ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

বাংলায় ধবলধোলাই ইংলিশরা

আহমেদ হূদয়

আহমেদ হূদয়

মার্চ ১৫, ২০২৩, ১২:০৬ পিএম

বাংলায় ধবলধোলাই ইংলিশরা

প্রত্যাবর্তন কাকে বলে— সেটিই হয়তো দেখাল বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের ভোগান্তির কথা ক্রিকেট দুনিয়ায় অজানা নয়। গত দুবছরে অনুষ্ঠিত দুটি বিশ্বকাপেও ব্যর্থ হয়েছে তারা। যে বাংলাদেশকে টি-টোয়েন্টিতে দুর্বল দল ভাবা হতো আর সেই বাংলাদেশই কী না বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করে দিল! ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। আর সেই ইংল্যান্ডকে টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবারের মতো হারানোর স্বাদ পেলো বাংলাদেশ। এতেই থেমে থাকেনি টাইগাররা।

দ্বিতীয় ম্যাচেও বাটলারদের হারিয়ে সিরিজ জয় করে ইতিহাস গড়েন সাকিবরা। তবে এতেও ক্ষান্ত হয়নি সাকিব বাহিনী। সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে রীতিমতো বাংলাওয়াশের স্বাদ দিল টাইগাররা। শেষ ম্যাচে ১৬ রানের জয় পায় বাংলাদেশ। যে ম্যাচটি হেসে-খেলেই বের করে নিয়ে আসছিলেন ডেভিড মালান আর জস বাটলার। সেই ম্যাচে পাশার দান একেবারে উল্টে দিল সাকিব আল হাসানের দল। মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে রুদ্ধশ্বাস এক লড়াইয়ে শেষ ওভারে ১৬ রানে ইংল্যান্ডকে হারাল বাংলাদেশ।

তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের ৩-০ ব্যবধানে বাংলাওয়াশ করেই ছাড়ল সাকিব বাহিনী! একটা সময় জয়টা কঠিনই মনে হচ্ছিল। ১৫৯ রান তাড়া করতে নেমে ১ উইকেটেই ১০০ রান তুলে ফেলেছিল ইংলিশরা। সেখান থেকে আর ৪২ রানে ৫ উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। তারচেয়েও বড় কথা, টাইগারদের অসাধারণ বোলিংয়ে ৯ উইকেট হাতে রেখেও শেষ ৪৮ বলে মাত্র ৪৭ রান নিতে পারে ইংলিশরা। ইংল্যান্ডের ইনিংস থাকে ৬ উইকেটে ১৪২ রানে। তাসকিন আহমেদ ৪ ওভারে ২৬ রান দিয়ে নেন দুটি উইকেট। মোস্তাফিজুর রহমান ৪ ওভারে ১ উইকেট নিতে খরচ করেন মাত্র ১৪। হাসান মাহমুদ ৪ ওভারে দেন ২৯। বাটলার এবং মালানের ব্যাটে চড়ে ১০০ রানে পৌঁছে যায় ইংল্যান্ড দল।

আলতো করে ঠেলে দিয়ে রান নেয়ার সময় মেহদী হাসান মিরাজের থ্রোতে স্টাম্প ভেঙে যায়। থ্রো করা বল স্টাম্পে লাগতেই মিরাজ দৌড় শুরু করলেন। তখনও পুরোপুরি নিশ্চিত নয় আউট হয়েছে কি না। রিপ্লেতে দেখা যায় আউট। ইংলিশ অধিনায়ক বাটলারকে প্যাভিলিয়নে ফেরালেন মিরাজ! মূলত সেখানেই ঘুরে যায় ম্যাচের মোড়। আগে ব্যাট করতে নেমে অবশ্য শেষদিকে কাঙ্ক্ষিত ঝড় তুলতে পারেননি টাইগার ব্যাটাররা। তবে লিটনের ফিফটিতে ১৫৮ রানের চ্যালেঞ্জিং পুঁজি পায় বাংলাদেশ। ১৫৯ রানের মাঝারি পুঁজির লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ১৩ ওভার শেষে ১ উইকেটে ১০০ রান তুলে ফেলে সফরকারীরা। তখনও জয়ের পাল্লা ভারী ছিল তাদের দিকেই। তবে মোস্তাফিজ এনে দেন ব্রেক থ্রু।

