ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

প্রকাশ্যে এসেও ধরাছোঁয়ার বাইরে আরাভ

মো. মাসুম বিল্লাহ

মার্চ ১৭, ২০২৩, ১১:২৮ এএম

প্রকাশ্যে এসেও ধরাছোঁয়ার বাইরে আরাভ
  • প্রশ্নের মুখে সাকিব-হিরো আলম
  • দুবাই গিয়েও স্টেজে উঠলেন না সাকিব, স্টেজ মাতালেন আলম
  • পালানোর আগে আরাভ খান থাকতেন কলকাতার বস্তিতে
  • শিগগিরই আমেরিকায় শোরুম উদ্বোধনের ঘোষণা আরাভের

ইন্টারপোলের সহায়তায় আরাভকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে
—হারুন অর রশীদ, গোয়েন্দা প্রধান

বিশ্বসেরা ক্রিকেট অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের আরাভ জুয়েলার্স উদ্বোধনের সংবাদের পর থেকেই আলোচনায় রয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তা খুনের মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত আরাভ জুয়েলার্সের মালিক আরাভ খান ওরফে রবিউল ইসলাম। 

এতদিন ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকলেও দুবাইতে স্বর্ণের দোকান উদ্বোধনের জন্য দেশ থেকে তারকা খেলোয়াড়, কণ্ঠশিল্পী ও অভিনেত্রীদের নিয়ে যাওয়ার পরই আরাভের অবস্থান সম্পর্কে আলোচনার শুরু হয়। গতকাল ঢাকা মহানগর ডিবির প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানিয়েছেন, ইন্টারপোলের সহায়তায় রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানকে দেশে ফিরিয়ে এনে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এদিকে আরাভের স্বর্ণের দোকান উদ্বোধন করতে যাওয়ায় ডিবির জিজ্ঞাসাবাদের মুখেও পড়তে পারেন ক্রিকেটার সাকিবুল হাসান, ইউটিউবার হিরো আলমও। 

এছাড়াও একই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন পরিচালক দেবাশীষ বিশ্বাস, কণ্ঠশিল্পী বেলাল খান, ইসরাত জাহান জুঁই ও দীঘিরাও। ডিবির প্রধান হারুন বলেন, স্বর্ণের দোকানের মালিক আরাভ খান যে পুলিশ খুনের আসামি তা সাকিবকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু এরপরও তিনি দুবাই গেছেন। এটি দুঃখজনক। তদন্তের স্বার্থে সাকিব ও হিরো আলমকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।

জানা গেছে, গত বুধবার দুবাইয়ের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আরাভ জুয়েলার্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। তবে উদ্বোধনী মঞ্চে না উঠে ১০ মিনিটের মধ্যে চলে যান তিনি। একই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে মঞ্চ মাতান দেশের আলোচিত ইউটিউবার আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম। পুলিশ বলছে, দেশ থেকে যারা আরাভের অনুষ্ঠানে গেছে, সেই আরাভের বিরুদ্ধে ১২টি ওয়ারেন্ট রয়েছে, মামলা রয়েছে, চার্জশিটও রয়েছে। 

এর আগে দুবাইয়ের বুর্জ খলিফায় কোটি টাকার ফ্ল্যাট কেনার আগে কলকাতায় বস্তিতে থাকতেন আরাভ ওরফে রবিউল ইসলাম। বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পরিদর্শক মো. মামুন এমরান খান হত্যামামলার পরই ভারতে আত্মগোপনে চলে যান তিনি। থাকতেন কলকাতার পাশে নরেন্দ্রপুরের বস্তি এলাকায়। অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে গা ঢাকা দিয়েছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার অধীন রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার ফরতাবাদ এলাকায়। 

আসল পরিচয় গোপন করে ফরতাবাদ এলাকার উদয় সংঘ ক্লাবের পাশেই স্থানীয় বাসিন্দা জাকির খানের বাসার দোতলায় ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতেন আরাভ ও তার স্ত্রী সাজেমা নাসরিন। এরপর জাকির খান ও তার স্ত্রী রেহানা বিবি খানের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন তারা। 

আর সেই সম্পর্ককে কাজে লাগিয়েই জাকির ও রেহানার ভারতীয় আধার কার্ড সংগ্রহ করে তাদের উভয়কেই কথিত বাবা-মার পরিচয় দিয়ে আরাভ ভুয়া ভারতীয় পাসপোর্ট তৈরি করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। একইভাবে আরাভের স্ত্রীরও পাসপোর্ট তৈরি করা হয়। পাসপোর্টে তাদের উভয়ের ঠিকানা হিসেবে উল্লেখ রয়েছে কন্দর্পপুর, উদয় সংঘ ক্লাব, রাজপুর-সোনারপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, কলকাতা-৭০০০৮৪।

পাসপোর্টের ঠিকানা ধরে কলকাতার ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাস (ইএম বাইপাস) ধরে সোজা ফরতাবাদ মোড় থেকে বাম দিকে ৮০০ মিটার ভেতরে ঢুকলেই কন্দর্পপুর উদয় সংঘ ক্লাব। ওই এলাকায় পৌঁছতেই সেখানে জাকির খানের নাম বলতেই এক নারী এসে তার বাড়ি দেখিয়ে দেন। বোঝাই গেল, ওই এলাকায় যথেষ্ট পরিচিত নাম জাকির খান। এলাকায় পরোপকারী এবং ভদ্রলোক হিসেবেই পরিচিত। 

