ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

সীমান্ত বাহিনী কীভাবে ফিরছে

আবদুর রহিম

ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৪, ০১:১০ এএম

সীমান্ত বাহিনী কীভাবে ফিরছে
  • আন্তর্জাতিক আইন মেনে মিয়ানমার সৈন্যদের আশ্রয়   
  • ১৬ লক্ষাধিক আশ্রিত রোহিঙ্গার মধ্যে এখন সৈন্যদের ফেরত পাঠানো নয়া চ্যালেঞ্জ
  • পলাতক সৈন্যদের মিয়ানমার সমুদ্রপথে ফেরত চায় নিরাপত্তা নিশ্চিতে ভাবছে বাংলাদেশ
  • মিয়ানমার সংঘাতে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত, চীন থাইল্যান্ডেরও বিপদ বাড়ছে। বিশেষ করে রাখাইনে ভারতের গভীর সমুদ্রবন্দর ও অর্থনৈতিক অঞ্চল আক্রমণের মুখে। সৈন্য ইস্যুতে অভিজ্ঞ ভারত-চীনের পরামর্শ নিতেও বাংলাদেশকে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে ...  

বিশ্ব মানচিত্রে মিয়ানমার এখন একটি স্পর্শকাতর দেশ। তাদের সংঘাতে বিপদ বাড়ছে বাংলাদেশেও। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, চীন, থাইল্যান্ডের জন্যও বিপদের কারণ হচ্ছে। ১৬ লক্ষাধিক আশ্রিত রোহিঙ্গার অবস্থানের মধ্যে নতুন করে মিয়ানমারের সৈন্যরা অস্ত্রসহ বাংলাদেশ সীমানায় আশ্রয় নিচ্ছেন। গত কয়েকদিনে ৩৩০ জন সৈন্য বাংলাদেশের সীমানায় নিরাপত্তায় রয়েছেন। দিন যত যাচ্ছে এই সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। মিয়ানমার সৈন্যদের এখন ফেরত পাঠানো নিয়ে কূটনীতিতে হিসাব-নিকাশ চলছে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, অতীতে ভারত-চীনে পালিয়ে আসা মিয়ানমার সৈন্যদের দুই দেশের বিশেষ আলোচনার মাধ্যমে নিজ দেশে ফিরে গেছেন। খবর রয়েছে, তাদের স্বদেশে নিয়ে যাওয়ার পর বড় অংশের প্রাণহানি হয়েছে সে দেশের বাহিনীর হাতে। সফলতার মাধ্যমে দুটো দেশ সৈন্যদের পাঠানোর পরও সুরক্ষার বিষয় নিয়ে বহু প্রশ্ন ছিল। তাদের নিরাপদে পাঠানো এখন বড় ধরনের কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ। দুই দেশের মধ্যে গত কয়েকদিন ধরেই চলছে আলোচনা। কূটনৈতিক সব নিয়মকেও সূক্ষ্মভাবে বাংলাদেশ মেনে চলছে।  
রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের পর এবারই প্রথম মিয়ানমারের সীমান্তবাহিনী এ দেশে আশ্রয় নিয়েছেন। মানবিক দিক ও আন্তর্জাতিক আইন মেনে তাদের আশ্রয় দেয়া হলেও দ্রুততম সময়ের মধ্যে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর জন্য বাংলাদেশ মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন জানান, শুরুতে আশ্রয় নেয়াদের আকাশপথে পাঠানো হবে প্রাথমিকভাবে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ঢাকা। মিয়ানমার প্রাথমিকভাবে প্রস্তাব করেছিল যে, সীমান্তরক্ষীদের সমুদ্রপথে ফেরত পাঠানো হোক। কিন্তু আমরা ভেবেছি এটি নিরাপদ হবে না। তবে, এখন আমরা ভাবছি, তারা যেভাবে চায় সেভাবেই তাদের সমুদ্রপথে ফেরত পাঠানো যেতে পারে। বিজিপি সদস্যদের কবে ফেরত পাঠানো হবে, সাংবাদিকরা জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, এটা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। আমরা আগে তাদের প্রত্যাবাসনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাই। 

কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে মিয়ানমার। তাদের দেশের সংঘাতের গোলা বাংলাদেশে এসে পড়ছে। অনিরাপদ হয়ে পড়েছে বাংলাদেশের সীমান্তের নাগরিকরা। আন্তর্জাতিক নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তারা বাংলাদেশের সীমানার মধ্যেও গুলি চালাচ্ছে। মানুষ মারছে। মানুষের বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত করছে। তাদের চলমান ঘটনা এখন শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, আশপাশের দেশগুলোও ক্ষতির মধ্যে রয়েছে। বিশেষ মন্তব্যে সামরিক বিশেষজ্ঞ এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, মিয়ানমারের চলমান সংঘাতে রাখাইনের রাজধানী সিতওয়েতে ভারতের তৈরি করা গভীর সমুদ্রবন্দর ও অর্থনৈতিক অঞ্চলও আক্রমণের মুখে রয়েছে। ভারতের সঙ্গে রাখাইনের প্রধান শক্তি আরাকান আর্মি এবং তাদের রাজনৈতিক অঙ্গ ইউনাইটেড আরাকান লিগের সম্পর্ক ঐতিহাসিকভাবে তিক্ত। বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারতের বিভিন্ন সংস্থা আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তেমন সফল হয়নি। মিয়ানমার অ্যাক্টের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ন্যাশনাল ইউনিটি সরকার, পিডিএফ, চিন, কারেন, কাচিন ও কায়ান গোষ্ঠীকে দিয়ে জান্তা সরকারকে কাবু করার পথে রয়েছে। মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের সামনে বড় ধরনের ভূরাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ তৈরি হচ্ছে। রাখাইন অঞ্চলে যা ঘটেছে ও ঘটবে, তার প্রভাব বাংলাদেশের ওপরও পড়বে। তাই বাংলাদেশের জন্য প্রতিটি সময় চ্যালেঞ্জ ও সতর্কতার।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আবদুর রশীদ আমার সংবাদকে বলেন, যারা এখানে সাময়িক আশ্রয় নিয়েছেন তারা আন্তর্জাতিক আইনে সুরক্ষিত। তাদের নিরাপত্তায় নিজ দেশে পাঠিয়ে দিতে অবশ্যই আমাদের সরকার জরুরি উদ্যোগ গ্রহণ করছে। আমি মনে করি, দুটো উপায়ে তাদের খুব দ্রতই মিয়ানমারে পাঠিয়ে দেয়া সম্ভব। প্রথমত দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে। ইতোমধ্যে সেগুলো হচ্ছে বলেও আমরা জানতে পেরেছি। দ্বিতীয়ত, আন্তর্জাতিকভাবে চাপ তৈরি করেও পাঠানো সম্ভব। এটা খুব জটিল বিষয় বলে মনে করছি না। তবে তাদের অবস্থান কোনোভাবেই দীর্ঘ করা যাবে না। 

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ আমার সংবাদকে বলেন, কিছু সৈন্যকে পাঠাতে ইতোমধ্যে প্রস্তুতি চলছে। মিয়ানমারের প্রস্তাব অনুযায়ী তাদের হয়তো জাহাজে করেও পাঠাতে পারে। এটা বিলম্ব না করাই ভালো। যত দ্রত তাদের পাঠানো যায় ততই মঙ্গল। কোনোভাবেই যেন জটিল না হয়। অতীতে ভারত-চীনেও মিয়ানমারের সৈন্যরা ঢুকেছে, আশ্রয় নিয়েছিল, তাদেরও পাঠানো হয়েছে। বাংলাদেশ এ দুইটা দেশ থেকে অভিজ্ঞতা নিতে পারে। আমরা ধারণা করছি, হয়তো ওই দেশের বাহিনী থেকেই কমান্ড ছিল প্রয়োজন হলে সৈন্যরা যেন এখানে আসে। আগেও বলেছি অতীতে ভারত-চীনের সীমানায় এমন ঘটনা একাধিকবার হয়েছে। কোনো জটিলতায় না গিয়ে দ্রুত পাঠাতে হবে। এমনিতেই রোহিঙ্গা আশ্রয়ে আমাদের অনেক সমস্যা তৈরি হয়েছে। দীর্ঘায়িত পথে না গিয়ে যত দ্রুত সমস্যা সমাধান করা যায় সেই পথে হাঁটতে হবে।  

রোহিঙ্গা-বিষয়ক গবেষক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন চৌধুরী আমার সংবাদকে বলেন,  ইচ্ছাকৃতভাবে মিয়ানমার বাংলাদেশে মর্টারশেল নিক্ষেপ করছে। একটি চাপ সৃষ্টি করে মিয়ানমার চায় বাকি রোহিঙ্গারাও যেন বাংলাদেশ বা অন্য কোথাও চলে যায়। অনেকে প্রবেশের অপেক্ষায় আছে বলেও খবর পাচ্ছি। এছাড়া উসকানি দেয়া হচ্ছে যে, বাংলাদেশ যেন যুদ্ধে জড়ায়। ইতোমধ্যে মিয়ানমার আকাশসীমা লঙ্ঘন করে ফেলেছে। তাদের যুদ্ধের শেল বাংলাদেশের সীমানায় এসে পড়ছে। তার মধ্যে নতুন বিষয় হচ্ছে এবারই নতুনভাবে ওই দেশের বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। কোনো ধরনের সময় ক্ষেপণ না করে তাদের দ্রুত পাঠানো এখন বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
 

Link copied!