ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

ছুটির দিনে বেড়েছে দর্শনার্থী

মো. নাঈমুল হক

ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২৪, ১২:২১ এএম

ছুটির দিনে বেড়েছে দর্শনার্থী
  • সারাদিন শিশুপ্রহরে শিশু-কিশোর অভিভাবকদের ভিড়
  • দর্শনার্থী বাড়লেও বিক্রি কম
  • মেলা নিয়ে আশাবাদী লেখক ও প্রকাশকরা
  • গতকাল নতুন বই এসেছে ৩১টি

বইমেলা মূলত ১৫ তারিখের পর জমে ওঠে
—আমজাদ হোসেন খান কাজল, অনন্যা প্রকাশনী

শুরু হয়েছে ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি। ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসকে ধারণ করে গড়ে ওঠা বইমেলা চলছে বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। গতকাল ছাি মেলার দ্বিতীয় দিন। এ দিন একইসঙ্গে সাপ্তাহিক ছুটির দিনও ছিল। ছুটির দিনে মেলায় ছিল চাকরিজীবী ও দর্শনার্থীদের ভিড়। দূরদূরান্ত থেকে এসেছেন অনেকেই। সারাদিন শিশুপ্রহরে ভিড় ছিল শিশু-কিশোর-অভিভাবকদের। মেলাকে ঘিরে লেখক-প্রকাশকদের উৎসাহ-উদ্দীপনা দীর্ঘদিনের। মেলাকেন্দ্রিক নতুন-পুরাতন লেখকদের বই আনেন প্রকাশনী মালিকরা। প্রতিবারের চেয়ে মেলাকে আরও আকর্ষণীয় করার ইচ্ছে থাকে কর্তৃপক্ষের। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। 

জানা যায়, গতকাল শুক্রবার ছুটির দিনে দর্শনার্থীদের ভিড় বেড়েছে। এ দিন সকাল ও দুপুরে জমমাট ছিল মেলায় শিশুপ্রহর।  বিকাল ও সন্ধ্যায়ও দর্শনার্থীর উপস্থিতি বেড়েছে। তবে দর্শনার্থী বাড়লেও খুব কম পাঠকই বই কিনছেন। এটাকে মেলার স্বাভাবিক চিত্র হিসেবে মনে করেন তারা। তরুণ পাঠক মোরশেদ আলম বইমেলায় আসেন দুপুরে। তিনি বলেন, এ সময় মেলায় সুন্দরভাবে হাঁটা যায়। একটু পইে ভিড় বেড়ে যাবে। তাই আগে আগেই এসেছি। তবে আজ (শুক্রবার) বই কিনব না। শুধু বইগুলো দেখে যাব। আর মেলার পরিবেশটা আমার বেশ পছন্দ। 

দুই দশকের বেশি সময় বইমেলার সঙ্গে যুক্ত আছেন অনন্যা প্রকাশনীর আমজাদ হোসেন কাজল। তিনি বর্তমানে প্রকাশনীর ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি বলেন, এবার অনন্যা প্রকাশনী থেকে ২৩০টি নতুন ও পুরাতন লেখকের বই আসছে। ইতোমধ্যে ১৫০টি আমাদের  স্টলে চলে এসেছে। বইমেলা মূলত জমে ওঠে ১৫ তারিখের পর। প্রথমদিকে কিছু দর্শনার্থী উপস্থিত থাকেন। বিভিন্ন বই ঘেঁটে দেখেন। কিন্তু বই বিক্রি বাড়ে ১৫ তারিখের পর, বিশেষ করে শেষ দুই সপ্তাহ ভালো বিক্রি হয়। 

এবারের বইমেলা ভালো যাবে বলে মনে করেন আদর্শ প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, বইমেলার এবারের আয়োজন অন্যবারের চেয়ে ভালো। এবার মেলায় দর্শনার্থী ও পাঠক বেশি আসবে বলে মনে হচ্ছে।  মেলায় বসার জায়গা, খাবার পানি ও ওয়াশরুম বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া খাবারের দোকানগুলো মেলার একপ্রান্তে রাখা হয়েছে। এতে মেলার সৌন্দর্য আরও ভালোভাবে ফুটে উঠেছে। 

এদিন মেলায় যুক্ত হয়েছে নতুন ৩১টি বই। বিকাল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় স্মরণ : মহাকবি আলাওল শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাইমন জাকারিয়া। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন মিল্টন বিশ্বাস ও মোহাম্মদ শেখ সাদী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মো. আবুল কাসেম। 

তিনি বলেন, বাঙালি ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের অবাঙালি গবেষকদের বিচারে খ্রিষ্টীয় সপ্তদশ শতকের কবি আলাওল মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ আখ্যান কবি হিসেবে স্বীকৃত। আলাওল রচিত পদ্মাবতী, সিকান্দরনামা, তোহ্ফা, রাগতালনামা ও পদাবলী এবং কাজী দৌলতের সতী-ময়না লোর-চন্দ্রাণীর শেষাংশ হস্তলিখিত পাণ্ডুলিপির সাহায্যে সম্পাদিত গ্রন্থাকারে বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত হয়েছে। তিনি বলেন, নতুন নতুন তথ্যের আলোকে মহাকবি আলাওলকে যে তত্ত্বীয় পরিসরে গবেষকরা উপস্থাপন করছেন, তাতে তার সাহিত্যের গভীরতা, দূরদৃষ্টি এবং মহাকাল স্পর্শের ক্ষমতা স্পষ্ট হয়। 

