ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

উচ্ছ্বাসে ছিল অপূর্ণতা

বেলাল হোসেন ও নাঈমুল হক

বেলাল হোসেন ও নাঈমুল হক

জানুয়ারি ২, ২০২৩, ০২:৩৩ পিএম

উচ্ছ্বাসে ছিল অপূর্ণতা
  • নতুন বই উৎসব ২০২৩

নিম্নমানের কাগজের বই নিয়ে অসন্তুষ্ট অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা

বই বিতরণ অনুষ্ঠানে এক ক্লাসের শিক্ষার্থীর হাতে অন্য ক্লাসের বই 

নতুন বই নির্ধারিত সময়ে না পাওয়ার আশঙ্কা

 করোনার কারণে দুই বছর বন্ধ থাকার পর রাজধানীসহ সারা দেশে মাধ্যমিক ও প্রাথমিক স্কুলগুলোতে শুরু হয় বই বিতরণ উৎসব। স্বভাবতই বছরের প্রথম দিনই নতুন বই হাতে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা শিশুরা। দীর্ঘদিন পর বই উৎসবে এসে শিক্ষার্থীদের মজা করতে দেখা যায়। নতুন বইয়ের ঘ্রাণ নিয়ে খুনসুটিতে মেতে ওঠে তারা। তবে এত কিছুর মাঝে এ বছর ছিল একটু অপূর্ণতা।

নতুন পাঠ্যপুস্তকে ঘাটতি থাকায় এবার পাঠ্যক্রম অনুযায়ী সব বই হাতে পায়নি শিক্ষার্থীরা। আবার নিম্নমানের কাগজে প্রস্তুতকৃত বই নিয়ে অসন্তুষ্ট অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা। অপরদিকে বই বিতরণ অনুষ্ঠানে এক শ্রেণির শিক্ষার্থীর হাতে অপর শ্রেণির বইও দেখা গেছে। এ নিয়ে অনেকের মধ্যেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। 

গতকাল রোববার সকাল ১০টা থেকে জাতীয় পাঠ্যপুস্তক দিবস-২০২৩ এর যাত্রা শুরু করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী জাকির হোসেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে প্রাথমিক ও প্রাক-প্রাথমিকের বই উৎসব শুরু হয়। অন্যদিকে গাজীপুরের কাপাসিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে শুরু হয় মাধ্যমিকের বই উৎসব।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে আজিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েকজন চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীর হাতে দ্বিতীয় শ্রেণির বই দেখা যায়। এ সময় চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র মাহবুর বলে, আমাকে টুয়ের বই দিয়েছে। তোমার বই কি দেবে এমন প্রশ্ন করলে উত্তরে সে বলে, আমি জানি না। এ বিষয়ে উপস্থিত তার এক শিক্ষক আমার সংবাদকে বলেন, আমরা তাড়াহুড়ো করে বই নিয়ে এসেছি, কিছু শ্রেণির বই হয়তো আসেনি। তবে স্কুলে গিয়ে দেবো। 

ওই শিক্ষক বলেন, আমাদের প্রাক-প্রাথমিকের বই এখনো আসেনি আর পঞ্চম শ্রেণির শুধু ইংরেজি বই পাওয়া গেছে। গেণ্ডারিয়া মহিলা সমীতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী লামিয়ার হাতে দেখা যায় চতুর্থ শ্রেণির ইংরেজি বই। এ ছাড়া আগামসি লেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী আনিছা বলে, গত বছর যে বই পেয়েছিলাম— অনেক সুন্দর সাদা ছিল। এবারের বই নিউজপ্রিন্টে ছাপানো। এবারের বইয়ে বেশি যত্ন নিতে হবে। 

এ সময় আনিছার মা বলেন, এ বছর বই বেশি ভালো না; তবুও নতুন বই পেয়েছে। শুনছি সব বই এখন দেবে না, ভালো করে কভার দিয়ে দিতে হবে। তিনি বলেন, বাচ্চারা তো এই বই বেশি দিন টিকাতে পারবে না। নষ্ট হয়ে যাবে।