ব্যাটিংসহায়ক উইকেটে ইংল্যান্ডকে চেপে ধরতে শুরুতেই উইকেট দরকার ছিল। অভিষিক্ত বাঁহাতি স্পিনার তানভীর ইসলাম প্রথম ওভারেই বাংলাদেশকে এনে দেন সাফল্য। উইকেটের পেছনে থাকা লিটন স্টাম্পড করেন ফিল সল্টকে। টার্নে পরাস্ত হওয়া সল্ট ১ বল খেলে রানের খাতা খুলতে পারেননি। ড্রাইভ করার চেষ্টায় ক্রিজ থেকে বেরিয়ে গিয়ে সময়মতো ফিরতে পারেননি তিনি। পরের ওভারে বল হাতে পেয়েই উইকেটের উল্লাস করেন অভিজ্ঞ পেসার তাসকিন। মাঠের আম্পায়ার মালানের বিপরীতে এলবিডব্লিউর সিদ্ধান্ত দেয়ার পর রিভিউ নিয়ে বাঁচেন তিনি। রিপ্লে দেখে তৃতীয় আম্পায়ার সিদ্ধান্ত দেন যে, ইনসাইড এজ হয়েছিল মালানের। বাটলারকে সঙ্গে নিয়ে এগোতে থাকেন মালান। দ্বিতীয় উইকেটে গড়েন ৭৬ বলে ৯৫ রানের জুটি। তাদের বিচ্ছিন্ন করে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরান বাঁহাতি পেসার মোস্তাফিজ। ১৪তম ওভারে আক্রমণে ফিরে ফিফটি করার মালানকে লিটনের ক্যাচ বানান তিনি।

এই উইকেট দিয়ে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বোলার ও প্রথম পেসার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে শততম উইকেট পূরণ করেন তিনি। ৪৭ বলে ৬ চার ও ২ ছয়ে ৫৩ রান করেন মালান। সঙ্গী হারিয়ে টেকেননি বাটলার। পরের বলেই মেহেদী হাসান মিরাজের দুর্দান্ত থ্রোতে রানআউট হন তিনি। ৪ চার ও ১ ছয়ে ৩১ বলে ৪০ রান আসে তার ব্যাট থেকে। দ্রুত ২ উইকেট পড়ে যাওয়ায় ইংলিশদের ভিত নড়ে যায়। পরের উইকেট জুটিতে ধাক্কা সামলে নেয়ার চেষ্টা করেন মঈন ও ডাকেট। ১৬তম ওভারে হাসান মাহমুদকে চার-ছয় মেরে তারা আনেন ১১ রান। ফলে শেষ চার ওভারে তাদের জেতার জন্য দরকার হয় ৪০ রান। তবে ১৭তম ওভারে ম্যাচ নিয়ন্ত্রণে এনে দেন তাসকিন আহমেদ। একই ওভারে মঈন ও ডাকেটকে ছাঁটেন তিনি।

১০ বলে ৯ করে মঈন আলি ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ দেন মিরাজের হাতে। ফুল ডেলিভারিতে ১১ বলে ১১ রান করা ডাকেটের স্টাম্প উপড়ে ফেলেন তাসকিন। পরের ওভারে মোস্তাফিজ খরচ করেন মোটে ৫ রান। এরপর ১৯তম ওভারে ৪ রান দিয়ে স্যাম কারানকে প্যাভিলিয়নে পাঠান সাকিব। শেষ ওভারে ইংল্যান্ডের দরকার ছিল ২৭ রান। তবে কঠিন সমীকরণ মেলাতে পারেননি ওকস ও জর্ডান। প্রথম দুই বলেই বাউন্ডারি হজম করেন পেসার হাসান মাহমুদ। নিজেকে সামলে নিয়ে পরের চার বলে খরচ করেন মাত্র ২ রান। আর তাতেই সফরকারীদের ইনিংস থেমে যায় ১৪২ রানে। এর আগে টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে ভালো শুরু করেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার।

ওপেনিং জুটিতে বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে যোগ হয় ৫৫ রান। আদিল রশিদের বলে তার হাতেই ক্যাচ দিয়ে ফেরেন রনি তালুকদার। ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ২২ বলে ২৪ রান। এরপর এক প্রান্ত আগলে রেখে ধীরে ধীরে এগোতে থাকেন লিটন। তাকে সঙ্গ দেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ১৫ ওভার শেষে তাদের সংগ্রহ ছিল ১ উইকেটে ১৩১ রান। কিন্তু শেষ পাঁচ ওভারে ভীষণ ভোগে স্বাগতিকরা। আরেকটি উইকেট খুইয়ে তারা স্কোরবোর্ডে যোগ করতে পারে কেবল ২৭ রান। ম্যাচসেরা লিটন ফিফটি পেয়ে গিয়েছিলেন। ছন্দে থাকা শান্তও থিতু হয়ে পড়েছিলেন। উইকেট হাতে ছিল ৯টি। কিন্তু ১৬ থেকে ২০ ওভারে প্রত্যাশিত রান তুলতে পারেনি বাংলাদেশ। লিটন ৫৭ বলে খেলেন ক্যারিয়ারসেরা ৭৩ রানের ইনিংস। নাজমুল হোসেন শান্ত অপরাজিত থাকেন ৩৬ বলে ৪৭ রানে। অধিনায়ক সাকিব ৬ বলে অপরাজিত ৪ রান করেন। সিরিজসেরার পুরস্কার জেতেন তরুণ বাঁহাতি ব্যাটার শান্ত। তিন ম্যাচে এক হাফ সেঞ্চুরিসহ ১২৭.৪৩ স্ট্রাইক রেটে ১৪৪ রান করেন তিনি।

