ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

কোরবানির পশুর সংকট নেই দাম নিয়ে শঙ্কায় খামারিরা

বেলাল হোসেন

জুন ৬, ২০২৩, ০৮:২৪ এএম

কোরবানির পশুর সংকট নেই দাম নিয়ে শঙ্কায় খামারিরা
  •           কোরবানিযোগ্য পশু প্রায় এক কোটি ২৪ লাখ
  •          অবৈধ গবাদিপশুর অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কঠোর সরকার

রোগাক্রান্ত পশুর বিষয়ে সতর্ক প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তারা

—ডা. মো. এমদাদুল হক তালুকদার

মহাপরিচালক, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর

পবিত্র ঈদুল আজহার বাকি আর মাত্র তিন সপ্তাহ। গত কয়েক বছরের মতো এবারও দেশে কোরবানিযোগ্য গবাদিপশুর সংখ্যা চাহিদার তুলনায় বেশি আছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এবার রাজধানীসহ সারা দেশে প্রায় এক কোটি ২৪ লাখ গবাদিপশুর শেষ মুহূর্তের পরিচর্যা নিয়ে সাত লাখ খামারি ব্যস্ত সময় পার করছেন। পর্যাপ্ত পশু থাকলেও ঊর্ধ্বগতির গো-খাদ্যের বাজার মূল্যে পশুর প্রকৃত দাম তোলা নিয়ে শঙ্কায় খামারিরা।

সরকারি তথ্যানুযায়ী, গত বছর দেশে কোরবানিযোগ্য গবাদিপশু ছিল এক কোটি ২১ লাখ। পবিত্র ঈদুল আজহায় সারা দেশে মোট ৯৯ লাখ ৫০ হাজার ৭৬৩টি গবাদিপশু কোরবানি করা হয়। গতবারের চেয়ে এবার তিন লাখ বেশি রয়েছে কোরবানিযোগ্য পশু। এক কোটি ২৪ লাখ পশু সুস্থ ও সবল রাখার জন্য জেলা ও উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা সর্বক্ষণ বিষয়টি তদারকি করছেন।

অন্যদিকে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে সারা দেশের গবাদিপশু গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, দুম্বা, উটসহ অন্যান্য পশুর তথ্য সংগ্রহের কাজ ইতোমধ্যে শেষ করেছে। তাদের গোপন প্রতিবেদন প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে সমপ্রতি জমা দিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি জানানো হবে। এদিকে বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ ইমরান হোসেনের মতে, এ বছর দেশে কোরবানিযোগ্য  গবাদিপশুর সংখ্যা  প্রায় এক কোটি ১৮ লাখ। এছাড়া এক কোটি ১০ লাখের মতো পশু কোরবানি করা হতে পারে বলে তিনি ধারণা করছেন।

গো-খাদ্যের বাজার চড়া হওয়ায় এবার কোরবানিযোগ্য পশুর সঠিক মূল্য পাবে কিনা এ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছেন খামারিরা। বর্তমানে এক বস্তা গমের ভুসি বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ২৫০ টাকায়। কয়েক মাস আগে ছিল ৯৫০ থেকে এক হাজার টাকা। একইভাবে মাসকলাইয়ের ভুসির বস্তা বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৪০০ থেকে এক হাজার ৪৫০ টাকা। দুই থেকে তিন মাস আগেও এর দাম ছিল এক হাজার ১০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকা। এক বস্তা খৈল বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার থেকে তিন হাজার ২০০ টাকা। যা কয়েকমাস আগে দুই হাজার ৫০০ থেকে দুই হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি হতো। দাম বেড়েছে শুকনো খড়ের। বর্তমানে এক মণ খড় বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা। এ কারণে আসন্ন ঈদে গবাদিপশুর সঠিক মূল্য পাবে কিনা তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন খামারিরা। খামারিরা বলছেন, বিদেশ থেকে পশু আমদানি করলে তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। ক্ষুদ্র খামারিরা একবার ক্ষতিগ্রস্ত হলে তারা আর গবাদিপশু পালন নাও করতে পারেন। তাই চোরাইপথে বা পশু আমাদানি না করলে ক্ষুদ্র কৃষকরা লাভবান হবেন।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত রমজানের ঈদের পর প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে বিভাগ, জেলা ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা খামারিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে কোরবানির পশুর তালিকা তৈরি করেছেন। প্রতি বছর কোরবানি ঈদের জন্য প্রায় এক কোটি পশু দরকার। সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আসছে কোরবানিতে অনেকেই একাধিক পশু কোরবানি করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাই এবার প্রায় সোয়া কোটি পশু দরকার হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বগুড়া জেলার খামারি রাসেল হোসেন মুঠোফোনে এ প্রতিবেদককে জানান, তার ছোট খামারে কোরবানির জন্য ১৫টির বেশি গরু আছে। তবে পশু খাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় দুশ্চিন্তায় আছেন। ১৪শ টাকার পশু খাদ্য এখন ৩২শ থেকে ৩৩শ টাকা। আবার ওষুধের দামও আকাশছোঁয়া। তাই গরুর দাম এবার বেশি না পেলে অনেক লসে পরে যাবেন বলে জানান তিনি। রাসেল আরও জানান, বিদ্যুৎ সংকটের কারণে গরুগুলো নিয়ে দুশ্চিন্তার মধ্যে আছি। মোটাতাজা গরুগুলোকে সবসময় বাতাসে না রাখলে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে জানান। আরেক ব্যবসায়ী জানান, পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে চোরাইপথে পশু না আনা হলে ক্ষুদ্র খামারিরা লাভবান হবেন। তারা স্বাভাবিক খাবার দিয়েই পশু মোটাতাজা করছেন।

