাস করেছে এক লাখ ১০ হাজার ৫০৬ জন। পাসের হার ৮২.৩২ শতাংশ। আর কারিগরি বোর্ডের অধীনে ৩৫ হাজার ১২০ জন ছাত্রী পরীক্ষায় অংশ নেয়। পাস করেছে ৩২ হাজার ২৪১ জন। পাসের হার ৯১.৮০ শতাংশ।

পূর্ণাঙ্গ জিপিএ, অর্থাৎ পাঁচে পাঁচ পাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রীরা এগিয়ে রয়েছে বড় ব্যবধানে। জিপিএ-৫ পাওয়া দুই লাখ ৬৯ হাজার ৬০২ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে এক লাখ ২১ হাজার ১৫৬ জন ছাত্র; আর এক লাখ ৪৮ হাজার ৪৪৬ জন ছাত্রী। সেই হিসাবে ২৭ হাজার ২৯০ জন বেশি ছাত্রী জিপিএ-৫ পেয়েছে।

গতকাল সোমবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট সম্মেলন কেন্দ্রে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি এসব তথ্য জানান।

এর আগে বেলা ১১টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ফলাফল হস্তান্তর করেন তিনি। গত বছর এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় পাসের হার ছিল ৯৩.৫৮ শতাংশ। এ পরীক্ষায় অংশ নেয়া ২২ লাখ ৪০ হাজার ৩৯৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পাস করে ২০ লাখ ৯৬ হাজার ৫৪৬ জন; যাদের এক লাখ ৮৩ হাজার ৩৪০ জন জিপিএ-৫ পায়।

এবার সাধারণ ৯টি শিক্ষাবোর্ডে পাসের হার ৮৮.১০ শতাংশ। মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১৫ লাখ ৮৮ হাজার ৬৫৭ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে  ২ লাখ ৩৩ হাজার ৭৬৩ জন। মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডে এবার পাসের হার ৮২. ২২ শতাংশ। মোট পরীক্ষার্থী ছিল দুই লাখ ৬০ হাজার ১৩২ জন। জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী ১৫ হাজার ৪৫৭ জন।

আর কারিগরি শিক্ষাবোর্ডে এক লাখ ৪৫ হাজার ৩৪৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাসের হার ৮৯. ৫৫ শতাংশ। জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী ১৮ হাজার ৬৫৫ জন। জানা গেছে, ঢাকা বোর্ডে পাসের হার ৯০.০৩ শতাংশ, ময়মনসিংহে ৮৬.৭ শতাংশ, রাজশাহীতে ৮৫.৮৮ শতাংশ, কুমিল্লায় ৯১.২৮ শতাংশ, বরিশালে ৮৯.৬১ শতাংশ, সিলেটে ৭৮.৮২ শতাংশ, চট্টগ্রামে ৮৭.৫৩ শতাংশ, যশোরে ৯৫.০৩ শতাংশ ও দিনাজপুরে ৮১.১৪ শতাংশ। এ বছর জিপিএ-৫ পেয়েছে দুই লাখ ৬৯ হাজার ৬০২ পরীক্ষার্থী।

ফল হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনা ভাইরাস এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে অনেক অসুবিধা সত্ত্বেও বাংলাদেশ যাতে পিছিয়ে না পড়ে সেজন্য তার সরকার নিরবচ্ছিন্ন শিক্ষা অব্যাহত রাখতে সম্ভাব্য সব ব্যবস্থা নিয়েছে।

তিনি বলেন, ‘করোনা ভাইরাস এবং যুদ্ধ (রাশিয়া-ইউক্রেন) আমাদের জন্য অনেক বাধা তৈরি করেছে। আমরা এ সম্পর্কে আগে থেকেই সচেতন ছিলাম। তবে আমাদের আরও সতর্ক এবং সাশ্রয়ী হতে হবে। এছাড়া শিক্ষা প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে পদক্ষেপ নেয়া উচিত। শিক্ষা ব্যবস্থা যাতে পিছিয়ে না যায় সে জন্য আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

অপরদিকে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের সংখ্যা বাড়ার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য প্রায় আড়াই বছর সময় পেয়েছে। ভালো প্রস্তুতির কারণে জিপিএ-৫ এর সংখ্যা বেড়েছে।

পাশাপাশি সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা নেয়া হয়েছে, এটিও ভালো ফলাফলের একটি বড় কারণ। তিনি বলেন, প্রতিটি শিক্ষাবোর্ডের মধ্যে পাবলিক পরীক্ষায় পাসের হার বাড়ানোর বিষয়ে প্রতিযোগিতা থাকে। সব শিক্ষাবোর্ডই চায় এগিয়ে যেতে। সেক্ষেত্রে কোনো কোনো বোর্ড এগিয়ে যায় আবার কোনো কোনো বোর্ড পিছিয়ে যায়।

অন্যদিকে ৫০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শতভাগ ফেল করার কারণ জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, গতবারের চেয়ে শতভাগ ফেল করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও বেড়েছে। তার মূল কারণ হচ্ছে আগে কয়েকটি বিষয়ে পরীক্ষা নিয়ে এসএসসির ফলাফল দেয়া হয়েছিল।

