ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad
ভোগান্তি বাড়ছে প্রবাসীদের

যথাসময়ে মিলছে না পাসপোর্ট

নুর মোহাম্মদ মিঠু

মে ১৮, ২০২৩, ১০:৪৮ এএম

যথাসময়ে মিলছে না পাসপোর্ট
  • ভারতের প্রবাসীরা পাসপোর্ট পান  ১০ দিনে
  • বাংলাদেশিদের লাগে দুই থেকে আড়াই মাস
  • কোনো কোনো দূতাবাস আবেদনই গ্রহণ করে না, করতে হয় পোস্ট অফিসে
  • দূতাবাস আবেদন নিলে ভোগান্তি কমবে —বলছেন প্রবাসীরা

৬০-৭০ শতাংশ প্রবাসীর তথ্যগত ভুলে সময়মতো পাসপোর্ট পাচ্ছেন না —পাসপোর্ট অধিদপ্তর

আবেদনের পর যথাসময়ে পাসপোর্ট না পাওয়ায় ভিসা জটিলতায় ভুগছেন প্রবাসীরা। মেয়াদোত্তীর্ণ পাসপোর্টে প্রবাসীরা পাচ্ছেন না ভিসা, হচ্ছেন অবৈধও। কারো কারো ক্ষেত্রে মালিকপক্ষ স্বেচ্ছায় ভিসা দিতে চাইলেও প্রবাসীরা পাসপোর্ট সংকটে সেই ভিসাও নিতে পারছেন না। পরবর্তীতে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে ভিসা নিতে হচ্ছে। ভিসা প্রাপ্তিতে কখনো কখনো দালালের খপ্পরেও পড়ছেন প্রবাসীরা। এতে অধিকাংশ সময়ই ভিসা ও টাকা দুটোই খোয়াতে হচ্ছে প্রবাসীদের। এ পরিস্থিতিতে  অবৈধভাবে অবস্থান করায় বিভিন্ন দেশ থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হয়ে দেশে ফেরত আসতে হচ্ছে অনেককেই। এ ভোগান্তি থেকে মুক্তি চান প্রবাসীরা। 

যদিও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা এসব বিষয়ে কথা বলতেই আগ্রহী নন। তবে দু’-একজনের সমস্যা নিয়ে লাইনে দাঁড়ানো লোকদের সঙ্গে কথা বলছেন তারা। প্রায় প্রতিদিনই পাসপোর্টের এমন সমস্যা নিয়ে প্রবাসীদের স্বজনদের দীর্ঘ লাইন দেখা যায় অধিদপ্তরে। সামগ্রিকভাবে প্রবাসীদের এসব সমস্যা বুঝতে চাইছেন না তারা। অধিকাংশ কর্মকর্তা সরাসরি প্রবাসীদের ওপর দায় চাপানোর মানসিকতাও পোষণ করছেন। তারা বলছেন, ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ প্রবাসী নিজেদের দেয়া তথ্যগত ভুলের কারণে সময়মতো পাসপোর্ট পাচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে কালক্ষেপণের জন্য পাসপোর্ট অধিদপ্তরের কিছুই করার নেই। পাসপোর্ট জমা দিয়ে হুবহু তথ্যের পাসপোর্ট ফেরত পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রবাসীদের কি ভুল রয়েছে এমন প্রশ্নেরও উত্তর পাওয়া যায়নি পাসপোর্ট অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে; বরং তাদের ভাবখানা এমন যেন— প্রবাসী মানেই কলুর বলদ, অশিক্ষিত। আর পাসপোর্ট প্রাপ্তিতে কালক্ষেপণের জন্য তাদের অজ্ঞতাই দায়ী। 

