ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad
বছরজুড়ে ফুটবল উন্মাদনা

বড় প্রাপ্তি মেসির হাতে বিশ্বকাপ

আহমেদ হূদয়

আহমেদ হূদয়

ডিসেম্বর ২৯, ২০২২, ০১:২৬ এএম

বড় প্রাপ্তি মেসির হাতে বিশ্বকাপ

চলতি বছরের শুরু থেকেই ছিল ফিফা বিশ্বকাপের আমেজ। সেই শুরু থেকেই ফুটবলপ্রেমীরা দিন গুনছিলেন ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসর ফিফা বিশ্বকাপের জন্য। বিশ্বকাপের দামামায় পুরো বিশ্ব মেতে ছিল পুরো একটি মাস। চলতি বছরের নভেম্বরের ২০ তারিখে কাতারে পর্দা ওঠে ২২তম ফিফা বিশ্বকাপের। নানা জল্পনা-কল্পনাকে পেছনে ফেলে ৩৬ বছরের খরা কাটিয়ে তৃতীয়বারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয় আর্জেন্টিনা।

গত ১৮ ডিসেম্বর পর্দা নামে ফিফা বিশ্বকাপের। এ বছর সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ছিল মেসির হাতে বিশ্বকাপ। যদিও বিশ্বকাপ ছাড়া ফুটবলের আর কোনো বড় আন্তর্জাতিক ইভেন্ট ছিল না এ বছরটিতে। তাইতো ২০২২ সালটা শেষ হলো বিশ্বকাপ দিয়েই।

সর্বকালের সেরা ফুটবলার কিংবদন্তি লিওনেল মেসির হাতে বিশ্বকাপ— এমন সুন্দর একটি দৃশ্য দেখতে পেরেছে সারা বিশ্ব। এ বছর খেলাধুলার জগতে এর থেকে বড় আনন্দ হয়তো আর কিছুই নেই। ২০২২ কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে ফ্রান্সকে টাইব্রেকারে হারিয়ে শিরোপা জেতে আর্জেন্টিনা।

২০২১ সালটা আন্তর্জাতিক ফুটবল অঙ্গনে ব্যস্ততা বেশি থাকলেও ২০২২ সালে এসে তা একদম কমে যায়। বিশ্বকাপ ছাড়া আর কোনো বড় আন্তর্জাতিক ইভেন্ট ছিল না এ বছরটিতে। এ বছরের জানুয়ারিতেই শুরু হয়েছিল প্রিমিয়ার লিগ, বুন্দেসলিগা ও লিগ ওয়ানের ট্রান্সফার উইন্ডো। একই মাসে লা লিগা, সিরি-আ লিগের জন্য ট্রান্সফার উইন্ডো শুরু হয়েছিল। বছরের শুরুতেই মোহাম্মদ সালাহর মিসরকে হারিয়ে প্রথমবার আফ্রিকান নেশন্স কাপ চ্যাম্পিয়ন হয় সাদিও মানের সেনেগাল।

পেনাল্টি শুটআউটে ৪-২ গোলে মিসরকে হারিয়ে আফ্রিকান নেশন্স কাপ চ্যাম্পিয়ন হয় সেনেগাল। ম্যাচের নির্ধারিত সময়ের পর অতিরিক্ত ৩০ মিনিটেও কোনো গোল না হওয়ায় ম্যাচ গড়ায় পেনাল্টি শুটআউটে। সাতবারের আফকনজয়ী মিসরকে সেখানেই হারায় মানেরা। এরপর জানুয়ারিতেই অনুষ্ঠিত হয় স্পেনীয় সুপার কাপ ফাইনাল। সৌদিতে অনুষ্ঠিত সেই ম্যাচে অ্যাটলেটিকো বিলবাওকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় রিয়াল মাদ্রিদ। ফেব্রুয়ারিতেই শুরু হয় চ্যাম্পিয়নস লিগ। ফাইনালে লিভারপুলকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় রিয়াল মাদ্রিদ।