মাধ্যমিকে বই না পাওয়া ও নিম্মমানের বইয়ের ব্যাপারে অভিভাবকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা গিয়েছে। মতিঝিল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিভাবক শেফালী আক্তার বলেন, তিনটি বই পেয়েছি। গতবারের তুলনায় এবারের বইগুলো অনেক নিম্মমানের হয়েছে। এমনিতেই ছোট্ট শিশু। এই বই তো ছয় মাসের মধ্যে ছিঁড়ে যাবে। 

বই না পেয়ে মতিঝিল বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিভাবক মাহমুদুল হাসান জানান, বই উৎসব হলো অথচ আমার সন্তান বই পেলো না। ওদের ক্লাসমেটদের কয়েকজন বই পেয়েছে। সবাই বই না পেলে সমস্যা ছিল না। ঢাকা মতিঝিল সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে দেখা যায়, ষষ্ঠ ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সবগুলো বই পেয়েছে। সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা পেয়েছে যথাক্রমে তিন ও সাতটি করে বই। সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী জারা ইসলাম বলে, বই হাতে পেয়ে ভালো লাগছে। 

তবে সবগুলো বই একত্রে পেলে আরো ভালো লাগত। মতিঝিল বালক স্কুলে প্রাথমিকে সব ক্লাসের শিক্ষার্থীকে দুটো করে বই দেয়া হয়। মাধ্যমিকে ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সবগুলো বই পেলেও অন্য ক্লাসের শিক্ষার্থীরা দুই-তিনটির বেশি বই পায়নি। এ ব্যাপারে স্কুলের মতিঝিল বালক উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেওয়ান তাহেরা আক্তার বলেন, পর্যাপ্ত বই না থাকায় সবাইকে বই দেয়া সম্ভব হয়নি। 

এই মাসের মধ্যে আশা করি সবাইকে সবগুলো বই দিতে পারব। তবে বই উৎসব নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে ইতিবাচক ভাবনাও দেখা গেছে, ইমাম হোসেন নামে একজন অভিভাবক বলেন, বই উৎসব সত্যি আমাদের সন্তানদের জন্য অনেক বড় পাওয়া । ছোট বেলা পুরনো বই কেনার জন্য বিভিন্ন বাড়িতে যেতাম। পুরনো বই পেতেও কতো ঝামেলা পোহাতে হতো। বছরের প্রথম দিনই সরকার সবাইকে বিনামূল্য বই বিতরণ করছেন। সরকারের উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই। তবে শিক্ষকরা বলছেন, বই সংকটের কারণে তাদের হাতে বই দেয়া সম্ভব হয়নি। চলতি মাসের মধ্যে আশা করছি সব বই দেয়া হবে।

বই সংকটের ব্যাপারে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘আমাদের সব বই কাগজের অভাবে প্রেস থেকে দিতে পারিনি। আগামী এক মাসের মধ্যে আমরা সব বই শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করতে পারব বলে আশা করি।’ এদিকে, এখন পর্যন্ত মাধ্যমিক পর্যায়ের ৮০ শতাংশ ও প্রাথমিকের ৬৫ শতাংশ বই উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছানো হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। যদিও মুদ্রণ শিল্প সমিতির দাবি, ঘাটতির পরিমাণ এনসিটিবির হিসাবের চেয়ে অনেক বেশি। 

কাগজ সংকটে প্রাথমিকের বই ছাপানো দেরিতে শুরু হওয়ায় সংকট বেশি ঘনীভূত হয়েছে। নিম্নমানের বইয়ের পাশাপাশি এবার প্রচুরসংখ্যক শিক্ষার্থীর নতুন বই নির্ধারিত সময় না পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এবার প্রায় ৯ কোটি পাঠ্যবই ঘাটতি রেখেই পাঠ্যপুস্তক উৎসব করা হচ্ছে। এ বছর বই উৎসবে সারা দেশে চার কোটি ৯ লাখ ১৫ হাজার ৩৮১ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩৩ কোটি ৯১ লাখ ১২ হাজার ৩০০ কপি পাঠ্যপুস্তক বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে। যার মধ্যে প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক স্তরে দুই কোটি ১৯ লাখ ৮৪ হাজার ৮২৩ শিক্ষার্থীকে ৯ কোটি ৬৬ লাখ আট হাজার ২৪৫টি বই বিতরণ করা হবে।

Link copied!