ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

ঈদযাত্রায় স্বস্তি-ভোগান্তি

মহিউদ্দিন রাব্বানি

এপ্রিল ৮, ২০২৩, ০৫:২৬ এএম

ঈদযাত্রায় স্বস্তি-ভোগান্তি
  • প্রথম মিনিটেই ট্রেনের ওয়েবসাইটে ১২ লাখ টিকিটপ্রত্যাশীর প্রবেশ
  • আকাশপথে ঈদযাত্রায় ৭০ শতাংশ টিকিট বিক্রি
  • ঈদে রাস্তায় নামছে বিআরটিসির ৯০০ বাস

 

অনলাইনে টিকিট বিক্রি যাত্রীদের

ভোগান্তি দূর করবে

—নুরুল ইসলাম সুজন, রেলমন্ত্রী 

 

বাসের কোনো টিকিট কালোবাজারি হবে না

—বাস মালিক সমিতি

 আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বাস-ট্রেন-বিমানের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। তবে এবার শুরুতেই ভোগান্তি আর অনিশ্চয়তার চাপ যাত্রীদের চোখে-মুখে। তবে আশার দিক হলো অনলাইন ভিত্তিক টিকিট। এতে ভোগান্তি কমবে যাত্রীদের। এদিকে বাস টার্মিনাল বা নৌপথে যাত্রীদের ভিড় দেখা যায়নি। সড়ক, নৌ ও রেলপথের সীমাহীন ভোগান্তি এড়াতে উড়োজাহাজে ঝুঁকছেন অনেক যাত্রী। এই প্রথম ঈদুল ফিতরের জন্য ট্রেনের টিকিট শতভাগ অনলাইনে বিক্রি করা হচ্ছে। এই টিকিট পাওয়া না পাওয়া নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে প্রথম দিনেই। যাত্রীরা বলছেন, মুহূর্তের মধ্যেই প্রথম দিনের টিকিট বিক্রি শেষ। এই বছর অনলাইনে টিকিট বিক্রি হওয়ায় ইতিবাচক-নেতিবাচক  প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা গেছে যাত্রীদের মধ্যে। টিকিট পেয়ে কেউ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে। আবার কেউ-বা টিকিট না পেয়ে ক্ষোভ ঝেড়েছে।

প্রথমবারের মতো অনলাইন টিকিট হওয়াতে স্বল্প শিক্ষিত যাত্রীদের পড়তে হয় চরম ভোগান্তিতে। তারা জানিয়েছে অনলাইনে টিকিট কাটা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। আমরা আগের নিয়মেই টিটিক চাই। যদিও আগের নিয়মে কালোবাজারে চলে যায় বেশির ভাগ টিকিট। গতকাল প্রথমবারের মতো শতভাগ অনলাইনে ঈদের অগ্রিম টিকিট বিক্রি করল রেলওয়ে। অনলাইনে টিকিট বিক্রি হওয়ায় কমলাপুরে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনে চিরচেনা হাজার হাজার মানুষের ভিড় দেখা যায়নি। কাউন্টারগুলো ছিল একেবারেই ফাঁকা। সূত্র জানিয়েছে, ১৭ এপ্রিলের জন্য গতকাল সকাল ৮টায় অনলাইনে টিকিট বিক্রি শুরু হয়। ছয় মিনিটেই বিক্রি হয়ে যায় আট হাজার টিকিট। ঈদ উপলক্ষে ঢাকা থেকে প্রতিদিন বিক্রি হবে ২৫ হাজার ৭৭৮টি অগ্রিম টিকিট। 

এর মধ্যে দুপুর ৩টা নাগাদ ১৭ হাজারের বেশি টিকিট বিক্রি হয়েছে। ফলে আরও প্রায় আট হাজার টিকিট অবিক্রিত রয়েছে। এসব টিকিটের অধিকাংশই ঢাকা চট্টগ্রাম ও সিলেট রুটের।এ ছাড়া জয়দেবপুর থকে তিনটি বিশেষ ট্রেনের আরও তিন হাজার টিকিট বিক্রি হবে। সব মিলিয়ে ঢাকা ও জয়দবেপুর থেকে প্রতিদিন ২৮ হাজার ৭৭৮টি টিকিট বিক্রি হবে। রেলওয়ের টিকিট বিক্রির দায়িত্বে রয়েছে অনলাইন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান সওজ জেভি। প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী কর্মকর্তা সন্দ্বীপ দেবনাথ বলেন, শুরুর প্রথম মিনিটেই বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকিটিং ওয়েবসাইটে ১২ লাখ মানুষ প্রবেশ করে। বিকেল ৪টায় তিনি বলেন, এখনো আট হাজার টিকিট অবিক্রিত রয়েছে। এই সময়ে ওয়েবসাইডে হিট করেছেন ৮৭ লাখ মানুষ। অনলাইনে প্রবেশের এক মিনিটের মধ্যে যাত্রীরা টিকিট কাটার সুযোগ পেয়েছেন বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, সকাল ৮টা এক মিনিটে এক হাজার টিকিট বিক্রি হয়। ছয় মিনিটে বিক্রি হয় আট হাজার টিকিট। পশ্চিমাঞ্চলের সব ট্রেনের টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে।