বাহরাইন, কুয়েত, সৌদি আরব ও দুবাইয়ের একাধিক প্রবাসী জানান, আগে আবেদন করার পর পাসপোর্ট পেতে সময় লাগত সর্বোচ্চ এক মাস। পরবর্তীতে সে সময় বেড়ে দাঁড়ায় এক মাস ১০ দিন। আর এখন দুই থেকে আড়াই, এমনকি তিন মাসেও পাসপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে না। এতে প্রবাসে অবস্থানরত প্রবাসীদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় ভুগতে হচ্ছে। এ জটিলতায় অনেকেই দেশে ফিরতেও বাধ্য হচ্ছেন। এ ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তির জন্য তারা পাসপোর্ট পাওয়ার ক্ষেত্রে সময় কমিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন। তারা পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের উদাহরণ টেনে বলছেন, ওই দেশের প্রবাসীরা নবায়নের আবেদন করার ১০ দিনের মধ্যেই স্বাভাবিকভাবে পাসপোর্ট পেয়ে যাচ্ছেন। ইমার্জেন্সি আবেদনের ক্ষেত্রে চার-পাঁচ দিনের মধ্যেই পাচ্ছেন পাসপোর্ট। অথচ আমাদের ক্ষেত্রে তা আড়াই থেকে তিন মাস লাগছে। পাসপোর্ট নবায়নের ক্ষেত্রে সময় ২০ দিনের মধ্যে নামিয়ে আনার দাবি জানিয়ে বাহরাইনে অবস্থানরত একাধিক প্রবাসী আমার সংবাদকে বলছেন, এখানে সবচেয়ে বিরক্তিকর বিষয় হচ্ছে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে আবেদন করা। পোস্ট অফিসে আবেদন করলে ডেলিভারির সময়ও উল্লেখ থাকে না। জানতে চাইলে তারা যখন পাসপোর্ট আসবে তখন পাবেন বলে জানায়। এসব বিষয়ে দূতাবাসে গেলে দূতাবাসের কর্মকর্তারাও সরাসরি পোস্ট অফিসে যেতে বলেন। দূতাবাস এসব আবেদন নেয় না বলে সাফ জানিয়ে দেয়। পাসপোর্ট সংক্রান্ত এসব কার্যক্রম দূতাবাসের মাধ্যমেই করতে চান প্রবাসীরা। দূতাবাসের মাধ্যমে হলেই প্রবাসীদের জন্য সুবিধা হয় বলেও জানান তারা। 

বাহরাইন প্রবাসী হাসান (ছদ্মনাম) আমার সংবাদকে জানান, গত দুই মাস আগে দূতাবাসে পাসপোর্ট নবায়নের জন্য যোগাযোগ করেন তিনি। কিন্তু দূতাবাস পাসাপোর্ট নবায়নের আবেদন গ্রহণ করে না বলে জানায়। যে কারণে তিনি যে এলাকায় থাকেন সেখানকার স্থানীয় পোস্ট অফিসের মাধ্যমে পাসপোর্ট নবায়নের আবেদন করেন। আবেদন শেষে একটি রশিদও দেয়া হয়। যে রশিদে ডেলিভারির দিন তারিখও উল্লেখ নেই। এরই মধ্যে তার ভিসার মেয়াদও শেষ। মালিকের সঙ্গে কথা বলেন ভিসার বিষয়ে। মালিক বিনা খরচে ভিসাও দিতে চেয়েছিলেন। তবে তিনি তার মালিককে সময়মতো পাসপোর্ট সরবরাহ করতে না পেরে নবায়নের জন্য আবেদন করেছেন জানালে মালিক তাকে ২০ দিনের মধ্যে পাসপোর্ট জমা দিতে বলেন। সেই পাসপোর্ট তিনি হাতে পান দুই মাস দুদিন পর। এখন মালিক তাকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ভিসা দিতে পারবেন না। জানতে চাইলে হাসান বলেন, এখন নতুন করে ভিসা পেতে হলে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা খরচ করতে হবে তাকে। তিনি বলেন, সময়মতো পাসপোর্ট না পাওয়ার কারণেই তাকে এ ভোগান্তি ও আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে।
বাহরাইনের আরেক প্রবাসী বিল্লাল (ছদ্মনাম)। 