যদিও বছর দুয়েক আগে হূদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান জাকির। তার বাড়িতে ঢুকতেই দেখা হয় তার স্ত্রী রেহানা বিবি খানের সঙ্গে। প্রথম দিকে মুখ খোলার ব্যাপারে কিছুটা ইতস্তত বোধ করলেও সাংবাদিক পরিচয় দিলে কিছুটা স্বাভাবিক হন রেহানা। মোবাইলে আরাভের ছবি দেখতেই রেহানা বলেন, আজকেই আমি ইউটিউবে আরাভ খানের বিষয়টি জানলাম। রেহানার দাবি, পাঁচ বছর আগে আমাদের বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে এসেছিলেন আরাভ। আমাদের বাসায় এক বছর ভাড়া ছিল, এরপর চলে যান। 

রেহানা আরও বলেন, আমাদের আধার কার্ড নিয়ে আরাভ কী একটা ডকুমেন্ট তৈরি করবে বলেছিলেন। সে কারণে আমি ও আমার স্বামী উভয়ই আরাভকে আমাদের আধার কার্ড দিয়ে দেই। ওই আধার কার্ড দিয়েই নিজের স্ত্রীর ভারতীয় পাসপোর্ট তৈরি করেছিল আরাভ খান। যদিও তাকে কোনোদিনই সন্দেহ হয়নি বলেও জানান রেহানা। 

আরাভের কথিত মা হিসেবে পরিচয় দেয়া রেহানা বলেন, মালিকের সঙ্গে একজন ভাড়াটিয়ার যে সম্পর্ক থাকে আরাভ খানের সঙ্গে আমাদেরও সেই সম্পর্ক ছিল। তবে এলাকার লোকের সঙ্গে খুব একটা মেলামেশা করতেন না আরাভ। বাইরেও খুব একটা বের হতো না। এদিকে, এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রত্যেকেই ব্যক্তিগতভাবে আরাভকে চিনতেন। বিএমডব্লিউ বাইকে এলাকায় স্টান্ট করতেই দেখা যেত তাকে। আরাভ নিজেকে একজন ফিল্ম আর্টিস্ট বলে পরিচয় দিতেন। 

জানা গেছে, ২০১৮ সালে পুলিশ কর্মকর্তা মামুন ইমরান খানকে হত্যার পর পেট্রোল ঢেলে লাশ পুড়িয়ে গাজীপুরে এক জঙ্গলের ভেতর ফেলে দেয় দুর্বৃত্তরা। ওই মামলার মূল অভিযুক্ত ছিলেন আরাভ খান। ওই সময় থেকেই পলাতক ছিলেন আরাভ। গা ঢাকা দিয়েছিলেন ভারতে। পরে ভুয়া পাসপোর্ট বানিয়ে দুবাইয়ে পালিয়ে যান আরাভ। এরপর থেকে গত কয়েক বছর ধরে দুবাইতেই অবস্থান করছেন আরাভ খান। দেশটির গোল্ড বাজারে আরাভ জুয়েলারি শোরুমের মালিক তিনি।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ফেসবুক লাইভে এসে আরাভ খান দাবি করে বলেন, ‘আমি খুনের সঙ্গে জড়িত না। ওইদিন আমি ছিলাম না। অথচ মামলায় আমার বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ আনা হয়েছে। আরাভ খান দাবি করে বলেন, ‘২০১৮ সালে বনানীতে আমার অফিস ছিল। আপন বিল্ডার্স নামে আমার রিয়েল এস্টেটের ব্যবসা ছিল। আমি সেদিন বাসায় ভাত খাচ্ছিলাম। আমার সহকারী অফিসে খুনের বিষয়টি ফোনে জানায়। যিনি খুন হয়েছিলেন তিনি একজন পুলিশ কর্মকর্তা। 

সেটি একটি দুর্ঘটনা ছিল। আমার অপরাধ ছিল আমি ওই অফিসের মালিক। সেদিন জন্মদিনের অনুষ্ঠান ছিল। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে ওই ঘটনা ঘটে।’ তিনি দাবি করে বলেন, ‘আমার আমেরিকান গ্রিন কার্ড আছে। কানাডিয়ান পাসপোর্ট আছে। কই আমি তো চলে যাইনি। অনেকে আমাকে চলে যেতে বলেন। আমি খুনের সঙ্গে জড়িত না। জড়িত থাকলে পালিয়ে যেতাম। আমার অফিসে খুন হয়েছে। 

এ কারণে বিচার হলে আমি মাথা পেতে নেব।’ আরাভ খান বলেন, ‘এত কিছুর পরও আমার অনুষ্ঠান অনেক ভালোভাবে সম্পন্ন হয়েছে।’ আরাভ খানের ভাষ্য, তিনি শিগগির আমেরিকায় একটি শোরুম উদ্বোধন করবেন এবং বাংলাদেশের ৬৪টি জেলায় একটি করে মসজিদ নির্মাণ করবেন। এছাড়া ফেসবুক মেসেঞ্জোরে ভয়েস দিয়ে আরাভ আমার সংবাদকে জানান, আমি খুব শিগগিরই বাংলাদেশে আসব। আমি নির্দোষ। আমি কি করেছি না করেছি, একমাত্র আল্লাহ ভালো জানেন।

Link copied!