ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন

শেষ মুহূর্তে সহিংসতা প্রাণহানি

সৈয়দ সাইফুল ইসলাম

জানুয়ারি ৫, ২০২৪, ১২:২৫ এএম

শেষ মুহূর্তে সহিংসতা প্রাণহানি
  • দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলা ভাঙচুর আগুন হতাহত
  • প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা
  • প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ালেন মাইজভাণ্ডারীও
  • নির্বাচন নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে জাতিসংঘ
  • ভোট সুষ্ঠু ও গণনা নিয়ে সংশয় জাতীয় পার্টির  

প্রচার-প্রচারণা শেষ হচ্ছে আজ সকাল ৮টায়। তফসিল অনুযায়ী, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ ৭ জানুয়ারি। প্রচার-প্রচারণা শেষ সময় এসে নির্বাচনি সহিংসতায় দুজনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। গতকাল দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলার ঘটনায় সাংবাদিকসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। প্রচারণার শেষ মুহূর্তে এসে জাতীয় পার্টির আরও একাধিক প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। অন্যদিকে, ১৪ দলের জোট শরিক তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যানও ভোটের মাঠ ছেড়েছেন। এদিকে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো ভোট বর্জন করায় প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠকে বিদেশি কূটনীতিকরা জানতে চেয়েছেন— ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে জোর করা হচ্ছে কি-না। 

অপরদিকে, জাতিসংঘের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে সংস্থাটির মহাসচিবের মুখপাত্র জানিয়েছেন, তারা নির্বাচনকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। অন্যদিকে, আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা করে ভোটে থাকা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান সুষ্ঠুভাবে ভোট গণনা ও ফলাফল নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। 

নির্বাচনি সহিংসতায় দুজনের প্রাণহানি : নির্বাচনি সহিংসতায় আহত দুজন মারা গেলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ  হাসপাতালে। মুন্সীগঞ্জে দুর্বৃত্তির গুলিতে ডালিম সরকার (৩০) নামে এক আওয়ামী লীগ সমর্থক আহত হন, অপর দিকে পিরোজপুরে দুর্বৃত্তের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে জাহাঙ্গীর হোসেন (৫৫) নামে আরেক এমপি প্রার্থীর সমর্থক আহত হন। আহতদের ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে  এলে দুজনেরই মৃত্যু হয়। নিহত ডালিম সরকার মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার মুন্সীকান্দি গ্রামের নূর হোসেন সরকারের ছেলে। ঢাকা মেডিকেলের মর্গে নিহত ডালিমের নানাশ্বশুর মো. কামাল কাজী জানান, বুধবার স্থানীয় নৌকার প্রার্থী মৃণাল কান্তি দাসের জনসভায় যান ডালিম। সেখান থেকে ফিরে নিজ এলাকাতেও রাতে নৌকার মিছিল করেন। এরপর রাত ১২টার দিকে ডালিম, মুন্না, সোহেল ও কাদের মিলে রাস্তার পাশে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন। এমন সময় প্রতিপক্ষের ২০-২৫ জনের একদল যুবক এসে এলোপাতাড়ি গুলি করে। এতে ডালিমের পাঁজরের বাম পাশে দুটি ও সোহেলের একটি গুলি লাগে। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এলে বৃহস্পতিবার ভোর ৪টার দিকে তার মৃত্যু হয়। ডালিম পেশায় একজন কৃষক, তার এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। 

এদিকে নিহত জাহাঙ্গীরের বড় ভাই মোজাম্মেল হক জানান, তাদের বাড়ি পিরোজপুরে মঠবাড়িয়া উপজেলার বাদুরা গ্রামে। বাবার নাম তোতাম্বর। মেরুখালী ইউনিয়ন এর ৭ নং ওয়ার্ড আ.লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর। স্থানীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. শামীম শাহনেওয়াজের (কলারছড়ি) সমর্থক জাহাঙ্গীর। গত বুধবার বিকেল ৪টার দিকে বাড়ি থেকে পায়ে হেঁটে বাজারে নির্বাচনি ক্যাম্পে যাচ্ছিলেন। তখন প্রতিপক্ষের সমর্থকরা পেছন থেকে তার মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। আহত অবস্থায় তাকে মঠবাড়িয়া সদর হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। কয়েকটি হাসপাতাল ঘুরে তাকে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেন।

হামলা আগুন হতাহত : জামালপুরে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ছয়টি প্রচারকেন্দ্রে হামলা-ভাঙচুর ও তিনটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করেন স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা। এ সময় পুলিশের লাঠিচার্জে পাঁচ সাংবাদিকসহ ১৫ জন আহত হয়েছেন। একই সময় স্বতন্ত্র প্রার্থীর দুই সমর্থককে আটক করে পুলিশ। গত বুধবার রাতে জামালপুর সদরের মহেশপুর কালিবাড়িতে স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম রেজনুর ঈগল প্রতীকের প্রচারকেন্দ্রে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। একই সময় সদরের গোলাপ আলী ও খড়খড়িয়া নির্বাচনি প্রচারকেন্দ্রসহ মোট ছয়টি কেন্দ্রে হামলা-ভাঙচুর করা হয় বলে দাবি করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজনু। এদিকে নৌকা ও ঈগল প্রতীকের পাল্টাপাল্টি সমাবেশ ঝিনাইদহ জেলা শহরের পৃথক দুই স্থানে ১১৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে রাত ৭টা পর্যন্ত এ আদেশ বলবত ছিল।

