ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

বছরজুড়ে ক্রিকেটের উত্তাপ

আহমেদ হূদয়

আহমেদ হূদয়

ডিসেম্বর ৩০, ২০২২, ০৪:২৯ এএম

বছরজুড়ে ক্রিকেটের উত্তাপ

প্রবাদে একটি কথা আছে— শেষ ভালো যার, সব ভালো তার। বছরের শেষটা ভালো না হলেও শুরুটা ছিল স্বপ্নের মতো। বাংলাদেশ ২০২২ সালের শুরুটা করেছিল ইতিহাস গড়েই। সেই ভোর হয়তো কখনো ভুলবে না বাংলার ক্রিকেটপ্রেমীরা। তখনো হয়তো কারও ঘুম ভাঙেনি; তখনো হয়তো বাংলার আকাশে সূর্য ওঠেনি।

কিন্তু সেদিন নিউজিল্যান্ডের মাউন্ড মঙ্গানুই থেকে শোনা যাচ্ছিল টাইগারদের গর্জন। সেই গর্জনেই হয়তো বাঙালির ঘুম ভেঙে যায়। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে প্রথমবার যেকোনো ফরম্যাটে সেদিন প্রথম জয় দিয়ে ২০২২ সাল শুরু করেছিল বাংলাদেশ। মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে সিরিজের প্রথম টেস্টে নিউজিল্যান্ডে আট উইকেটে হারায় বাংলাদেশ। সেই শুরু ও শেষ।

এরপর পুরো বছরেও আর কোনো টেস্ট ম্যাচ জিততে পারেনি বাংলাদেশ। পুরো বছরে বাংলাদেশ টেস্ট ম্যাচ খেলেছে মোট ১০টি। তার মধ্যে আটটিতেই হার। চলতি বছরের মে মাসে চট্টগ্রামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একটি টেস্ট ড্র করেছিল। নিউজিল্যান্ড ছাড়াও এ বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজ; দক্ষিণ আফ্রিকা; শ্রীলঙ্কা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো বড় দলের সাথে টেস্ট সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টিতেও প্রত্যাশানুযায়ী তেমন ভালো পারফরম্যান্স করতে পারেনি টাইগাররা।

টেস্টের মতো টি-টোয়েন্টিতেও জয় দিয়েই বছর শুরু করেছিল বাংলাদেশ। বছরের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৬১ রানের জয় পায় টাইগাররা। এপর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি তারা। পরের ম্যাচেই আফগানদের কাছে আট উইকেটে হারে তারা। উইন্ডিজ সফরে গিয়েও স্বাগতিকদের কাছে ধবলধোলাই হন সাকিবরা। তিন ম্যাচ সিরিজের একটি পরিত্যক্ত হয়; বাকি দুটোতেই হার। জিম্বাবুয়ে সফরে গিয়েও সিরিজ হারতে হয় ২-১ ব্যবধানে।

এরপরই এশিয়া কাপে অংশ নেয় বাংলাদেশ। তাতেও ব্যর্থতার গণ্ডি থেকে বের হতে পারেনি লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। টুর্নামেন্টে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই আফগানদের কাছে সাত উইকেটে হারে বাংলাদেশ। পরের ম্যাচে লঙ্কানদের কাছেও হারে দুই উইকেটে। একের পর এক হারের খরা কাটাতে অবশেষে ইউনাইটেড আরব আমিরাতের সাথে দুই ম্যাচের সিরিজ খেলতে যায় সোহানরা। আমিরাতের বিপক্ষে দুটি ম্যাচ জিতলেও প্রথম জয়টি সহজ ছিল না। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তানের বিপক্ষে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলার সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু তা কাজে লাগাতে পারেনি। সিরিজের সবগুলো ম্যাচই হারে সাকিবরা।

এরপরই অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অংশ নেন সাকিবরা। নিজেদের প্রথম ম্যাচে নেদারল্যান্ডসকে ৯ উইকেটে হারিয়ে শুভ সূচনা করে সাকিব বাহিনী। তবে পরের ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ১০৪ রানের বড় ব্যবধানে হারে বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পরের ম্যাচে তিন রানে জয় পায় টাইগাররা। ভারতের বিপক্ষে দারুণ লড়াই করে শেষ পর্যন্ত পাঁচ রানে আত্মসমর্পণ করতে হয় লিটন-সাকিবদের। টুর্নামেন্টে নিজেদের শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে পাঁচ উইকেটে হারতে হয়েছিল। সব মিলিয়ে চলতি বছর ২১ টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ। তার মধ্যে মাত্র ছয়টি ম্যাচে জয় পেয়েছে টাইগাররা। বাকি ১৪ ম্যাচে হার ও একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়।