এদিকে বিশ্বকাপ ফুটবলের পর বল গড়িয়েছে ইউরোপিয়ান ফুটবলে। কারাবাও কাপের ম্যাচে মুখোমুখি হয় ইপিএলের দুই শীর্ষ ক্লাব ম্যানচেস্টার সিটি ও লিভারপুল। বিশ্বকাপ ফাইনালের চার দিনের মাথায় কারাবাও কাপের ম্যাচ পড়ে যাওয়ায় পূর্ণশক্তির দল নামাতে পারেনি দু’দলই। তবে শক্তিতে এগিয়ে ছিল গার্দিওলার সিটিজেনরাই।

কারণ বিশ্বকাপ খেলে ফেরা ডি ব্রুইন, লাপোর্তে, গুন্দোগানদের পেয়েছিল তারা। শেষ হাসি হেসেছে সিটিই। চতুর্থ রাউন্ডের ম্যাচে লিভারপুলকে ৩-২ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নেয় স্কাই ব্লুজরা। কাতার বিশ্বকাপে বঞ্চিত ছিলেন আর্লিং হ্যালান্ড, মোহাম্মদ সালাহ, রিয়াদ মাহারেজরা। তাদের দেশ সুযোগ পায়নি বিশ্বকাপ খেলার। ক্লাব ফুটবলে বল গড়াতেই গোল পেলেন এই তিন তারকা। খেলা শুরুর ১০ মিনিটেই এদিন আর্লিং ব্রুট হ্যালান্ডের গোলে এগিয়ে যায় স্বাগতিক সিটি।

তবে ২০ মিনিটের মাথায় ফ্যাবিও কার্ভালহোর গোলে সমতা ফিরে পায় অল রেডসরা। প্রথমার্ধ শেষ হয় ১-১ গোলে। দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরুর সাথে সাথে ফের একবার এগিয়ে যায় গার্দিওলার দল। রদ্রির পাস থেকে গোল করেন রিয়াদ মাহারেজ। এর ঠিক পরের মিনিটেই সমতা ফিরে পায় ইয়ুর্গেন ক্লপের দল। ৪৮ মিনিটে ডারউইন নুনেজের পাস থেকে গোল করেন মহম্মদ সালাহ। ৫৮ মিনিটে সিটির হয়ে জয়সূচক গোলটি করেন নাথান আকে। সিটি ৩-২ গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর লিভারপুল আর সমতা ফেরাতে পারেনি।

পুরো ম্যাচেই লিভারপুলের ওপর দাপট দেখায় সিটি। লিভারপুল বিশ্বকাপের পর পূর্ণশক্তির দল না পাওয়ায় সেভাবে জ্বলে উঠতে পারল না। যদিও সালাহরা জয়ের জন্য লড়াই করেছে শেষ মিনিট পর্যন্ত। অন্যদিকে ১৯৭৬ সাল থেকে ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফা এবং ১৯৭৪ সাল হতে তাদের আঞ্চলিক সংস্থা এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের সদস্য হিসেবে রয়েছে বাংলাদেশ। ১৯৭৩ সালের ২৬ জুলাই বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক খেলায় অংশগ্রহণ করে থাইল্যান্ডের বিপক্ষে।

যদিও ম্যাচটি ২-২ গোলে ড্র হয়। তবে বড় অর্জন বলতে তেমন কিছুই নেই বাংলাদেশ ফুটবল দলের। চলতি বছরে বাংলাদেশের অর্জন বলতে ফিফা বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে ৫ম স্থান। অন্যদিকে আরও একটি বড় প্রাপ্তি রয়েছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের। চলতি বছরই সাফ চাম্পিয়নশিপের শিরোপা নিয়ে ঘরে ফেরে বাংলার বাঘিনীরা। ছাদখোলা বাসে তাদের বরণ করে নেয়া হয় নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে। বাংলাদেশ এ পর্যন্ত একবারও ফিফা বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করতে পারেনি।

অন্যদিকে, এএফসি এশিয়ান কাপে বাংলাদেশ এ পর্যন্ত মাত্র একবার অংশগ্রহণ করেছে, যেখানে তারা শুধুমাত্র গ্রুপপর্বে অংশগ্রহণ করেছে। এছাড়াও এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশ এ পর্যন্ত পাঁচবার অংশগ্রহণ করেছে, যার মধ্যে সেরা সাফল্য হচ্ছে ২০১৮ এশিয়ান গেমসের ১৬ দলের পর্বে পৌঁছানো, যেখানে তারা উত্তর কোরিয়ার কাছে ৩-১ গোলে হেরেছিল। বাংলাদেশ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ইতিহাসের অন্যতম সফল দল, যারা এ পর্যন্ত একবার জয়লাভ করেছে। তাও আবার ২০০৩ সালে।