তিনি আমার সংবাদকে জানান, তার পাসপোর্টের মেয়াদ প্রায় শেষের দিকে। এমতাবস্থায় তিনি টিউমার অপারেশনের জন্য দেশে আসতে চান। কিন্তু পাসপোর্ট নবায়নের জন্য জমা দিলেও নতুন পাসপোর্ট পেতে দেরি হওয়ায় পুরোনো পাসপোর্ট ব্যবহার করেই দেশে আসেন তিনি। দুই মাস ১৫ দিন হলেও তিনি বলছেন, এখনো তার দেয়া ঠিকানায় পাসপোর্ট এসেছে কি-না জানেন না তিনি। তবে তিনি শঙ্কা করছেন বাহরাইন যাওয়ার সময় দেশের বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনে ভোগান্তির শিকার হতে পারেন। যদিও তার সব কাগজপত্র ও ভিসার মেয়াদ ঠিক রয়েছে। 

ভিসা জটিলতার একই সমস্যায় ভুগছেন সৌদি আরব প্রবাসী হাসেম মিয়া। তিনি বলছেন, ভিসার মেয়াদ শেষ হলেও পাসপোর্টের জন্য ভিসা পাচ্ছেন না তিনি। যদিও পাসপোর্ট নবায়নের জন্য আবেদন করেছেন প্রায় আড়াই মাস আগে। তিনি জানতেও পারছেন না কবে নাগাদ পাসপোর্ট পাবেন এবং কবে ভিসা পাবেন। তিনিও দাবি জানিয়েছেন, প্রবাসীদের পাসপোর্ট নবায়নের ক্ষেত্রে যেন সময় আরও কমিয়ে আনা হয়। এমন সমস্যায় ভুগছেন প্রবাসে অবস্থানরত আরও অসংখ্য রেমিট্যান্স যোদ্ধা। তাদের অনেকেই সমস্যার কথা জানাতে পারছেন না কাউকে। দূতাবাসগুলোতেও এ নিয়ে সঠিক সমাধান পাচ্ছেন না বলে জানান তারা। দূতাবাসে যোগাযোগ করলে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশ থেকে পাসপোর্ট না পাঠালে তারা কীভাবে দেবেন। 

আবার অনেকেই বলছেন, পাসপোর্ট অনলাইন করা নিয়েও ভোগান্তি হচ্ছে প্রবাসীদের। পাসপোর্ট অনলাইন করতে বাড়তি খরচও করতে হচ্ছে তাদের। সামগ্রিকভাবে প্রবাসীদের এসব সমস্যা নিয়ে কথা বলতে গেলে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের পরিচালক (পাসপোর্ট, ভিসা ও পরিদর্শন) সাঈদুল ইসলাম বলেন, প্রবাসীদের পাসপোর্টের বিষয়ে এমনটি হওয়ার সুযোগ নেই। তবে প্রবাসীদের তথ্যগত ভুলের কারণে অনেক সময় সমস্যা হতে পারে। ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ প্রবাসী এ ধরনের সমস্যা তৈরি করছেন। এ ক্ষেত্রে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের কিছু করার নেই। আর এ ধরনের সমস্যায় পড়লে সংশ্লিষ্ট দূতাবাসে যোগাযোগের কথাও বলেন তিনি। যদিও দূতাবাসগুলো এসব সমস্যার দায় নিতে চায় না বলে জানান প্রবাসীরা। প্রবাসীদের এমন ভোগান্তি নিরসনের বিষয়ে জানতে চেয়ে মঙ্গলবার সরাসরি পাসপোর্ট অধিপ্তরের মহাপরিচালকের দপ্তরে গেলেও তাকে পাওয়া যায়নি। গতকাল একাধিকবার তার মুঠোফোনে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। মুঠোফোনে ক্ষুদে বার্তা পাঠালেও উত্তর দেননি তিনি।

 

Link copied!