ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

হাসপাতালে ওষুধ কোম্পানি প্রতিনিধিদের দৌরাত্ম্য

সাহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া

সাহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া

নভেম্বর ৮, ২০২৩, ১২:৩৫ এএম

হাসপাতালে ওষুধ কোম্পানি প্রতিনিধিদের দৌরাত্ম্য
  • বেশিরভাগই মানছেন না ডাক্তারের সঙ্গে সাক্ষাতের নিয়ম
  • প্রেসক্রিপশন দেখা নিয়ে রোগীর সঙ্গে ঘটছে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা
  • বিশেষজ্ঞরা বলছেন কোম্পানির লক্ষ্যপূরণে অনেকে বেপরোয়া

ওষুধ কোম্পানি থেকে রোগীদের প্রেসক্রিপশনে কী ওষুধ লেখা হয়েছে এটা দেখতে কাউকে বলা হয় না

—এসএম শফিউজ্জামান
মহাসচিব, বাংলাদেশ ওষুধশিল্প সমিতি

প্রেসক্রিপশনের ছবি তুলে নিলে রোগীর গোপনীয়তা নষ্ট হয়। এটা অনৈতিক কাজ। কোম্পানির উচিত এসব বিষয়ে কঠোর হওয়া

—ডা. ফয়জুল হাকিম
আহ্বায়ক, জনস্বাস্থ্য সংগ্রাম পরিষদ

ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজে আশিক রহমান এসেছেন তার ছোট ছেলেকে নিয়ে ডাক্তার দেখাতে। ডাক্তার দেখানো শেষ হতেই তিনি যখন গেট থেকে বের হতে যাবেন তখনই তাকে ঘিরে ধরলেন কয়েকজন। তারা দেখতে চান ডাক্তার তার ছেলের জন্য কি ওষুধ লিখেছেন। শুধু দেখেই তারা ক্ষান্ত নন, তুলে নিয়েছেন প্রেসক্রিপশনের কয়েকটি ছবি। এদিকে আশিক রহমান ছেলেকে সামলাতে ব্যস্ত আর তার হাতে থাকা প্রেসক্রিপশন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধির হাতে। পাঁচ মিনিট পর তিনি তার ছেলেকে নিয়ে গেট থেকে বের হতে পারলেন। তার সাথে কথা হয় আমার সংবাদের এ প্রতিবেদকের। তিনি অনেকটা বিরক্ত হয়ে বললেন, ‘এটা আর নতুন কি। ওষুধ কোম্পানির লোকজন তাদের কোম্পানির ওষুধ ডাক্তার লিখেছেন কিনা এটা দেখতে চেয়েছেন। আমি ছেলেকে নিয়ে ওষুধ কিনে বাসায় যাবো। এমন পরিস্থিতিতে আমি বিব্রত।’

রাজধানীর আগারগাঁও এলাকায় পঙ্গু হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন কয়েকজন। কেউ প্রেসক্রিপশন হাতে নিয়ে এলেই তাকে ঘিরে ধরেন ডাক্তার কি ওষুধ লিখেছেন তা দেখার জন্য। বহির্বিভাগ থেকে নিজের স্ত্রীর ভাঙা হাত দেখিয়ে রিকশায় উঠবেন এমন সময় জয়নাল আবেদীনের হাত থেকে প্রেসক্রিপশন নিয়ে ছবি তুলে নিলেন কয়েকজন। জয়নাল আবেদীনের সাথে কথা বলেন আমার সংবাদের এ প্রতিবেদক। 

তিনি বলেন, ‘এখানে আমি চারদিন চিকিৎসা নিতে এসেছি স্ত্রীকে নিয়ে। চারদিন একই পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছি। অসুস্থ রোগী সঙ্গে থাকলে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি এমন আচরণ না করলেও পারে।’ জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের ডাক্তারের রুমের সামনে রোগীদের পাশেই দাঁড়িয়ে আছেন একজন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি। তিনি ঢুকতে চান ডাক্তারের রুমে। তার হাতে রয়েছে ওষুধের স্যাম্পলসহ কিছু গিফট সামগ্রী। কিন্তু ডাক্তারের রুমের সামনের স্টাফ তাকে কোনোভাবেই ভেতরে যেতে দিচ্ছেন না। এ নিয়ে স্টাফের সঙ্গে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধির বাধে বাগবিতণ্ডা। একপর্যায়ে ডাক্তারের নির্দেশে বিষয়টি সমাধান হয়।