এদিকে চলতি বছর বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের অর্জন বলতে বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব। এশিয়া অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে (ই) গ্রুপে বাংলাদেশের সাথে ছিল কাতার, আফগানিস্তান, ভারত ও ওমান। প্রতিটি দল নিজেদের মধ্যে দুটি করে ম্যাচ খেলে।

বাংলাদেশ ৮টি ম্যাচে ভারত ও আফগানিস্তানের সাথে ১-১ গোলে ড্র করে দুই পয়েন্ট অর্জন করে। প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের সাথে ১-০ গোলে হারলেও ফিরতি ম্যাচে ১-১ গোলে ড্র করে। ভারতের হোম অব গ্রাউন্ডে বাংলাদেশ ১-১ গোলে ড্র করে; কিন্তু নিজেদের হোম অব গ্রাউন্ডে ২-০ গোলে হেরে যায় বাংলাদেশ। ভারতের সাথে দুটি ম্যাচেই শেষ সময়ে গোল খেয়েছে বাংলাদেশ।

ভারতের হোম অব গ্রাউন্ড ম্যাচে বাংলাদেশ ৮৭ মিনিট পর্যন্ত ১-০ গোলে এগিয়ে ছিল; কিন্তু ৮৮ মিনিটে ভারতের আদিল খান গোল দিয়ে সমতা ফেরান। বাংলাদেশের পক্ষে গোল করেন মো. সাদ উদ্দিন। ফিরতি ম্যাচেও ৭৯ এবং ৯২ মিনিটে গোল খেয়ে ২-০তে ম্যাচ হারে বাংলাদেশ। ২২ পয়েন্ট নিয়ে ‘ই’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয় কাতার, বাংলাদেশ দুই পয়েন্ট নিয়ে ৫ম স্থান অধিকার করে। এটিই বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের এ বছরের সর্বোচ্চ অর্জন।

অন্যদিকে সাউথ এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশন ওমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপে নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে এ বছরই। গত সেপ্টেম্বরে নেপালের কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের  হারিয়ে প্রথমবার শিরোপা জয় করে বাংলাদেশ। ফলে দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট জিতে নেয় সাবিনা-সানজিদা ও মারিয়ারা।ম্যাচ শুরুর ঘণ্টা দুয়েক আগে ভারী বৃষ্টিতে মাঠ হয়ে যায় কর্দমাক্ত। ফলে দু’দলেরই সমস্যা হয় বলের নিয়ন্ত্রণ রাখতে।

তারপরও শুরু থেকেই একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে যায় বাংলাদেশ দলের সদস্যরা। কিছুটা চোট পাওয়ায় নেপালের বিপক্ষে মাঠে নামার পর স্বপ্নার মধ্যে ফিটনেস সমস্যা দেখা যাচ্ছিল। যার কারণে কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন তাকে তুলে নেন। তার পরিবর্তে খেলতে নামেন শামসুন্নাহার জুনিয়র। তিনি ম্যাচের ১৪ মিনিটে মণিকা চাকমার বাম কর্নার থেকে পাঠানো উঁচু শট পায়ের আলতো ছোঁয়ায় নেপালের গোলবারে পাঠিয়ে দলকে এগিয়ে নেন ১-০ গোলে। খেলার ৪১তম মিনিটের মাথায় অধিনায়ক সাবিনার কাছ থেকে বল পেয়ে কৃষ্ণা দ্বিতীয় গোল করে দলকে ২-০ গোলে এগিয়ে দেন।

এই ফরোয়ার্ড বাঁ পায়ের নিখুঁত শটে গোলরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে জালে বল প্রবেশ করান। ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে স্বাগতিক নেপাল দল খুব চাপে ফেলে বাংলাদেশ দলকে। সেই চাপের ধারাবাহিকতায় খেলার ৭০ মিনিটে নেপালের আনিতা বেসন্ত দলের পক্ষে একটি গোল পরিশোধ করার সুযোগ পান। খেলার শেষদিকে ৭৭ মিনিটে বাংলাদেশের ফরোয়ার্ড কৃষ্ণা রানী সরকার মিডফিল্ড থেকে পাওয়া থ্রুতে আগুয়ান প্রতিপক্ষের গোলরক্ষককে দারুণভাবে পরাস্ত করেন। ফলে ৩-১ গোলে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত হয়।  

