ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

ইতিবাচক ধারায় অর্থনীতি

মো. মাসুম বিল্লাহ

মার্চ ৩১, ২০২৩, ০৩:৫৩ এএম

ইতিবাচক ধারায় অর্থনীতি

দেশে অর্থনীতি বেশ কয়েক মাস ধরে বিপজ্জনক অবস্থার মধ্য দিয়ে গেছে। এই সংকট এখনই পুরোপুরি না কাটলেও ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিম্নমুখী প্রবণতা কাটিয়ে স্থিতিশীল হওয়ার আশ্বাস দিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। আমদানি নিয়ন্ত্রণ, ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠানো উৎসাহিত করতে বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম, রপ্তানি আয়ের প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল থেকে দ্রুত ঋণের অর্থছাড়, অবৈধ পথে রেমিট্যান্স আসার পথ সঙ্কুচিত করাসহ নানামুখী উদ্যোগে অর্থনীতি ইতিবাচক ধারায় ফিরতে শুরু করেছে। বিশেষ করে আমদানি লাগান টেনে ধরা ও রেমিট্যান্স প্রবাহ দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় সামগ্রিক অর্থনীতিতে আশা জাগাচ্ছে।

সামনের দিকে হাঁটা শুরু করেছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। এর আগে বিপুল আমদানি ব্যয় মেটানোয় রিজার্ভ ক্রমান্বয়ে কমেছে। তবে কমার পথগুলো প্রায় বন্ধ হয়েছে, ফলে রিজার্ভ এখন ঠিক দিকে হাঁটছে। রেমিট্যান্সের গতি বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকলে ম্যাজিকেল সাফল্যও দৃশ্যমান হতে পারে। বিশ্বজুড়ে নানা সংকটে অর্থনীতি। বহু দেশে চলছে মন্দা। অব্যাহতভাবে কমছে পাকিস্তানসহ প্রতিবেশী একাধিক দেশের রিজার্ভ। আর এমন প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেও বাংলাদেশে রিজার্ভ ঘুড়ে দাঁড়াচ্ছে। যা ২০২৬-২৭ অর্থবছরে ৫০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

২৪ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১৬০ কোটি ডলার : মাত্র রোজা শুরু। সাধারণত ঈদের কিছু দিন আগে প্রবাসীরা বেশি পরিমাণে রেমিট্যান্স পাঠান। কিন্তু এবার গত ২৭ মার্চ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে ভিন্ন চিত্র দেখা যাচ্ছে। মার্চের ২৪ দিনে বৈধ পথে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৫৯ কোটি ৭৫ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার। এ ধারা অব্যাহত থাকলে রেমিট্যান্স আহরণে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হবে। তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, চলতি মার্চের প্রথম ২৪ দিনে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১৯ কোটি ৫৬ লাখ ৭০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে তিন কোটি ৫৪ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১৩৬ কোটি ১৫ লাখ ৪০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৪৮ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।

গত ফেব্রুয়ারিতে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৫৬ কোটি ১২ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রথম আট মাসে মোট রেমিট্যান্স এসেছে এক হাজার ৪০১ কোটি ৩৩ লাখ মার্কিন ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল এক হাজার ৩৪৩ কেটি ৮৫ লাখ মার্কিন ডলার। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিগত দিনে দেশ থেকে বেশ জনশক্তি রপ্তানি হয়েছে। এসব প্রবাসী প্রতি বছরের মতো এবারও রোজা ও ঈদকে সামনে রেখে প্রিয়জনদের কাছে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন।

এ ধারা অব্যাহত থাকলে আগামীতে রিজার্ভ নিয়ে কোনো শঙ্কা থাকবে না। রেমিট্যান্স বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নানা উদ্যোগ নিয়েছে। বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে বিভিন্নভাবে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত বছর ১৬ নভেম্বর বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) থেকে প্রবাসীদের বলা হয়, বৈধ পথে বা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে রেমিট্যান্স প্রেরণ করুন, প্রিয়জনকে ঝুঁকিমুক্ত ও নিরাপদ রাখুন। বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, প্রবাসী বাংলাদেশিদের কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে (হুন্ডি বা অন্য কোনো অবৈধ পথে) প্রেরণ করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এতে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রবাসীদের উদ্দেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলে, আপনাদের অর্জিত মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা হুন্ডি বা অন্য কোনো অবৈধ পথে না পাঠিয়ে বৈধ পথে বা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে প্রেরণ করুন, দেশ গড়ায় মূল্যবান অবদান রাখুন এবং আপনার প্রিয়জনকে ঝুঁকিমুক্ত ও নিরাপদ রাখুন। অবৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট সবার বিরুদ্ধে প্রমাণ সাপেক্ষে প্রচলিত আইনে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে বিএফআইইউ।