তবে ওয়ানডেতে নিজেদের আধিপত্য ধরে রেখেছে ঠিকই। সর্বমোট পাঁচটি ওডিআই সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ। তার মধ্যে চারটি সিরিজই নিজেদের করে নিয়েছে টাইগাররা। এ বছর মোট ১৫টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। তার মধ্যে ১০টিতেই জয় পেয়েছে টাইগাররা। সর্বশেষ ভারতের বিপক্ষেও সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। এ বছর আফগানিস্তানের সাথে ২-১ ব্যবধানে; সাউথ আফ্রিকার সাথে ২-১; উইন্ডিজের সাথে ৩-০ ও ভারতের সাথে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে বাংলাদেশ। একমাত্র জিম্বাবুয়ের কাছে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হারে টাইগাররা। তবে বছরের সেরা প্রাপ্তি বলতে ওই লিটন দাসের পারফরম্যান্স। এ বছরে টাইগারদের হয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ব্যাটার লিটন কুমার দাস। তাকে এ বছরের সেরা ব্যাটসম্যান বললেও হয়তো কোনো ভুল হবে না।

২০২২ সালে বাংলাদেশ দলের হয়ে সব ফরম্যাট মিলিয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক এই উইকেটরক্ষ ব্যাটার। ব্যাট হাতে ৫০ ইনিংস খেলে করেছেন এক হাজার ৯২১ রান। তিনটি শতকের সাথে করেছেন ১৩ অর্ধশতক, গড় ৪০.০২। লিটনের চেয়ে কেবল ২০২২ সালে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় রয়েছেন বাবর আজম। পাকিস্তান অধিনায়কের সংগ্রহ দুই হাজার ৫৮৪ রান।

বাংলাদেশের হয়ে ২০২২ সালে টেস্টে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক লিটন দাস ১০ ম্যাচের ১৮ ইনিংস খেলে করেছেন ৮০০ রান। যার গড় ৪৪ ও স্ট্রাইকরেট ৪৩। চার মেরেছেন ৯৮টি ও ছক্কা মেরেছেন তিনটি। সর্বোচ্চ রানের ইনিংস শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৪১ রানের। ২০২২ সালে ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায়ও সবার উপরে লিটন। ১৩ ওয়ানডে ম্যাচ খেলে করেছেন ৫৭৭ রান। গড় রান ৭৭, সাথে স্ট্রাইকরেট ৮৩। চার মেরেছেন ৬৭টি ও ছক্কা মেরেছেন সাতটি। সর্বোচ্চ রানের স্কোর ছিল ১৩৬ রানের আফগানিস্তানের বিপক্ষে। টি-টোয়েন্টিতেও সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় শীর্ষে এই ব্যাটার। ১৯ ম্যাচ খেলে এই তারকা ব্যাটার সংগ্রহ করেছেন ৫৪৪ রান। গড় রান ২৯ এবং স্ট্রাইকরেট ছিল ১৪০। ৫৭টি চারের সাথে ১৬ ছক্কা হাঁকিয়েছেন লিটন।

সর্বোচ্চ রানের ইনিংস ৬৯ পাকিস্তানের বিপক্ষে। এদিকে পুরো বছরজুড়েই বিসিবিতে ছিল পরিবর্তনের হাওয়া। বছরের গোড়ার দিকে ওটিস গিবসন পেস বোলিং কোচের পদ ছাড়েন, তার জায়গায় আসেন অ্যালান ডোনাল্ড। তার সাথে চুক্তি ছিল এই বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত। এরপর ভারত সিরিজেও ছিলেন ডোনাল্ড। গিবসন জানুয়ারিতে চলে যাওয়ার পরে ফেব্রুয়ারিতেই তার পথ ধরেন ব্যাটিং কোচ অ্যাশওয়েল প্রিন্স। মার্চ মাসে দলের সঙ্গে যোগ দিলেন ফিল্ডিং কোচ শেন ম্যাকডারমট ও রায়ান কুক।

এরপর শুরু হলো রাসেল ডমিঙ্গোকে নিয়ে সমালোচনা। টি-টোয়েন্টি নিয়ে রাসেল ডমিঙ্গোর সঙ্গে বোর্ডকর্তাদের অমিল হওয়ার কারণে ভারত থেকে শ্রীধরন শ্রীরামকে আনা হয় বাংলাদেশে টেকনিক্যাল কনসালটেন্ট হিসেবে। সঙ্গে টিম ডিরেক্টর হিসেবে খালেদ মাহমুদ তো আছেনই। শ্রীরাম তার ইমপ্যাক্ট তত্ত্ব ফলিয়ে এশিয়া কাপ, নিউজিল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ এবং টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দায়িত্ব পালন করেছেন, মাঝে আরব আমিরাতে ছিল দুই ম্যাচের প্রস্তুতিমূলক সিরিজ।

এত কিছুর পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডস এবং জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জয়ে আত্মতৃপ্তি খোঁজা আর প্রথমবারের মতো মূল পর্বে একাধিক জয়ের কৃতিত্বের দাবি। বারবার বদল এসেছে নেতৃত্বে। বছরের শুরুতে টেস্ট অধিনায়ক ছিলেন মুমিনুল হক। মাঝামাঝি সময়ে বাজে ফর্মের দোহাই দিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে নেতৃত্বে ফিরিয়ে আনা হলো সাকিব আল হাসানকে।