অন্যদিকে এ বছরের শুরুতে বার্সেলোনার শিরোপার রাজত্বে ভাগ বসিয়েছে রিয়াল বেতিস। স্প্যানিশ ঘরোয়া কাপ ‘কোপা দেল রে’র শিরোপা বলতে গেলে বার্সেলোনার সম্পত্তি। টুর্নামেন্টের রেকর্ড ৩১ বারের চ্যাম্পিয়ন বার্সা এবার বিদায় নিয়েছিল আগেভাগে। টুর্নামেন্ট থেকে আগেই বিদায় নিয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদও। তাতেই ১৭ বছর পর আবারও কোপা দেল রে’র শিরোপা গেল রিয়াল বেতিসের ঘরে। টুর্নামেন্টটির ফাইনালে টাইব্রেকারে ৫-৪ ব্যবধানে ভ্যালেন্সিয়াকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছে নাবিল ফেকিরের দল। কোপা দেল রে’তে এটি বেতিসের তৃতীয় শিরোপা ছিল।

এর আগে ১৯৭৭ ও ২০০৫ সালে এ টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতেছিল বেতিস। ২০১০ সালের পর এটাই টুর্নামেন্টটির প্রথম ফাইনাল যেখানে ছিল না রিয়াল মাদ্রিদ বা বার্সেলোনা কেউই। এটি ২০০৫-০৬ সালের পর বেতিসের প্রথম কোনো মেজর শিরোপা। বছরের মাঝামাঝিতে স্তাদিও অলিম্পিয়াকোতে ২০১১ সালের পর প্রথম কোপা ইতালিয়া জিতেছে ইন্টার। ম্যাচের ৮০তম মিনিটে হাকান কালহানোগ্লুর পেনাল্টি গোলে সমতায় ফেরে ইন্টার। পরে আর কোনো গোল না হওয়ায় ম্যাচের ভাগ্য গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।

এক্সট্রা টাইমে তিন মিনিটের ব্যবধানে জোড়া গোল করেন ইভান পেরিসিক। তাতেই অষ্টমবারের মতো ট্রফিটি মাথার ওপর উঁচিয়ে ধরে ইন্টার। নিকোলো বারেলার গোলে শুরুতে এগিয়ে গিয়েছিল অবশ্য ইন্টারই। কিন্তু অ্যালেক্স সান্দ্রো ও দুসান ভ্লাহোভিচের গোলে লিডিং পজিশনে যায় জুভেন্টাস। তাতে কোনো লাভ হয়নি। শেষ হাসি হাসে ইন্টার। চলতি বছরের মে মাসে উয়েফা ইউরোপা লিগের ফাইনাল ম্যাচে টাইব্রেকারে র্যাঞ্জার্সকে ৫-৪ গোল ব্যবধানে হারিয়েছে জার্মান ক্লাব আইনট্রাখট ফ্রাঙ্কফুর্ট। আর এই জয়ের মাধ্যমে দীর্ঘ ৪২ বছরের আক্ষেপ ঘুচিয়ে শিরোপা জিতছে ক্লাবটি।

আলবেনিয়ার তিরানায় প্রথম কনফারেন্স লিগ ফাইনালে হোসে মোরিনহোর রোমা মুখোমুখি হয়েছিল ডাচ জায়ান্ট ফাইনর্ডের। হাড্ডাহাড্ডি ফাইনালে ‘টিপিক্যাল’ মোরিনহো স্টাইলে ফাইনর্ডকে মাত দিয়ে ১৪ বছরে নিজেদের প্রথম ট্রফি জিতে নিয়েছে ইতালির রাজধানীর ক্লাবটি। টানটান লড়াইয়ের ম্যাচে একমাত্র গোলটি করলেন নিকোলো জানিয়োলো। ২০০৭ সালে ফিলিপো ইনজাঘির পর প্রথম ইতালিয়ান ফুটবলার হিসেবে রোমার ফরোয়ার্ড কোনো ইউরোপীয় ক্লাব ফুটবল প্রতিযোগিতার ফাইনালে গোল করলেন।

