ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad
শিকড়ের টানে ছুটছে মানুষ

স্বস্তি-ভোগান্তির ঈদযাত্রা

সোহাগ বিশ্বাস

সোহাগ বিশ্বাস

জুন ২৮, ২০২৩, ১১:৫৭ পিএম

স্বস্তি-ভোগান্তির ঈদযাত্রা

* বাড়তি ভাড়া ও শিডিউল বিপর্যয়ে ভোগান্তির সঙ্গে বৃষ্টির বাগড়া
* তীব্র যানজট নেই কিন্তু গাড়ির চাপ বেশি
* খরচ কমাতে ট্রাক-পিকআপে ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রা 
* এক্সিট পয়েন্টে পশুহাটে বিড়ম্বনা
* অপরাধ দমনে কাজ করছে মোবাইল কোর্ট

ভোগান্তি মাথায় নিয়েই শিকড়ের টানে ছুটছে মানুষ। প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে ঢাকা ছাড়ছেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নাগরিক। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর বাস, ট্রেন ও নৌবন্দরগুলোতে ঘরমুখো মানুষের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে। এবারের ঈদে আগের মতো তীব্র যানজন নেই, তাই রাস্তায় দীর্ঘ অপেক্ষা করতে হচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে কিছুটা স্বস্তি মিললেও ঈদ মৌসুমে অতিরিক্ত ভাড়া থেকে রেহাই পাচ্ছেন না যাত্রীরা। 

তাই বাড়তি খরচ বাঁচাতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পিকআপ ও ট্রাকে যাত্রা করছেন অনেকে। আগের মতো প্রকট না হলেও শিডিউল বিপর্যয় রয়েছে। নির্ধারিত সময়ে বাস-ট্রেন না ছাড়ায় স্টেশনে ব্যয় হচ্ছে বাড়তি সময়। অপেক্ষায় নারী-শিশুদের ভোগান্তিতে বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে বৃষ্টি। যাত্রাপথে যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে মোবাইল কোর্ট। 

গতকাল গাবতলী বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও অনেকে বাসের টিকিট পাচ্ছেন না। বাস কাউন্টার থেকে বলা হচ্ছে, অগ্রিম টিকিট বিক্রি শেষ। তবে কিছু টিকিট ছিল— যা বিক্রি করা হয়ে গেছে। ফলে টিকিট না পেয়ে ভোগান্তিতে পড়ছেন যাত্রীরা। টিকিট সংকটে যাত্রীদের ভোগান্তির কথা জানতে চাইলে পরিবহন-সংশ্লিষ্টরা জানান, ঈদের বিশেষ অগ্রিম টিকিট ১২ জুন থেকে বিক্রি শুরু হয়। এরই মধ্যে ২ জুলাই পর্যন্ত টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। যাত্রীদের চাপ বাড়ছে। যারা আগে থেকে যোগাযোগ করেছেন, তাদের জন্য অগ্রিম বুকিংয়ের কিছু টিকিট আছে।

বাস কাউন্টারের কর্মীরা বলছেন, আগের বছরগুলোর তুলনায় যাত্রীর চাপ কম। পদ্মা সেতু হওয়ায় দক্ষিণবঙ্গের অনেক যাত্রী এখন সায়েদাবাদ হয়ে ঘরে ফিরছেন। তাই গাবতলী টার্মিনালে ভিড় তেমন নেই। যতটুকু আছে, ঈদ মৌসুমে এটা স্বাভাবিক। তবে  গতকাল সরকারি ছুটির প্রথম দিনে মোটামুটি চাপ ছিল গাবতলীতে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ঈদযাত্রায় বাড়তি ভাড়া ও বৃষ্টিতে ভোগান্তি নিয়ে বাড়ি যাচ্ছেন ঢাকা-চট্টগ্রাম ও সিলেট রুটের যাত্রীরা। গতকাল সকাল থেকে এ দুই মহাসড়কের মোড়ে মোড়ে ঘরমুখো মানুষের ঢল নামে। মহাসড়কে যানজট না থাকলেও গাড়ির চাপ রয়েছে দ্বিগুণ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দুই মহাসড়কের ১৬ জেলার মানুষ বাড়ির উদ্দেশে বের হন। 

এ কারণে বেলা যত গড়ায়, যাত্রী ও যানবাহনের চাপও তত বাড়ে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের অংশে ৩০ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে সাইনবোর্ড, শিমরাইল, কাঁচপুর, মদনপুর, কেওডালা, মোগরাপাড়াসহ মেঘনা টোলপ্লাজা পর্যন্ত বিভিন্ন মোড়ে বৃষ্টি উপক্ষো করেই যাত্রীদের অবস্থান নিতে দেখা গেছে। অগ্রিম টিকিট কেটেও যানবাহন না পেয়ে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষায় ছিলেন বেশিরভাগ যাত্রী।