রেমিট্যান্স বাড়াতে যেসব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে আছে বৈধ উপায়ে ওয়েজ আর্নার্স রেমিট্যান্সের বিপরীতে আড়াই শতাংশ নগদ প্রণোদনা, রেমিট্যান্স প্রেরণকারীদের সিআইপি সম্মাননা, রেমিট্যান্স বিতরণ প্রক্রিয়া সম্প্রসারণ ও সহজীকরণের পাশাপাশি অনিবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বিনিয়োগ ও গৃহায়ণ অর্থায়ন সুবিধা দেয়া, ফিনটেক পদ্ধতির আওতায় আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার অপারেটরকে বাংলাদেশের ব্যাংকের সাথে ড্রয়িং ব্যবস্থা স্থাপনে উদ্বুদ্ধকরণ এবং রেমিট্যান্স প্রেরণে ব্যাংক বা এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোর চার্জ ফি মওকুফ করা। সর্বশেষ সেবার বিনিময়ে দেশে রেমিট্যান্স আয় আনতে ফরম সি পূরণ করার শর্ত শিথিল করা হয়েছে। সেবা খাতের উদ্যোক্তা ও রপ্তানিকারকরা ঘোষণা ছাড়াই ২০ হাজার মার্কিন ডলার বা সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আনতে পারবেন। বিদায়ী ২০২১-২২ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছে দুই হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ মার্কিন ডলার। এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্স আহরণের পরিমাণ ছিল দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন সম্প্রতি সংস্থাটির এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘দীর্ঘদিন প্রবাসী আয়ে নেতিবাচক ধারা ছিল; এখন ইতিবাচক দেখা যাচ্ছে। তবে, যে হারে জনশক্তি রপ্তানি হচ্ছে, সেই হারে রেমিট্যান্স দেশে আসছে না। কেন আসছে না, এ বিষয়টি দেখা দরকার। তিনি বলেন, এখন আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে। প্রণোদনায় খুব একটা সুফল আসেনি। তাই, এই প্রণোদনা কতদিন থাকবে, নাকি তুলে নেয়া হবে, এটি এখন ভাবতে হবে।’

দুই হাজার ৩০০ কোটি টাকা দিতে প্রস্তুত এডিবি : এদিকে নতুন খবর দিচ্ছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক-এডিবি। রেলপথ-পানি নিষ্কাশন ও সড়ক অবকাঠামো সংস্কার সংক্রান্ত পাঁচ প্রকল্পের আওতায় ২৩ কোটি ডলার ঋণ দিতে এডিবি প্রস্তুত বলে সরকারকে জানিয়েছে। এডিবির প্রতি ডলার সমান ১০০ টাকা ধরে বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ দুই হাজার ৩০০ কোটি টাকা। গতকাল ৩০ মার্চ শেরেবাংলা নগর পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিন্টিংয়ের সঙ্গে এক সাক্ষাৎ শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এ কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, নানা ধরনের পাঁচ প্রকল্পে ২৩ কোটি ডলার দিতে চায় এডিবি। এডিবি টাকা নিয়ে প্রস্তুত, আমরা রেডি হলেই এটি ছাড় হয়ে যাবে। বন্যায় দেশে সড়ক, খাবার পানি ও রেলপথের অনেক ক্ষতি হয়েছে। এসব কাজে এডিবি আমাদের সহায়তা দেবে। তিনি আরও বলেন, এডিবি বাজেট সহায়তাও দেয়। এডিবি চায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সংস্কার হোক। এটি আমাদেরও প্রত্যাশা, কারণ এনবিআর সংস্কার না হলে আমাদের টার্গেট কিভাবে পূরণ হবে? গিন্টিং বলেন, বাংলাদেশকে সহায়তা দিতে আমরা প্রস্তুত। আমরা সবসময় উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশের পাশে থাকি। বন্যায় দেশের অনেক ক্ষতি হয়েছে। এসব অবকাঠামো সংস্কারে আমরা সহায়তা দেবো। আমরা সরকারকে বলেছি এনবিআর সংস্কারের জন্য।

ডলার সংকট কাটিয়ে উঠছে সরকার : গতকাল ৩০ মার্চ ডিপিডিসির কনফারেন্স রুমে ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্স বাংলাদেশ (এফইআরবি) প্রকাশনা ‘এমপাওয়ারিং বাংলাদেশ’-এর মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, এক সময় ডলারের বাজার কিছুটা ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছিল। বাংলাদেশ এখন ডলার সংকট কাটিয়ে উঠছে। তিনি বলেন, আমাদের অর্জন নিয়ে গর্ববোধ করি। পাকিস্তান ডেটথ কান্ট্রি, শেম কান্ট্রি। সেখান থেকে আমরা বেরিয়ে এসেছি। স্বাধীনতার সময় পাকিস্তানের চেয়ে আমাদের মাথাপিছু আয় ছিল অর্ধেক। ৫২ বছর পরে আজকে পাকিস্তানের চেয়ে ৫০ গুণ বেশি। আমাদের স্বাস্থ্য খাতের চেয়ে তারা পাঁচ বছর পিছিয়ে। আমি খয়ের খা হিসেবে নয়, তাত্ত্বিকভাবে এটি প্রমাণ করে দিতে পারি। বাংলাদেশের আর্থিকভাবে এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জীবনযাত্রার মানের উন্নয়ন হয়েছে।

 

Link copied!