প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা : নানা অভিযোগ ও অসন্তোষে গত ৩ জানুয়ারি বুধবার সিলেট এবং চুয়াডাঙ্গার জাতীয় পার্টির তিনজন প্রার্থী নির্বাচন না করার ঘোষণা দিয়েছেন। এদিকে, লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনে ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকায় জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থী রাকিব হোসেন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। গতকাল সন্ধ্যায় জেলা শহরের ঝুমুর এলাকায় নির্বাচনি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ ঘোষণা দেন। একে একে প্রার্থীদের নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দলটির জন্য ‘অশনি সংকেত’ কি-না, সে প্রশ্ন উঠেছে রাজনৈতিক মহলে। শীর্ষ নেতাদের অসহযোগিতা, নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে সংশয়, ভোটের মাঠে হুমকি ও চাপের কথা জানিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থীরা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জাপার প্রার্থীদের নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের আগ পর্যন্ত চলতে পারে। তারা মনে করছেন, ভোটের মাঠে নানা ধরনের প্রতিকূলতায় পড়ে জাপার প্রার্থী অনেকে হতাশায় পড়েছেন।

প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ালেন মাইজভাণ্ডারীও : বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনে তরিকত ফেডারেশনের প্রার্থী সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ফটিকছড়ি উপজেলার মাইজভাণ্ডার শরিফে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সিদ্ধান্তের কথা জানান। তিনি বলেন, তিনি এ আসন থেকে চার মেয়াদে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন এবং এর মধ্যে তিনটি মেয়াদে নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত হন, তাই তিনি মনে করেন, তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে ভোটব্যাংক বিভক্ত হবে যা ‘নৌকা’ প্রতীকের প্রার্থীর বিজয়ে প্রভাব ফেলতে পারে। তাই নৌকার প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত করতে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

ভোট গণনা সুষ্ঠু হবে কি-না তা নিয়ে সংশয় : এখন পর্যন্ত নির্বাচনের পরিবেশ ভালো আছে, তবে ভোটাররা কেন্দ্রে আসবেন কি-না বা ভোট দিতে পারবেন কি-না আর ভোট দিলেও সঠিকভাবে গণনা করে ফলাফল সুষ্ঠু হবে কি-না তা নিয়ে সংশয় আছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও রংপুর-৩ আসনের প্রার্থী গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের। গতকাল দুপুরে রংপুর মহানগরীর সেনপাড়ার স্কাই ভিউ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে জোর করা হচ্ছে কি-না, জানতে চেয়েছেন কূটনীতিকরা : প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বিদেশি কূটনীতিকদের বলেছেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) ভোটারদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগে উৎসাহিত করছে, কিন্তু তাদের ভোটকেন্দ্রে যেতে জোরারোপ করছে না। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বিদেশি কূটনীতিকদের বলেছেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) ভোটারদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগে উৎসাহিত করছে, কিন্তু তাদের ভোটকেন্দ্রে যেতে জোরারোপ করছে না। নির্বাচন বর্জনকারী দলগুলো ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে মানা করেছে কি-না, সে বিষয়ে তিনি নিশ্চিত নন বলে জানান। ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের দিন ভোটারদের জোরপূর্বক কেন্দ্রে নিতে সরকার বা ইসির এমন কোনো উদ্যোগ আছে কি-না, এক বিদেশি কূটনীতিক তা জানতে চাইলে এ মন্তব্য করেন সিইসি। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ঢাকায় অবস্থানরত বিদেশি কূটনীতিকদের ব্রিফ করে নির্বাচন কমিশন। সিইসি বলেন, ‘বিদেশি কূটনীতিকরা বিভিন্ন সময় ইসি পরিদর্শন করেছেন, বৈঠক করেছেন। সে সময় তারা অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের কথা বলেছেন।’

নির্বাচন নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে জাতিসংঘ : বাংলাদেশের নির্বাচনপ্রক্রিয়া নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে জাতিসংঘ। বিশ্ব সংস্থাটির আশা, স্বচ্ছ ও সুসংগঠিত প্রক্রিয়ায় এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। গত বুধবার জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সহযোগী মুখপাত্র ফ্লোরেন্সিয়া সোতো নিনো নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন। জাতিসংঘের মহাসচিবের মুখপাত্রের কার্যালয়ে এ ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। ব্রিফিংয়ে একজন সাংবাদিক বলেন, বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের ৩০০টি আসনের জন্য ২৮টি রাজনৈতিক দলের এক হাজার ৯৭০ জনের বেশি প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরই মধ্যে ৪০০ বিদেশি পর্যবেক্ষক বাংলাদেশে পৌঁছেছেন। অথচ এমন অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে অংশ না নিয়ে প্রধান বিরোধী দল (মাঠের) বিএনপি বরং তা বর্জন করেছে। এ ব্যাপারে জাতিসংঘের কোনো পর্যবেক্ষণ আছে কি-না, তা জানতে চান ওই সাংবাদিক। জবাবে ফ্লোরেন্সিয়া বলেন, ‘না, নেই। আমরা শুধু প্রক্রিয়াটি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। আমাদের আশা, স্বচ্ছ ও সংগঠিত উপায়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এখন পর্যন্ত এতটুকুই আমাদের বলার আছে।’

 

Link copied!