চট্টগ্রামের এক ব্যক্তি জানিয়েছে, প্রথম দিনে পশ্চিমাঞ্চলের টিকিটের চাহিদা বেশি থাকায় শুরুর এক মিনিটের মধ্যে পশ্চিমের সব টিকিট শেষ হয়ে যায়। প্রথম দিনে ওয়েবসাইটে ঢুকতে কোনো সমস্যা হয়নি। সহজে প্রবেশ করতে পারছে মানুষ। ফলে কয়েক সেকেন্ডেই টিকিট পেয়ে যাচ্ছে। এ কারণে টিকিট ছাড়ার কয়েক মিনিটেই শেষ হয়ে যাচ্ছে। যেসব রুটে চাপ বেশি সেসব রুটের ট্রেনের টিকিট শুরুতেই শেষ হয়ে যায়। প্রথমবারের মতো এবার ঈদে শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রি প্রসঙ্গে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, ঈদের সময় কমলাপুরের যে পরিবেশ তৈরি হয় এটা রেলের জন্য খুবই বিব্রতকর হয়। তাই মানুষের দুর্ভোগ কমাতে অনলাইনে শতভাগ টিকিট দেয়া হবে। কমলাপুরে গিয়ে টিকিটের জন্য যাত্রীদের যেন ঘুরতে না হয় এবং তারা যেন বাসায় বসে টিকিট কাটতে পারে সে জন্য এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে, আজ ৮ এপ্রিল দেয়া হবে ১৮ এপ্রিলের টিকিট। এরপর ৯ এপ্রিল ১৯ এপ্রিলের, ১০ এপ্রিল ২০ এপ্রিলের এবং ১১ এপ্রিল বিক্রি হবে ২১ এপ্রিলের ঈদযাত্রার অগ্রিম টিকিট পাওয়া যাবে।

রেলপথ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ঈদের ফেরত যাত্রার টিকিট বিক্রি শুরু হবে ১৫ এপ্রিল থেকে। ওই দিন বিক্রি হবে ১৬, ১৭, ১৮, ১৯, ২৫, ২৬, ২৭, ২৮ ও ২৯ এপ্রিলের এবং ২০ এপ্রিলের বিক্রি হবে ৩০ এপ্রিলের ফেরতিযাত্রার টিকিট। এদিকে ঈদ উপলক্ষে আন্তঃদেশীয় মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেন ১৮ থেকে ২৭ এপ্রিল এবং মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন ২০ থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। তবে আন্তঃদেশীয় বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেন যথারীতি চলবে। এদিকে কমলাপুর রেল স্টেশনে সকালে দিয়ে দেখা গেছে একেবারেই ভিন্ন চিত্র। যা সত্যিই অবিশ্বাস্য। নেই মানুষের ভিড় কিংবা ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কেনার তাড়া। টিকিট পেতে হাহাকার অথবা দালালের খপ্পরও যেন উধাও। নেই টিকিট কালোবাজারির কোনো অভিযোগও। কমলাপুর স্টেশনজুড়ে বিরাজ করছে নীরবতা। এ যেন এক ভিন্ন কমলাপুর রেল স্টেশন। এ রেল স্টেশনেই টিকিট বিক্রির দুদিন আগে থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকত লাখো মানুষ।

ঈদে বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু : গতকাল শুক্রবার ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। এদিন সকাল থেকেই সংশ্লিষ্ট বাসের কাউন্টার থেকে টিকিট পাচ্ছেন যাত্রীরা। প্রথম দিন দেয়া হচ্ছে আগামী ১৬ এপ্রিলের টিকিট। তবে টার্মিনালগুলোতে তেমন ভিড় দেখা যায়নি। এর আগে, গত বুধবার সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেয় বাংলাদেশের বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। বাস মালিকেরা জানিয়েছেন, বাসের কোনো টিকিট কালোবাজারি হবে না। কারণ, বাস মালিকদের মনিটরিং টিমের সঙ্গে পুলিশ প্রশাসনও কাজ করছে। এ ছাড়া প্রশাসনের গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমেও টিকিট কালোবাজারি ও যাত্রী হয়রানি রোধ করা হবে। সরকার নির্ধারিত ভাড়ায় টিকিট বিক্রি করা হবে। বাসের অগ্রিম টিকিটের চাপ লক্ষ করা যায়নি সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে। গতকাল রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে সরেজমিন গিয়ে বিভিন্ন কাউন্টারে খোঁজ নিয়ে এই তথ্য জানা গেছে। জানা যায়, বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি চলবে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত। আর ট্রেনের টিকিট বিক্রি হবে পরের দিন ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত। ঈদে ফেরত যাত্রার টিকিট বিক্রি করা হবে ১৫ এপ্রিল থেকে।