আলোচকরা বলেন, মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের গুরুত্বপূর্ণ সৃষ্টিকর্ম ‘ছয়ফুলমুলক-বদিয়ঃজ্জামান’। এই কাব্যের পরিচয় কেবল আখ্যানকাব্য বা প্রণয়োপাখ্যানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এই কাহিনি কেচ্ছা আকারে যাত্রাপালায়ও পরিবেশিত হয়েছে। কাজেই এই পুথির আবেদন অত্যন্ত ব্যাপক ও বিস্তৃত। মহাকবি আলাওল তার ভাষার সৌকর্য ও পাণ্ডিত্যের কারণে মধ্যযুগের অন্যান্য কবি থেকে স্বকীয়। প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় সাহিত্যকর্মের পাঠোদ্ধার, সম্পাদনা বা আধুনিক বাংলা ভাষার অনুবাদ অত্যন্ত শ্রমসাধ্য কাজ। এ ধরনের সাহিত্য পাঠোদ্ধার করতে হলে হস্তলিখিত মূল পাণ্ডুলিপি বা পুথির ওপরই নির্ভর করতে হবে। 

সভাপতির বক্তব্যে মো. আবুল কাসেম বলেন, মধ্যযুগে প্রচলিত বিশ্বাস ছিল যে, বাংলা ভাষা মুসলমানের ভাষা নয়, হিন্দুর ভাষা। তথাপি মধ্যযুগের মুসলমান কবিরা বাংলা ভাষায় প্রচুর সাহিত্যকর্ম রচনা করেছেন। মহাকবি আলাওলও  এর ব্যতিক্রম নন। প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় সাহিত্যিকদের সাহিত্যকর্মের একাধিক পাঠ থেকে লেখকের অভিপ্রেত পাঠটি পুনরুদ্ধার করাই পাণ্ডুলিপি বা পুথি সম্পাদনার মূল উদ্দেশ্য। এই কষ্টসাধ্য কাজে তরুণ গবেষকদের উৎসাহিত করতে হলে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে প্রাচীন ও দুষ্প্রাপ্য পুথি এবং পাণ্ডুলিপি সহজলভ্য করতে হবে। 

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি রুবী রহমান, আসাদ মান্নান ও মাহবুব সাদিক। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী লায়লা আফরোজ, মুস্তাফা ওয়ালিদ ও মজুমদার বিপ্লব। এছাড়া ছিল ড. আবুল কালাম আজাদের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘বাংলাদেশ লোকসংগীত পরিষদ’ ও ড. মো. শাহাদাৎ হোসেনের পরিচালনায় আবৃত্তি সংগঠন ‘বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি পরিষদ’-এর পরিবেশনা। সংগীত পরিবেশন করেন কণ্ঠশিল্পী তিমির নন্দী, মহিউজ্জামান চৌধুরী, প্রিয়াংকা গোপ, জুলি শারমিলি ও মানিক রহমান। যন্ত্রানুষঙ্গে ছিলেন গৌতম মজুমদার (তবলা), এ কে আজাদ মিন্টু (কী-বোর্ড), মো. ফারুক (অক্টোপ্যাড) এবং রিচার্ড কিশোর (গিটার)।  

শিশুপ্রহরে শিশু-কিশোরদের ভিড়
ছুটির দিনে মেলার মন্দির গেটের ডানপাশে বসেছে শিশুচত্বর। এ দিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত শিশুচত্বরে মেতে ছিল শিশু-কিশোররা। দিনব্যাপী শিশুরা শিশুচত্বরে খেলাধুলা করেছে। শিশুচত্বর ঘুরে দেখা গেছে, বাবা-মায়ের হাত ধরে শিশুরা এসেছে মেলায়। সিসিমপুরের স্টেজে হৈহুল্লোড়ে মেতে উঠেছে তারা। পাশাপাশি বাবা-মায়েরাও স্টেজের বাইরে থেকে শিশুদের সাড়া দিচ্ছেন। শিশুপ্রহর উদ্বোধনের পর থেকেই শুরু হয় সিসিমপুরের জনপ্রিয় চরিত্র হালুম, ইকরি ও টুকটুকিদের নাচ। সিসিমপুরের সরাসরি এই চরিত্র দেখে উচ্ছ্বসিত শিশুরা।

অভিভাবকরা বাচ্চাদের নিয়ে বইয়ের স্টলে স্টলে ঘুরছেন। তাদের পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন বইয়ের সঙ্গে। বই খুলে বাচ্চারাও বিভিন্ন বর্ণমালা ও ছড়া পড়ছে। মেলায় শিশুচত্বরে রয়েছে তাকডুম, ঘাসফড়িং, ফুলঝুরি, সিসিমপুরসহ অনেক স্টল। স্টলগুলোতে রয়েছে বাংলা ও ইংরেজি বর্ণমালা, গল্প, ড্রইং, ফিকশন, রঙবেরঙের ছবিসহ অসংখ্য বই। শিশুদের সঙ্গে মুখরিত বিক্রয়কর্মীরাও।

সন্তানকে নিয়ে মেলায় এসেছেন ডা. তামান্না। তিনি বলেন, সপ্তাহের একটি দিন পরিবারের জন্য বরাদ্দ রাখি। প্রতিবার ফেব্রুয়ারি মাস আসলেই ভালো লাগে। সন্তানদের নিয়ে বিভিন্ন বইয়ের দোকান ঘোরা।  বই কেনা অন্যরকম আনন্দের ব্যাপার। এবার বেলা ১২ টায় এসেছি। সকালের সিসিমপুর মিস হয়েছে। এবার মেলায় তিনবারই এ আয়োজন থাকছে। বিকালের টা দেখবো। আমার মেয়েটা সিসিমপুর খুব পছন্দ করে।
 

Link copied!