ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad
বাজেট ২০২৪-২৫

সরকারের সামনে যত চ্যালেঞ্জ

সৈয়দ সাইফুল ইসলাম

সৈয়দ সাইফুল ইসলাম

জুন ৪, ২০২৪, ১২:৫৫ এএম

সরকারের সামনে যত চ্যালেঞ্জ
  • নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে মূল্যস্ফীতি
  • বাড়াতে হবে রিজার্ভের পরিমাণ
  • রাজস্ব আয়ও বাড়াতে হবে

খাদ্যমূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১১ শতাংশে

—বিবিএসের প্রতিবেদন 

সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ৬ জুন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। এবারের বাজেটের পরিমাণ ঠিক কত— এমন ধারণা পাওয়া না গেলেও অর্থমন্ত্রী এবং মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দেয়া তথ্যানুযায়ী আগের বছরের চেয়ে আকার খুব একটা বড় হবে না। জাতীয় সংসদে বাজেট পেশ করার আগে অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্টরা নানা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করছেন। এসব বিশ্লেষণে উঠে আসছে দেশের অর্থনীতির বর্তমান চ্যালেঞ্জগুলো কী কী এবং এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় করণীয় নিয়েও পরামর্শ আসছে অর্থনীতিবিদ ও অংশীজনের পক্ষ থেকে। তবে সাধারণ মানুষের মধ্যে একটা টেনশন থাকে নতুন বাজেট এলেই অনেক কিছুর মূল্য বাড়ে। তবে এবার সরকার মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশে এখন অর্থনীতিতে তিনটি বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এই তিন চ্যালেঞ্জের মধ্যে প্রথম চ্যালেঞ্জই হচ্ছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা। কেননা, এর সঙ্গে একেবারে সাধারণ ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী সম্পৃক্ত। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে না থাকলে সাধারণ মানুষের জীবনে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। অর্থনীতির দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে  বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের পরিমাণ বাড়ানো। এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকে যে রিজার্ভ রয়েছে, তা যথেষ্ট নয় বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ফলে এই রিজার্ভ পরিস্থিতির উন্নতি করতে হবে। আর তৃতীয় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে রাজস্ব আয় বাড়ানো। অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীও রাজস্ব আয় বাড়ানোর বিষয়ে সিরিয়াস। এটিকে সরকারও চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে। এই তিনটি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।

নতুন বাজেট উপস্থাপনের মাত্র তিন দিন আগে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) মে মাসের মূল্যস্ফীতির প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই প্রতিবেদনও আশার পরিবর্তে নিরাশারই ইঙ্গিত দিচ্ছে। সরকারি প্রতিষ্ঠান বিবিএসের দেয়া প্রতিবেদন বলছে, মে মাসে খাদ্যমূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ৭৬ শতাংশ, যা আগের মাসে ছিল ১০ দশমিক ২২ শতাংশ। গতকালই বিবিএস এমন তথ্য দিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, মে মাসে দেশের সার্বিকভাবে মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ, যা এপ্রিলে ছিল ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ। এক মাসের ব্যবধানে সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়েছে শূন্য দশমিক ১৫ শতাংশ। মে মাসে খাদ্য খাতে সার্বিকভাবে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১০ দশমিক ৭৬ শতাংশ, যা এপ্রিলে ছিল ১০ দশমিক ২২ শতাংশ। মে মাসে খাদ্যবহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ১৯ শতাংশ, যা এপ্রিলে ছিল ৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ।

গ্রামাঞ্চলেও মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। মে মাসে গ্রামাঞ্চলে মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ, যা এপ্রিলে ছিল ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ। গ্রামাঞ্চলে মে মাসে খাদ্য খাতে মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ৭৩ শতাংশ, যা এপ্রিলে ছিল ১০ দশমিক ২৫ শতাংশ। এছাড়া খাদ্যবহির্ভূত খাতে মে মাসে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ৩১ শতাংশ, যা এপ্রিলে ছিল ৯ দশমিক ৬০ শতাংশ। ২০২৩ সালের মে থেকে ২০২৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত গড় মুদ্রাস্ফীতির হার ছিল ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ, যা অর্থবছরের জন্য সরকারের লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ৬ শতাংশ অতিক্রম করেছে। এটি সরকার বা জনগণ কারো জন্যই ভালো খবর নয়।