শ্যামলী পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার জাহিদুল ইসলাম বলেন, অগ্রিম টিকিটের জন্য (১৬ এপ্রিল পর্যন্ত) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কোনো যাত্রী এখন পর্যন্ত আসেনি। ১৬ তারিখ পর্যন্ত পর্যাপ্ত টিকিট রয়েছে। হানিফ এন্টারপ্রাইজ কাউন্টার মাস্টার মো. সালাউদ্দিন বলেন, অগ্রিম টিকিটের জন্য এখন পর্যন্ত কোনো যাত্রী আসেনি, আপাতত অগ্রিম টিকিট কাটার কোনো প্রয়োজন নেই, কারণ এখন পর্যন্ত কোনো চাপ নেই। সৌদিয়া পরিবহনের সেলস ম্যানেজার শহিদুল ইসলাম বলেন, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অগ্রিম টিকিট নিতে একজন যাত্রীও আসেনি। এ ছাড়া ১৬ তারিখ পর্যন্ত টিকিটের কোনো কমতি নেই। আসলেই টিকিট মিলছে। এবার ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে ‘ঈদ স্পেশাল সার্ভিস’ চালু করবে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন (বিআরটিসি), চলবে ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত। আগামী ৯ এপ্রিল (রোবিবার) থেকেই মিলবে ঈদের অগ্রিম টিকিট।

বিআরটিসি চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম বলেন, ঈদ সার্ভিসে সারা দেশে বিআরটিসি ৯০০ বাস চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। প্রয়োজন হলে বাসের সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। ঢাকাসহ আশপাশের এলাকায় বিআরটিসির ৫৫০টি বাস চলবে উল্লেখ করে তিনি জানান, দক্ষিণের প্রায় সব জেলায় বিআরটিসির বাস চলাচল করবে। প্রতি বছরের মতো গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য এবারও বাস বুকিং দেয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরে বেশি গার্মেন্টস থাকায় সেসব এলাকার ডিপো থেকে বাস ভাড়া করা যাবে।

আকাশপথে ৭০ শতাংশ টিকিট বিক্রি : ঈদযাত্রায় ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে আকাশপথে যাত্রা। সড়ক, নৌ ও রেলপথের সীমাহীন ভোগান্তি এড়াতে উড়োজাহাজে ঝুঁকছেন যাত্রীরা। ঈদুল ফিতর সামনে রেখে এরই মধ্যে ৭০ শতাংশ টিকিট অগ্রিম বিক্রি হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে এয়ারলাইন্সগুলো। সময় যত ঘনিয়ে আসছে টিকিটের দামও তত বাড়ছে। চাহিদার শীর্ষে রয়েছে সৈয়দপুর, যশোর, রাজশাহী ও বরিশালের টিকিট। তবে আগ্রহ কম আন্তর্জাতিক রুটের। জানা গেছে, যাত্রী চাহিদা বাড়লে অভ্যন্তরীণ রুটের বিভিন্ন গন্তব্যে ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়ানোর প্রস্তুতি রয়েছে তাদের। ঈদের পাঁচ-সাতদিন আগে ফ্লাইটের এ চাহিদা বোঝা যাবে। এখন রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী উড়োজাহাজ সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, ইউএস-বাংলা, নভোএয়ার ও এয়ার অ্যাস্ট্রা দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। এয়ারলাইন্সগুলো দিনে প্রায় সাত হাজার যাত্রী বহন করে। এর মধ্যে আসন্ন ঈদুল ফিতরে নীলফামারীর সৈয়দপুর, যশোর, রাজশাহী ও বরিশালের টিকিটের চাহিদা বেশি। চট্টগ্রাম ও সিলেটে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় টিকিটের চাহিদা কিছুটা বাড়ছে। যাত্রী চাহিদা না থাকায় ঈদের আগে ফ্লাইট কমছে কক্সবাজারে। তবে ঈদের পর টানা এক সপ্তাহ কক্সবাজারে টিকিটের চাহিদা কয়েকগুণ হয়।

সতর্কতামূলক পদক্ষেপ চায় জাতীয় কমিটি : সম্ভাব্য দুর্ঘটনা ও জনদুর্ভোগ এড়াতে ঈদের যাতায়াত ব্যবস্থায় আগাম সতর্কতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি। এ জন্য ঈদযাত্রা শুরুর আগেই ভাঙাচোরা সড়ক সংস্কার ও গণপরিবহন সংকট নিরসনে সব রুটে বিআরটিসির বাস চালুর দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। এক বিবৃতিতে এতে ঈদের আগে-পরের ১০ দিন সব জাতীয় মহাসড়কে মোটরসাইকেলসহ তিন চাকাবিশিষ্ট ও স্থানীয়ভাবে তৈরি ইঞ্জিনচালিত যান নিষিদ্ধের দাবি জানায় সংগঠনটি।

Link copied!