একজন পশু ডাক্তার জানান, রোজার ঈদের পর তারা নিজ নিজ এলাকার খামারিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ডাটা তৈরির কাজ করছেন। সমপ্রতি এই ডাটা চূড়ান্ত করা হয়েছে। ওই তালিকা প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন বলে তারা জানান। পশু চিকিৎসকরা জানান, শেষ মুহূর্তের মোটাতাজা করার কাজ এখন পুরোদমে চলছে। তবে কেউ পশু মোটাতাজা করতে ক্ষতিকর ওষুধ সেবন করাচ্ছে কি না প্রতিনিয়ত খোঁজ নেয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (প্রাণিসম্পদ-২ অধিশাখা) মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন আমার সংবাদকে বলেন, কোরবানিযোগ্য গবাদিপশুর সংখ্যা ডাটা আমাদের কাছে এসেছে। খুব শিগগিরই জানিয়ে দেয়া হবে। দেশে পর্যাপ্ত গবাদিপশু আছে। গত বছরের মতো এ বছরও দেশি গবাদিপশুর সংকট হবে না। তিনি আরও বলেন, বিদেশি গবাদিপশুর অনুপ্রবেশ ঠেকাতে গত মাসে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিবের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। বিষয়টা নিয়ে কাজ করছে মন্ত্রণালয়। সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে অবৈধ গবাদিপশুর অনুপ্রবেশ বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মো. এমদাদুল হক তালুকদার আমার সংবাদকে বলেন, জেলাভিত্তিক যে ডাটা সংগ্রহ করা হচ্ছে তাতে গরু, মহিষ, খাসি, ভেড়াসহ অন্যান্য প্রাণীর পৃথক সংখ্যা বেরিয়ে আসছে। সারা দেশে গত বছরের হিসাব মতে, ছয় লাখ ৮১ হাজার ৫৩২টি ছোট-বড় খামারি ছিলেন। এ বছর এই সংখ্যা কিছুটা বাড়তে পারে। অনেক বেকার যুবক ক্ষুদ্র খামার করেছেন। অনেকেই গরু কিনে কোরবানির জন্য পালন করছেন।

কোরবানির সময় সবাই যাতে রোগমুক্ত পশু কোরবানি দিতে পারে তার জন্য শহর থেকে জেলা ও উপজেলা পর্যন্ত ভ্যাটেরিনারি মেডিকেল টিম কাজ করছে। কোরবানির সময় পশু ডাক্তাররা কাজ করবেন। এ নিয়ে এ বছর আগে থেকে প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। রোগাক্রান্ত পশু যাতে কোরবানি দিতে না হয় তা নিয়ে প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তারা এখন কাজ করে যাচ্ছেন। কোরবানির হাটেও পশু চিকিৎসার মেডিকেল টিম থাকবে।

Link copied!