ছন্দে ফিরতেই লিটনের সর্বোচ্চ : গত বছর সেরা ছন্দে ছিলেন লিটন কুমার দাস। একের পর এক দুর্দান্ত ইনিংস উপহার দিয়েছেন তিনি। বিশ্বের সব বাঘা বাঘা ব্যাটারের পাশে নিজের নামও লিখিয়ে নেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। তবে হঠাৎই যেন নিজের ছন্দ হারিয়ে বসেন তিনি। ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে লিটনের নেই কোনো ফিফটি। টেস্ট সিরিজেও চার ইনিংসের ৩টিতেই থিতু হয়েছিলেন ঠিকই; তবে আউট হতেও বেশি সময় নেননি। সর্বশেষ ৭৩ রানের ইনিংসটি ছাড়া সেই সিরিজে উল্লেখযোগ্য আর কোনো রান নেই তার। এরপর দেশের মাটিতে শুরু হলো ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ। তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের দুই ম্যাচেই ফ্লপ লিটন। তিন ম্যাচে লিটনের রান ছিল ৭, ০, ০।

তিন ইনিংস মিলিয়ে মাত্র ৭ রান। তাও আবার এক ম্যাচেই এসেছে ৭ রান। বাকি দুই ম্যাচে মেরেছেন ডাক। এর আগে ২০১৯ সালে নিউজিল্যান্ড সফরে তিন ইনিংসেই করেছিলেন ১ রান করে। টানা দুই শূন্যের কারণে কেউ হয়তো ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজটিকেই লিটনের সবচেয়ে বাজে বলে রায় দিতে পারেন। তবে ঘরের মাটিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শুধু ওয়ানডেতেই নয়; টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচেও ব্যর্থ হয়েছেন লিটন। দুই ম্যাচে তার রান ১২ ও ৯। তবে শেষ ম্যাচে আবারও স্বরূপে লিটন। খেললেন ৭৩ রানের ক্যারিয়ারসেরা এক ইনিংস। মিরপুরে ব্যাটিং পাওয়ার প্লেতে খেলেছেন দেখেশুনে। ২১ বল খেলে করেছিলেন মাত্র ২০ রান।

এরপর ধীরে ধীরে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসতে থাকেন লিটন। পরের ২০ বলেই করে ফেলেন হাফ সেঞ্চুরি। যাতে ছিল ৮টি চার। টি-টোয়েন্টিতে লিটনের এটি নবম ফিফটি। ৫৭ বল খেলেছেন ৭৩ রানের ইনিংস। এর আগে ৫০-এর বেশি রান করা ইনিংসগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম স্ট্রাইক রেট ছিল ১৩৩। সেটি ২০২০ সালে মিরপুরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। সেদিন ৪৫ বলে ৬০ রান করে অপরাজিত ছিলেন তিনি। গত বছর ১৩৬ স্ট্রাইক রেটে আরও একটি ফিফটি করেছিলেন। সেটিও মিরপুরেই আর প্রতিপক্ষ ছিল আফগানিস্তান। এ ছাড়া লিটনের সব কটি ফিফটিতে স্ট্রাইক রেট ছিল ১৫০-এর ওপরে।

লিটনই গত বিপিএলের সময় এক সংবাদ সম্মেলনে এ নিয়ে বলছিলেন, টি-টোয়েন্টিতে আমার যতগুলো ৫০-এর স্কোর আছে, যেগুলো দলকে জেতাতে সাহায্য করেছে, খেলার মোমেন্টাম বদলে দিয়েছে— সবই কিন্তু কম বলে। আমি খুব বেশি বল নিয়ে ইনিংস খেলিনি। আমার ক্যারেক্টারটাই এমন। আমি অ্যাটাকিং খেলতে পছন্দ করি। কখনোই এমন হয় না যে, আমি ৪০ বলে ৪০ করি। আমি যদি ৪০ বল খেলি, তাহলে ৬০ হয়ে যায়। আমি যেভাবে এতদিন সফল হয়েছি, সে ধারাবাহিকতাই বজায় রাখতে চাই।

টিএইচ

 

Link copied!