সাধারণ মানুষ আসলে কী চায়? তারা চায় আয় আর ব্যয়ের সমন্বয় থাকুক। কিন্তু তাদের সামনে এখন সমস্যা হচ্ছে দিন যাচ্ছে আর মূল্যস্ফীতি বাড়ছে; কিন্তু সে অনুপাতে আয় বাড়ছে না। মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমাল তালে আয় বাড়লে সেটি নিয়ে হয়তো তাদের কোনো আক্ষেপ থাকত না। আসছে বাজেট উপস্থাপনের ঠিক আগে দেশের রিভার্জ সংকট অনেকটা দৃশ্যমান। অর্থনীতিবিদরা অবশ্য বলছেন, হুন্ডির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আসা বন্ধ করে বৈধ মাধ্যমে তা আনতে পারলে রিজার্ভ নিয়ে সংকট কেটে যাবে; কিন্তু এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা কী সিরিয়াস— এমন প্রশ্নও উঠেছে। একদিকে দেশে একইসঙ্গে রিজার্ভ কমে যাওয়া, অন্যদিকে সরকারের রাজস্ব আয় কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় না থাকায় সংকট কমছে না। অথচ উন্নয়ন, ভর্তুকিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বরাদ্দ দেয়ার জন্য নির্ভর করতে হচ্ছে ঋণের ওপর। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের বিদেশি ঋণ ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। আর সরকার এখন যে আয় করে, তার বড় অংশই ব্যয় হচ্ছে ঋণ ও ঋণের সুদ পরিশোধ করতে গিয়ে। এ অবস্থায় অর্থনীতিবিদদের ভাষ্য হচ্ছে, নতুন করারোপ না করে কর আদায় বাড়াতে হবে।

বাংলাদেশে সবাইকেই ট্যাক্স দিতে হয়। কীভাবে সবাই ট্যাক্স দেন, তার উদাহরণ দিতে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলন, যে শাহবাগে বসে ভিক্ষে করছে, সেও যখন একটা পণ্য কেনে, তখন তাকে একটা পরোক্ষ ট্যাক্স দিতেই হয়। বাংলাদেশে ট্যাক্সের তিন ভাগের দুই ভাগ হচ্ছে এ ধরনের ট্যাক্স। যেটা গরিবদের বেশি প্রভাবিত করে। করের চাপ যেন সাধারণ মানুষের ওপর না পড়ে, সেটায় গুরুত্ব দিতে সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে যারা আয়ের দিক দিয়ে শীর্ষ ১০ শতাংশে আছে, জিডিপির শতাংশে চার শতাংশ পরিমাণ ট্যাক্স তাদের কাছ থেকে কালেকশন করার কথা। কিন্তু আমরা পাচ্ছি দেড় থেকে দুই শতাংশ। তাহলে আমরা তো প্রত্যক্ষ কর সংগ্রহ করতে পারছি না। আমাদের পরোক্ষ করের চাপ কমিয়ে প্রত্যক্ষ কর আহরণ বাড়াতে হবে।

সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান মনে করেন, দীর্ঘদিন ধরে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে। বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ ক্রমাগত কমছে। প্রবৃদ্ধি, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান, রপ্তানি, প্রবাসী আয়সহ অর্থনীতির সূচকগুলো খুব একটা আশাব্যঞ্জক অবস্থায় নেই। তাই নতুন বাজেটে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার দিকনির্দেশনা বা কার্যকর ব্যবস্থা থাকতে হবে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপই কাজ করেনি। মুদ্রানীতি, রাজস্বনীতি ও বাজার ব্যবস্থাপনার সমন্বিত কার্যক্রমের মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ চোখে পড়েনি। সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার জন্য বেশকিছু সংস্কার প্রক্রিয়া শক্তিশালীভাবে নেয়া প্রয়োজন। কর খাত, ব্যাংক খাত, রপ্তানি বহুমুখীকরণ, ব্যবসার খরচ কমানো, বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করাসহ অনেক বিষয়েই বড় সংস্কার জরুরি।

অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান মনে করেন, বাজেট বাস্তবায়নে করের বোঝা নয় বরং ঋণের প্রবাহ ঠিক রাখাই হবে কৌশল। তিনি বলেন, আমাদের উন্নয়ন ঠিক রাখতে হলে আয় বাড়াতে হবে। হঠাৎ করে কর দিয়ে সেটা সম্ভব নয়।

Link copied!