রাজধানীর প্রায় সবকয়টি সরকারি ও বিশেষায়িত হাসপাতাল ঘুরে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের এমন দৌরাত্ম্য দেখা যায়। হাসপাতালগুলোতে একটা নির্দিষ্ট সময়ে ডাক্তারের সাথে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধির দেখা করার সময় দেয়া থাকলেও বেশিরভাগই মানছেন না এ নিয়ম। কখনও কখনও হাসপাতাল স্টাফদের সাথে ডাক্তারের রুমে প্রবেশ নিয়ে ঘটে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। রোগীর প্রেসক্রিপশন দেখতে গিয়ে রোগীর সাথেও সৃষ্টি হয় বিব্রতকর পরিস্থিতির। ওষুধ কোম্পানি প্রতিনিধিদের কাজের ধরন ও ডাক্তারের সাথে সাক্ষাতের বিষয়ে আমার সংবাদের এ প্রতিবেদক কথা বলেন দেশের প্রথম সারির একটি ওষুধ কোম্পানির সেলস ম্যানেজারের সঙ্গে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, ওষুধ কোম্পানি প্রতিনিধিদের প্রধান কাজ হলো ডাক্তারের সাথে দেখা করে তার কোম্পানির ওষুধের কার্যকারিতা বা নতুন কোনো ওষুধ এলে সে বিষয়ে ডাক্তারকে অবহিত করা। 

এ কাজটি তাকে অবশ্যই হাসপাতালের নিয়ম অনুযায়ী করতে হবে। কোম্পানির সেলস টার্গেটের বিষয়ে তিনি বলেন, সব কোম্পানিই চায় তার ওষুধ বাজারে বেশি বিক্রি হউক। টার্গেট বলতে সবার একটি লক্ষ্যমাত্রা থাকে। লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সবাই চেষ্টা করে। প্রেসক্রিপশনের ছবি তোলার বিষয়ে তিনি বলেন, কেউ কেউ প্রেসক্রিপশনের ছবি তুলে নিজের ফিল্ড ওয়ার্কের প্রমাণ রাখতে চায় তার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার কাছে। ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের নির্দেশনার বিষয়ে আমার সংবাদের এ প্রতিবেদক কথা বলেন বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির মহাসচিব এস এম শফিউজ্জামানের সাথে। 

তিনি বলেন, ‘ওষুধ কোম্পানি থেকে রোগীদের প্রেসক্রিপশনে কি ওষুধ লেখা হয়েছে এটা দেখতে কাউকে বলা হয় না। ওষুধ কোম্পানি প্রতিনিধিদের প্রেসক্রিপশনের ছবি তুলে আনতে বলা হয় না। কেউ তুলে থাকলে তার নিজের ক্রেডিট নিতে তোলে’।সরকারি হাসপাতালগুলোতে বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ওষুধের সুলভমূল্যে নির্ধারণ করার লক্ষ্যে আন্দোলন করছে জনস্বাস্থ্য সংগ্রাম পরিষদ। 

সংগঠনটির আহ্বায়ক ডা. ফয়জুল হাকিম ওষুধ কোম্পানি প্রতিনিধিদের আচরণের বিষয়ে বলেন, ‘একজন রোগী যখন ডাক্তারের রুম থেকে বের হন তখনই তারা প্রেসক্রিপশনের ছবি তুলে নেয়। এতে রোগীর গোপনীয়তা নষ্ট হয়। এটা অনৈতিক কাজ। ওষুধ কোম্পানি যদি এমন নির্দেশ দিয়ে থাকে তাহলে উচিত এসব কর্মকাণ্ড বন্ধ করা। আর যদি কোম্পানির কোনো নির্দেশনা না থাকে তাহলে উচিত এসব বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের কঠোর হওয়া।’
 

Link copied!