ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

লোকসানে বন্ধ হচ্ছে পোলট্রি খাতের হাজার হাজার ক্ষুদ্র খামার

নিজস্ব প্রতিবেদক 

নিজস্ব প্রতিবেদক 

আগস্ট ২, ২০২৫, ১২:০৫ এএম

লোকসানে বন্ধ হচ্ছে পোলট্রি খাতের হাজার হাজার ক্ষুদ্র খামার

লোকসানে টিকতে না পেরে পোলট্রি খাতের হাজার হাজার ক্ষুদ্র প্রান্তিক খামার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে অচিরেই দেশের আমিষ যোগানে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। বর্তমানে দেশের প্রান্তিক পর্যায়ের খামারগুলো একের পর এক বন্ধ হচ্ছে। 

বিগত ২০০৯ সালে সারাদেশে যেখানে ১ লাখ ৮০ হাজার খামার ছিল, বর্তমানে তা ৫০ হাজারের নিচে নেমে এসেছে। আর গত ছয় মাসেই প্রায় ১০ হাজার প্রানি-ক খামার বন্ধ হয়েছে। মূলত করপোরেট কোম্পানিগুলোর সিন্ডিকেটের সঙ্গে প্রান্তিক ক্ষুদ্র পোলট্রি খামারগুলো টিকতে পারছে। ফলে তাদের  লোকসান গুনতে হচ্ছে দিনের পর দিন। আর এক পর্যায়ে খামার বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন খামারিরা। সে ক্ষেত্রে অনেক খামারিই কম দামে বাজারে মুরগি বিক্রি করে খামার বন্ধ করে দিচ্ছে। 

আর এর প্রভাবে দু-এক মাস পরই বাজারে ডিম ও মুরগির সরবরাহ সংকটের পাশাপাশি দামও নাগালের বাইরে চলে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বিশ্ববাজারে পোলট্রি ফিড ও ওষুধের দাম কমলেও কমছে না দেশে। এ পরিস্থিতিতে প্রান্তিক খামারিদের উৎপাদন খরচ বাড়ছে। কিন্তু প্রান্তিক খামারিকে ন্যায্যমূল্যে ফিড, বাচ্চা ও ওষুধ দেয়ার ক্ষেত্রে সরকারের কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেই। তাছাড়া বাজারে কীভাবে ন্যায্যমূল্য নির্ধারণ করা যায়, কিভাবে বাজার প্রতিযোগিতা ঠিক রাখা যায় সেই পথ খোঁজাও জরুরি। তা নাহলে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক খামারিরাও এ পেশায় টিকে থাকতে পারবে না।

সূত্র জানায়, বর্তমানে দেশে প্রতিদিন চার থেকে সাড়ে চার কোটি পিস ডিমের গড় চাহিদা।  আর মুরগির মাংসের চাহিদা ৫ হাজার ২০০ টন। তার মধ্যে ব্রয়লার থেকে ৩ হাজার ২০০ এবং সোনালি ও লেয়ার থেকে প্রায় ১ হাজার ৭০০ টন সরবরাহ হয়। দেশে প্রায় চার কোটি পিস ডিম উৎপাদন হয়। আর চাহিদার বিপরীতে প্রায় ৮০ শতাংশ প্রান্তিক খামারিরা পূরণ করছে। কিন্তু অব্যাহত লোকসান ও করপোরেট কোম্পানিগুলোর সিন্ডিকেটের কারণে প্রতিদিনই প্রান্তিক পর্যায়ের বিভিন্ন ডিম-মুরগির খামার বন্ধ হচ্ছে। যা অচিরেই সরবরাহ সংকট তৈরি করবে। 

তখন ডিম-মুরগির বাজার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। আর পুরো বাজার ব্যবস্থা চলে যাবে করপোরেটদের হাতে, তখন নিয়ন্ত্রণ বলতে কিছুই থাকবে না।