একই অবস্থা ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কাঁচপুর থেকে আড়াইহাজারের পুরিন্দাবাজার পর্যন্ত। এ সড়কের যাত্রামুড়া, তারাব, বরাব, রূপসী, কর্ণগোপ, ভুলতার আশেপাশের এলাকায় এবং আলকা থেকে কিছুটা যানজট রয়েছে। এতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন নারী ও শিশুরা। বৃষ্টিতে ভিজে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকাসহ অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হয়েছে তাদের।

চট্টগ্রামমুখী যাত্রী লিটন মিয়া জানান, ভোর থেকেই বৃষ্টি হচ্ছে। বাস আসার কথা ৮টায়; কিন্তু আসেনি। কয়েক দফা বৃষ্টিতে ভিজলাম। একা থাকলে কোথাও না কোথাও দাঁড়াতে পারব। কিন্তু সঙ্গে বউ-বাচ্চা আছে, তারা কী করবে। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, প্রতিবারই মহাসড়কে ভোগান্তি নিয়ে বাড়ি ফিরতে হয়। শিমরাইল এলাকায় কথা হয় রাজু আহমেদের সঙ্গে। তিনি যাবেন নোয়াখালী। বলেন, এমনিতেই ভোগান্তি; তার ওপর আবার টিকিট কাটতে হলো ১০০ টাকা বেশি দিয়ে।

চালকদের অভিযোগ, গাবতলী-যাত্রাবাড়ীসহ ঢাকার প্রবেশ ও বের হওয়ার পথগুলোতে পশুহাট বসায় এসব এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। নির্ধারিত সময়ে বাস ছেড়ে গেলেও ঢাকা থেকে বের হতেই অনেক সময় লেগে যাচ্ছে। আবার ঢাকার বাইরে থেকে যেসব বাস আসছে, সেগুলোও যথাসময়ে টার্মিনালে পৌঁছাতে পারছে না পশুহাটের ভিড়ের কারণে। তাই যাত্রীদের বাসের অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। এর সঙ্গে গতকাল সকাল থেকেই বৃষ্টি ঝরতে থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েন নারী ও শিশুরা। 

এদিকে, যাত্রীদের চাপ বেশি থাকলেও কমলাপুর রেলস্টেশনে সুশৃঙ্খল পরিবেশ ছিল। টিকিটবিহীন যাত্রীদের ক্ষেত্রে এবার কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। কোনো যাত্রী বিনাটিকিটে স্টেশন এলাকায় প্রবেশ করতে পারেননি। গতকাল প্রায় ৬০ হাজার মানুষ ট্রেনযোগে বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন। কমলাপুর স্টেশন থেকে লোকাল-আন্তঃনগর মিলে ৫২ জোড়া ট্রেন চলাচল করছে। এছাড়াও রয়েছে একজোড়া ঈদ স্পেশাল ট্রেন। আর বিমানবন্দর স্টেশন থেকে আরও দুই জোড়া ঈদ স্পেশাল ট্রেন চলাচল করেছে গতকাল থেকে। তবে এবারও রেলে শিডিউল বিপর্যয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

ঈদযাত্রার চতুর্থ দিনে এসে সঠিক সময়ে ট্রেন ছাড়ার প্রক্রিয়া ধরে রাখতে পারেনি বাংলাদেশ রেলওয়ে।রেলসূত্র জানিয়েছে, গতকাল দিনের প্রথম আন্তঃনগর ট্রেন ধূমকেতু এক্সপ্রেস প্রায় দুই ঘণ্টা দেরিতে রাজশাহীর উদ্দেশে কমলাপুর রেলস্টেশন ছেড়ে গেছে। নীলসাগর এক্সপ্রেস ৬টা ৪০ মিনিটে স্টেশন ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও সেটিও দুই ঘণ্টা ৯ মিনিট দেরিতে ছেড়ে যায়। সুন্দরবন এক্সপ্রেস ৮টা ১৫ মিনিট ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও সেটি রেলস্টেশন ছাড়ে ৯টা ১০ মিনিটে। ট্রেনগুলো ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনে আসতে বিলম্ব করছে; ছাড়তে দেরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার আফছার উদ্দিন।

গতকাল সকাল থেকেই ঢাকা নদীবন্দর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে যাত্রীর চাপ ছিল। সংশ্লিষ্টরা জানান, নিয়মিত চলাচলকারী লঞ্চগুলোর কেবিনের অগ্রিম টিকিট শেষ হয়ে গেছে। ফলে বাড়ানো হয়েছে লঞ্চের সংখ্যা। লঞ্চ বাড়ায় এখনও টিকিট সংগ্রহ করতে পারছেন যাত্রীরা। কয়েকটি রুটে যাত্রীর চাপ থাকলেও ঢাকা-বরিশাল রুটে চাপ কিছুটা কম। এদিকে যাত্রী ভোগান্তি কমাতে বাসস্ট্যান্ডগুলোর সামনে অবস্থান নিয়েছে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত।

 

Link copied!