ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

হার্টের রিং নিয়ে জটিলতা

সাহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া

সাহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া

ডিসেম্বর ২২, ২০২৩, ১০:৫৫ পিএম

হার্টের রিং নিয়ে জটিলতা

হার্টের চিকিৎসায় বহুল ব্যবহূত পদ্ধতি হচ্ছে স্টেন্ট বা রিং। কারো হূৎপিণ্ডে রক্ত সঞ্চালনে ব্লক বা বাধার সৃষ্টি হলে ডাক্তার তাকে এক বা একাধিক রিং পরানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন। সাধারণত বাংলাদেশে ইউরোপ-আমেরিকা থেকে এগুলো আমদানি করেন ব্যবসায়ীরা। যার মূল্য তালিকা বিভিন্ন হাসপাতালে টানানো থাকে। রোগীর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ তালিকা থেকে বেছে নেয়া রিং রোগীর হার্টে প্রতিস্থাপন করেন ডাক্তাররা। মান, প্রকার ও দেশ ভেদে রিংয়ের মূল্যও ভিন্ন হয়ে থাকে। রিংয়ের মূল্য নির্ধারণ আগে অনেকাংশে সরবরাহ করা প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর থাকলেও সামপ্রতিক সময়ে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর হার্টের রিংয়ের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য সংক্রান্ত নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে, যাতে সব ধরনের রিংয়ে আগের মূল্যর তুলনায় সর্বনিম্ন ১৩ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৪১ হাজার টাকা পর্যন্ত দাম কমানো হয়েছে। ঔষধ প্রশাসনের এই মূল্য নির্ধারণের পরই সৃষ্টি হয়েছে রিং সরবারহকারী প্রতিষ্ঠান ও ঔষধ প্রশাসনের মধ্যে বিরোধ।

বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৩৫ শতাংশ রিং আমদানি করা হয়। বাকি ৬৫ শতাংশ আমদানি করা হয় ইউরোপের বিভিন্ন দেশ, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও ভারত থেকে। নতুন মূল্য তালিকায় দেখা যায়, এই রিংগুলো আমদানি করতে অনুমতি পেয়েছে ২৭টি কোম্পানি। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের রিংয়ের দাম ধরা আছে ২০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে এক লাখ ৪০ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত। আর অন্যান্য রিংয়ের মূল্য সর্বনিম্ন ১৪ হাজার টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ আয়ারল্যান্ডের রিং আছে এক লাখ ৪০ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত। তবে প্রতিটি দেশের রিংয়েই আলাদা আলাদা ক্যাটাগরি ভাগ করা থাকে। আর ক্যাটাগরি অনুযায়ী দাম ওঠানামা করে। রিংয়ের নতুন মূল্য নির্ধারণের পর থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল, জাতীয় হূদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতাল ও ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনে রিং সরবারহ না করার ঘোষণা দিয়েছে ইউরোপ থেকে রিং আমদানি করা বেশির ভাগ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। তবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে রিং আমদানি করা প্রতিষ্ঠানগুলোর দাবি তারা রিং সরবরাহ স্বাভাবিক রাখছেন। যুক্তরাষ্ট্র বাদে ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশ থেকে রিং আমাদানিকারকদের মধ্যে একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর দেশে ২৭টি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের জন্য স্টেন্টের (রিং) সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য নির্ধারণ করেছে। 

অধিদপ্তরের প্রকাশিত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এই দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে জাতীয় নীতিমালা বা মার্কআপ ফর্মুলা অনুসরণ করা হয়েছে মাত্র তিন প্রতিষ্ঠানের বেলায়। যুক্তরাষ্ট্রের এই তিন প্রতিষ্ঠানের একই মানের স্টেন্টের মূল্য দাঁড়িয়েছে ভারতের প্রায় তিনগুণ। আমদানিকারক বাকি ২৪ প্রতিষ্ঠানের স্টেন্টের মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে মার্কআপ ফর্মুলা মানা হয়নি। তার পরও যে দাম ঠিক করে দেয়া হয়েছে তা ভারতে চলমান দামের চেয়ে সর্বনিম্ন তিন হাজার টাকা থেকে তিনগুণ পর্যন্ত বেশি। কিন্তু ভারতের তৈরি দুটি ব্র্যান্ডের স্টেন্টের দাম ধরা হয়েছে ভারতে যে দামে বিক্রি হয় তার চেয়ে ১১ হাজার টাকা কম।

১৬ ডিসেম্বর থেকে হার্টের রিংয়ের মূল্য নির্ধারণ কার্যকর হওয়ার পর বিষয়টি গড়িয়েছে হাইকোর্ট পর্যন্ত। গত ১৮ ডিসেম্বর থেকে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের বৈষম্যমূলক দামে অসন্তুষ্ট হয়ে ওশান লাইফ লিমিটেডসহ ১১টি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের পক্ষে হাইকোর্টে রিট করা হয়। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ সাতটি প্রতিষ্ঠান ও একজন ব্যক্তিকে রিটে বিবাদী করা হয়। দুই সপ্তাহের মধ্যে বিবাদীদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। এদিকে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বলছে, নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে হার্টে বসানোর রিং বিক্রি এবং অনর্থক অস্ত্রোপচার মানবাধিকারের লঙ্ঘন। রিংয়ের মূল্য বৃদ্ধি সাধারণ মানুষের বাঁচার অধিকার ক্ষুণ্ন হওয়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে, যা মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। মেডিকেল ডিভাইস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের আহ্বায়ক মো. আনোয়ার হোসেন আমার সংবাদকে বলেন, সব পণ্যের বিভিন্ন প্রকারভেদ রয়েছে। মান ও প্রকার অনুযায়ী পণ্যের দামেও তারতম্য হয়। ওষুধ ও ওষুধ জাতীয় পণ্য মূল্য নির্ধারণের জন্য ঔষধ প্রশাসনের একটি মার্কআপ ফর্মুলা রয়েছে।  সে মার্কআপ ফর্মুলা অনুযায়ী তারা মূল্য নির্ধারণ করে থাকে। আমদানিকার ও সরবরাহকারীর সাথে বসে আলোচনার মাধ্যমে মূল্য নির্ধারণ করলে জরুরি পণ্যটি ভোক্তার কাছে সহজলভ্য করা যাবে।

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মুখপাত্র উপপরিচালক মো. নূরুল আলম আমার সংবাদকে বলেন, হার্টের রিংয়ের ব্যবহার ও ক্যাটাগরি নিয়ে মানুষের মধ্যে স্পষ্ট কোনো ধারণা ছিল না। আমরা ২০১৭ সাল থেকে হার্টের রিংয়ের বিষয়ে একটি গাইডলাইন দিয়ে আসছি। হার্টের রিংয়ের মূল্য নিয়ে যে নৈরাজ্য চলছিল তা ঠেকানোর জন্য হার্ট বিশেষজ্ঞসহ ১৩ সদস্যের  কমিটি করা হয়। সরবারহকারীরা ৪৫ শতাংশ দাম বেশি নিচ্ছিল। যা আমাদের দেশের সাথে কোনোভাবেই মানানসই নয়। পাশ্ববর্তী দেশগুলোতে হার্টের রিংয়ের দাম কম বলে অনেকে সেখানে যান হার্টের রিং পরাতে। এভাবে দেশের টাকা বাইরে চলে যাচ্ছে। আমাদের আমদানিকারক, সরবরাহকারী ও ভোক্তার কথা বিবেচনা করেই বিশেষজ্ঞ কমিটি হার্টের রিংয়ের মূল্য নির্ধারণ করেছে।
 

Link copied!