সেই কারণে শতভাগ ফেল করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কম ছিল। এবার সব বিষয়ে পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। কেন পাস করতে পারেনি সেটা আমরা খতিয়ে দেখব। আমরা শুধু শাস্তি নয়, সবাইকে নিয়েই এগিয়ে যেতে চাই। সেই কারণে সমস্যা সমাধানের চেষ্টাই আমাদের মূললক্ষ্য। তবে, এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে যদি এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠান থাকে সেটাও আমরা দেখব।

ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে ওই সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব কামাল হোসেন এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব আবু বকর ছিদ্দীক। সাধারণত এসএসসি পরীক্ষা ফেব্রুয়ারিতে শুরু হয়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে শিক্ষাসূচি পাল্টে যাওয়ায় এ বছর সাড়ে চার মাস পিছিয়ে গত ১৯ জুন এ পরীক্ষা শুরুর দিন ঠিক হয়েছিল।

পরে বিভিন্ন জেলায় বন্যার কারণে স্থগিত হওয়া সে পরীক্ষা শুরু হয় আরও তিন মাস পর, ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে। দিনাজপুর বোর্ডে প্রশ্ন ফাঁসের কারণে চার বিষয়ে নতুন সূচিতে পরীক্ষা নেয়া হয়। তাতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ফল প্রকাশ নিয়ে সংশয় তৈরি হলেও তা উৎরে গেছেন সংশ্লিষ্টরা। মহামারিতে প্রস্তুতিতে ঘাটতি থাকায় এ বছরও পুনর্বিন্যস্ত ও সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচিতে সময় কমিয়ে দুই ঘণ্টায় পরীক্ষা নেয়া হয়। নম্বর কমিয়ে বাংলা দ্বিতীয় পত্র, ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রে পরীক্ষা হয় ৫০ নম্বরে।

এছাড়া ব্যবহারিক আছে এমন বিষয়ে ৪৫ নম্বরে ও ব্যবহারিক নেই- এমন বিষয়ে ৫৫ নম্বরের পরীক্ষা হয়। ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় এবং বিজ্ঞান- এসব বিষয়ে পরীক্ষা না নিয়ে সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হয়। এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী ২০ লাখ ২১ হাজার ৮৬৮ জন। তিন হাজার ৭৯০টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয় এ পরীক্ষা। এতে অংশ নেয় ২৯ হাজার ৫৯১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরীক্ষার্থীরা।

ভিকারুননিসায় পাসের হার ৯৯.৭৮ শতাংশ
রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে চলতি বছর এসএসসিতে পাসের হার ৯৯ দশমিক ৭৮ শতাংশ। মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে অকৃতকার্য হয়েছে পাঁচজন। প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ কামরুন নাহার এই তথ্য জানিয়েছেন। তিনি আরও জানান, চলতি বছর বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা— এই তিন বিভাগে মোট পরীক্ষার্থী ছিল দুই হাজার ৩০৬ জন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে দুই হাজার ৩০১ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে দুই হাজার ২৫ জন।

এসএসসি পরীক্ষার ফল ঘোষণার পর বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা। ফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে গতকাল সকাল থেকেই কলেজ প্রাঙ্গণে আসতে শুরু করে শিক্ষার্থীরা। দুপুরে ফল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে তারা আনন্দে মেতে ওঠে। তাদের এই উচ্ছ্বাসে সঙ্গ দেন অভিভাবকরাও।

শিক্ষার্থীরা জানায়, বাবা-মা ও শিক্ষকদের অনুপ্রেরণায় তারা ভালো ফল করতে পেরেছে। ফল ঘোষণার আগ পর্যন্ত খুব দুশ্চিন্তা কাজ করছিল। এখন সহপাঠীদের সঙ্গে আনন্দ করতে পেরে ভালো লাগছে।  অভিভাবকরা বলেন, ২০২০ সালে করোনা পরিস্থিতির মধ্যে তাদের সন্তানদের ভর্তি হতে হয়। বিধিনিষেধের কারণে দীর্ঘদিন ক্লাসও হয়নি। অনলাইনে ক্লাস করতে হয়েছে। তবে সব ক্লাসই সন্তানরা মনোযোগ দিয়ে করেছে। ফলে ভালো ফল করতে পেরেছে।

এ বিষয়ে অধ্যক্ষ কামরুন নাহার আমার সংবাদকে বলেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীর পাশাপাশি অভিভাবকরাও কষ্ট করেছে। সমন্বিত প্রচেষ্টায় এবারের ফলাফলে সাফল্য এসেছে। মেয়েরা অনেক মনোযোগী ছিল বলেই ভালো করেছে। পাঁচজন ছাত্রীর ফেলের বিষয়ে তিনি বলেন, তারা গ্রামে চলে গিয়েছিল। সময়মত আসতে পারেনি। আর সবার অবস্থা তো এক নয় বলে জানান অধ্যক্ষ কামরুন নাহার।

Link copied!