মাহমুদউল্লাহকেও টি-টোয়েন্টি নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে অধিনায়ক করা হলো সাকিবকে। বছরের শেষে কুঁচকির চোট তামিম ইকবালকে বসিয়ে রাখল ভারত সিরিজে, তাই ওয়ানডে অধিনায়ক লিটন দাস। সব মিলিয়ে এই বছর ৪৫টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ বাংলাদেশ খেলেছে আটজন অধিনায়ক আর দুজন প্রধান কোচের অধীনে। আসছে বছর ভারতে ওয়ানডে বিশ্বকাপ। সুপার লিগে একটা সময়ে শীর্ষে থাকা বাংলাদেশ এখন পাঁচে, তবে নিশ্চিত হয়ে গেছে আগামী আসরে অংশগ্রহণ। এই বছর বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েই অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ খেলতে যায় বাংলাদেশ। কিন্তু শিরোপা ধরে রাখার মিশনে বাংলাদেশ ফিরে আসে অষ্টম হয়ে।

মেয়েদের এশিয়া কাপেও বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ নিজেদের মাটিতে ফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হয়। এ বছর মেয়েরা ওয়ানডের বিশ্বকাপও খেলে যেখানে নিগার সুলতানা জ্যোতির দল হারায় পাকিস্তানকে। ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে প্রথমবারের মতো শিরোপা জেতে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। লিগের এক মৌসুমে এক হাজার ৪২ রান করে সর্বোচ্চ রানের নতুন রেকর্ড গড়েন এনামুল হক বিজয়, যা তাকে দীর্ঘদিন পর ফেরায় জাতীয় দলে। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার পারফরম্যান্সই যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের মানের সাথে আন্তর্জাতিক অঙ্গনের ফারাকটা। এর আগে বছরের শুরুতে মাঠে গড়িয়েছিল বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের অষ্টম আসর। টুর্নামেন্টজুড়ে উড়তে থাকা ফরচুন বরিশালকে হারিয়ে তৃতীয় শিরোপা ঘরে তুলেছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।

অন্যদিকে বছরজুড়ে উত্তাপ ছড়িয়েছে বিশ্ব ক্রিকেট। আইপিএলের ১৫তম আসরেরও পর্দা উঠেছিল এই বছরে। নতুন দুই ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়ে শুরু হয়েছিল জনপ্রিয় এই ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের গত আসরের। নবাগত দল গুজরাট টাইটান্স দেখিয়েছে নিজেদের প্রথম আসরেই। হার্দিক পান্ডিয়ার নেতৃত্বে রাজস্থান রয়্যালসকে হারিয়ে আইপিএলের শিরোপা জিতেছে দলটি।

গত এপ্রিলে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে সপ্তমবারের মতো মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। ফাইনালে ১৭০ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেছিলেন অ্যালিসা হিলি। এদিকে রীতিমতো গৃহযুদ্ধ চলছিল শ্রীলঙ্কায়। জনগণ কর্তৃক লঙ্কান সরকারের পতনের ডামাডোলে এশিয়া কাপ খেলতে আরব আমিরাতে গিয়েছিল শ্রীলঙ্কা এবং সেখানে লঙ্কানদের বাজিমাত।

প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে শোচনীয় পরাজয়ের পর দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় দাসুন শানাকার দল। ফাইনালে পাকিস্তানকে হারিয়ে তুলে ধরেছিল এশিয়া কাপের শিরোপা। এশিয়া কাপেই ঘুচেছে ভিরাট কোহলির সেঞ্চুরিখরা। আফগানিস্তানের বিপক্ষে এক হাজার ২০ দিনের অপেক্ষা ফুরিয়েছে তার দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরিতে। বছরের শেষ ক্রিকেটীয় ধামাকা ছিল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।

অস্ট্রেলিয়ায় সেই পাকিস্তানকে হারিয়েই ক্রিকেটের ক্ষুদ্র এই ফরম্যাটের বিশ্বকাপের দ্বিতীয় ট্রফিটা ঘরে তুলে ইংল্যান্ড। এর মধ্যে ডিসেম্বরে এক অঘটন ঘটিয়ে বসেছে সিডনি থান্ডার্স। বিগ ব্যাশে মাত্র ১৫ রানে গুটিয়ে গেছে দলটি। স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহের রেকর্ডও এটি। এ বছর গত মার্চ মাসে ক্রিকেট হারিয়েছে কিংবদন্তি লেগ স্পিনার শেন ওয়ার্নকে। সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন তারই দীর্ঘদিনের সতীর্থ অ্যান্ড্রু সাইমন্ডস। মারা গেছেন সাবেক অজি ক্রিকেটার রডনি মার্শও। অবসর নিয়েছেন ইওন মরগান, কাইরন পোলার্ড, রস টেলর।

Link copied!