ফিরে দেখা কাতার বিশ্বকাপ : কাতার বিশ্বকাপই মেসির শেষ বিশ্বকাপ— এমন গুঞ্জনই চাউর হচ্ছিল ফুটবলপাড়ায়। মেসিও অবশ্য ফাইনালের আগে জানিয়ে দিয়েছিলেন এটিই বিশ্বকাপে তার শেষ বিশ্বকাপ। তবে এখনো নিশ্চিত নয় যে, আগামী বিশ্বকাপে মেসি খেলবেন কি না। কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা অংশ নিয়েছিল ফেভারিট হিসেবেই।

তবে প্রথম ম্যাচেই হেরে যায় সৌদি আরবের কাছে। হতবাক করা অঘটন। শুধু কাতার নয়, এটি বিশ্বকাপ ইতিহাসে অন্যতম বড় অঘটনও। বিশ্বকাপের শুরুটাই যে হয়েছিল অঘটন দিয়ে। কাতারে ইতিহাস রচনা করেছে তিউনিশিয়া। বিশ্বসেরা ফ্রান্সকে হারিয়ে অবিশ্বাস্য জয় পায় তারা। বিশ্বকাপে অঘটনগুলোই যেন বাড়িয়ে দিয়েছে উন্মাদনা।

স্নায়ুচাপ, উত্তেজনা, কথার লড়াই কিংবা হতাশা চেপে বসে অঘটনের ফলেই। কাতারে বিশ্বকাপ আয়োজনই এবার অনেকের কাছে ছিল বিস্ময়ের। মরুর বুকে বিশ্বকাপ আয়োজন। উদ্বোধনের পরও হয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। বিশ্বকাপ শুরুর নিয়মিত সময় বদলে শীতকালে আয়োজনসহ অনেকের কাছে বিস্ময়ের। শুরুতেই যেখানে আয়োজন নিয়ে সমালোচনা, সেখানে ঘটনাবহুল বিশ্বকাপ হওয়াই যেন প্রত্যাশা। আগের সব আসরকে ছাপিয়ে এবার যেন অঘটনের ঝাঁপি নিয়ে বসেছিল।

সৌদি আরবের কাছে আর্জেন্টিনার হার : বিশ্বকাপের প্রথম অঘটন সৌদি আরবের কাছে আর্জেন্টিনার হার। প্রথমার্ধে ১-০ গোলে পিছিয়ে থাকার পরও সেই ম্যাচ ২-১ গোলে জিতে নেয় সৌদি আরব। টানা ৩৬ ম্যাচ অপরাজিত থেকে বিশ্বকাপে এসেছিল আর্জেন্টিনা। সৌদি আরবের বিপক্ষে হারের আগে তারা সর্বশেষ ২০১৯ সালে কোপা আমেরিকায় ব্রাজিলের কাছে হেরেছিল।

আড়াই বছরে কোনো ম্যাচ না হারা দলটি পুঁচকে সৌদি আরবের কাছে হেরে অঘটনের জন্ম দেয়। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই আর্জেন্টিনার রেকর্ডের ইতি টেনে অঘটন ঘটায় সৌদি আরব। অবিশ্বাস্য হারের পর আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ পথচলা নিয়ে শুরু হয় জল্পনা-কল্পনা। তবে ওই ম্যাচটা যেন তাতিয়ে তোলে আর্জেন্টিনাকে। দুর্দান্ত খেলে দলটি জায়গা করে নেয় ফাইনালে।

জার্মানিকে হারিয়ে জাপানের অবিশ্বাস্য জয়: বিশ্বকাপে দ্বিতীয় বড় অঘটন জার্মানদের গুঁড়িয়ে দিয়ে জাপানের অবিশ্বাস্য জয়। ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপেও প্রথম রাউন্ড থেকে বিদায় নিয়েছিল জার্মানি। কাতার বিশ্বকাপে তাদের শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি। জাপানের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের সামনে কার্যত মাথা নোয়াতে বাধ্য হন জার্মান ফুটবলাররা। প্রথমার্ধে তারা ১-০ গোলে এগিয়ে থাকে। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে ৮ মিনিটের ঝড়ে হেরে যায় জার্মানি। জাপানের কাছে এ হারের পর আর সেভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। প্রথম রাউন্ড থেকেই তারা বিদায় নেয়।