সূত্র আরো জানায়, প্রান্তিক ক্ষুদ্র পোলট্রি খামারগুলো মধ্যে করপোরেট কোম্পানিগুলোর কন্ট্রাক্ট ফার্মিংয়ে অস্থিরতার জন্ম দিচ্ছে। আর সিন্ডিকেটের কারণে যেসব ক্ষুদ্র খামারি লোকসানে আছে, তাদের অনেককেই কন্ট্রাক্ট ফার্মিংয়ে যুক্ত করা হচ্ছে। বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণ করার মাধ্যমে প্রান্তিক খামারিদের পরিকল্পিতভাবে ক্ষতির মধ্যে ফেলে কন্ট্রাক্ট ফার্মিংয়ে আসতে বাধ্য করা হচ্ছে। তাতে ওই কোম্পানি খামারিকে ফিড, ওষুধ, বাচ্চাসহ যাবতীয় সহায়তা দেবে আর তারাই ডিম-মুরগির দাম নির্ধারণ ও বাজারজাত করবে। তাতে নষ্ট হবে বাজার প্রতিযোগিতা। 

ক্ষুদ্র খামারিরা মূলত ব্যাংক ঋণ, খাদ্য, ওষুধের বিল দিতে দিতে দিতেই ঋণী হয়ে যাচ্ছে। আর যখন ডিম ও মাংসের দাম কমে যায় তখন খাবার ও ওষুধের দামই উঠে আসে না। আবার যখন একটু ভালো দাম পাওয়া গেলে তখনকার লাভের অংশ দিয়ে ব্যাংকের ঋণ ও অন্যান্য খরচ টানতে না টানতে আবারো দামের পতন হয়ে যায়। এভাবেই চলছে খামারিরা। বিদ্যুতের দাম, খাবার-ওষুধের দাম বেড়েছে। ব্যাংকের সুদও বেড়েছে। সব মিলিয়ে খামারিদের দমবন্ধ অবস্থা।

এদিকে প্রান্তিক পোলট্রি খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএ) সভাপতি মো. সুমন হাওলাদার জানান, রমজান ও ঈদ মৌসুমেও ভয়াবহ লোকসান দিয়ে প্রান্তিক খামারিরা প্রতিদিন ২০ লাখ কেজি মুরগি উৎপাদন করেছেন। এখনো প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগিতে ৩০-৪০ টাকা লোকসান দিতে হচ্ছে। তাছাড়া দৈনিক ৪ কোটি ডিমের মধ্যে প্রান্তিক খামারিরা এখন ৩ কোটি উৎপাদন করেন। কারণ প্রতি ডিমে ২ টাকা করে লোকসান হচ্ছে। এভাবে খামারগুলো আর চলতে পারছে না। ফলে একটা সময় বন্ধ করে দিতে হচ্ছে। গত ছয় মাসে সারা দেশে ৮-১০ হাজার প্রান্তিক খামার বন্ধ হয়েছে।

অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) পোলট্রি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শওকত আলী জানান, ডিম-মাংসের ক্ষেত্রে ভোক্তার কথা চিন্তা করা হলেও উৎপাদকের কথা ভাবা হয় হয়। যেখানে একটি ডিম উৎপাদন খরচ ১০ টাকা, সেখানে বিক্রি করতে হচ্ছে প্রায় ৮ টাকার মতো। এভাবে বাজার ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখা যায় না। এতে প্রান্তিক খামারিরা ধ্বংস হয়ে যাবে। কয়েক বছর পর দেখা যাবে প্রান্তিক পর্যায়ে এ পেশায় কেউ আসতে চাইবে না। অথচ দেশের নিম্ন আয়ের মানুষের পুষ্টির একটি বড় উৎস ডিম ও ব্রয়লার মুরগি। এ জায়গা তাদের হাতের নাগালের বাইরে চলে গেলে বড় সংকট দেখা দেবে। অনেক দেরি হয়ে যাওয়ার আগে সরকারের এ খাতের দিকে নজর দেয়া জরুরি।

Link copied!