ডেনমার্ককে হারিয়ে অস্ট্রেলিয়ার চমক: ডেনমার্ককে হারিয়ে ১৬ বছর পর নকআউট পর্বে উঠে যায় অস্ট্রেলিয়া। ২০০৬ সালের পর আর নকআউট পর্ব নিশ্চিত করতে পারেনি তারা। কাতার বিশ্বকাপে কেটে যায় তাদের ১৬ বছরের খরা। গ্রুপে অন্যতম ফেভারিট ডেনমার্ককে ১-০ গোলে হারায় অসিরা। দ্বিতীয় রাউন্ডে অবশ্য প্রতিপক্ষ আর্জেন্টিনার সঙ্গে লড়াই করতে পারেনি তারা।

স্পেনকে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন জাপান: জার্মানিকে হারানোর পর দুর্বল কোস্টারিকার কাছে হেরে যায় জাপান। তবে বাঁচা-মরার ম্যাচে স্পেনকে ১-০ গোলে হারিয়ে দেয় এশিয়ার দলটি। স্পেনকে হারিয়ে জাপানের গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ঘটনাও কম অঘটন নয়। তবে দ্বিতীয় রাউন্ডেও তারা নিজেদের দারুণভাবে চিনিয়েছে। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে নির্ধারিত সময়ে ড্র করে জাপান। পরে অবশ্য তারা টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নেয়।

পর্তুগালের বিপক্ষে দক্ষিণ কোরিয়ার নাটকীয় জয় : অন্যদিকে পর্তুগালের বিরুদ্ধে দক্ষিণ কোরিয়ার নাটকীয় জয়ের সাক্ষী থাকল ফুটবলবিশ্ব। ইনজুরি টাইমে গোল দিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া ২-১-এ ম্যাচ জিতে নেয়। এরপর মাঠের মধ্যেই তারা অন্য ম্যাচের ফলাফলের দিকে তাকিয়ে থাকে। উরুগুয়ে জিতলেও গোল ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে বিদায় নিতে হয়। এশিয়ার দ্বিতীয় দল হিসেবে দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত করে দক্ষিণ কোরিয়া।

ক্যামেরুনের কাছে ব্রাজিলের হার: নেইমারের নেতৃত্ব ব্রাজিলকে এবার দারুণ ছন্দময় দেখাচ্ছিল। কোয়ার্টার ফাইনালে তারা ক্রোয়েশিয়ার কাছে হেরে যায়। কিন্তু বড় অঘটন ঘটে ক্যামেরুনের বিপক্ষে হেরে। যদিও ওই ম্যাচে ব্রাজিল প্রথম সারির দল নামায়নি। হেরে যায় ১-০ গোলে। বিশ্বকাপের ইতিহাসে আফ্রিকান দল হিসেবে এই প্রথম ব্রাজিলকে হারায় ক্যামেরুন।

আফ্রিকান শক্তি মরক্কোর চমক: ক্রোয়েশিয়া ও বেলজিয়ামের গ্রুপে পড়েছিল মরক্কো। গ্রুপপর্বে কোনো ম্যাচই হারেনি তারা। শুরুতে মরক্কোকে মনে হচ্ছিল অঘটনের জন্ম দিয়েছে। বিশ্বকাপের অন্যতম ফেভারিট বেলজিয়ামকে তারা গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায় করে দেয়। নকআউট পর্বেও চলে আফ্রিকান দেশটির দাপট। দুর্দান্ত খেলে তারা জায়গা করে নেয় সেমিফাইনালে। কিন্তু সেখানে ফ্রান্সের কাছে দারুণ খেলে বিদায় নেয়।

বিতর্কিত রেফারিং: আর্জেন্টিনা ও নেদারল্যান্ডসের কোয়ার্টার ফাইনালে হয়েছে চরম বিতর্কিত রেফারিং। ম্যাচ শেষে দুদলের খেলোয়াড়ই রেফারির সমালোচনা করেন। খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফ মিলে একটি লাল কার্ডসহ ১৮টি কার্ড দেখান রেফারি।

Link copied!