ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad
সর্বাত্মক কর্মবিরতির ঘোষণা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের

সর্বজনীন পেনশনে নাখোশ

বেলাল হোসেন

জুন ৩০, ২০২৪, ১১:৫০ পিএম

সর্বজনীন পেনশনে নাখোশ
  • স্বতন্ত্র বেতন স্কেল ও সুপার গ্রেডে শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তির দাবি
  • ‘প্রত্যয় স্কিম’কে বৈষম্য ও বঞ্চনামূলক বলছেন শিক্ষকরা

পরিস্থিতি বিবেচনায় যথাসময়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা
—শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী

আমাদের আন্দোলন আগামী দিনের তরুণ সমাজের স্বার্থরক্ষা ও উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসের চক্রান্তের বিরুদ্ধে
—মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া
মহাসচিব, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন

অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত সর্বজনীন পেনশন ‘প্রত্যয় স্কিমকে’ বৈষম্যমূলক দাবি করে প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এদিকে আজ থেকে চালু হচ্ছে সর্বজনীন পেনশন কার্যক্রম। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে গতকাল রোববার পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের পাশাপাশি কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও কর্মবিরতি পালন করছেন। এ বিষয়ে গতকাল দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের মূল ফটকে সংবাদ সম্মেলন করে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক সমিতির মোর্চা বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। 

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আজ সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এতদিন কর্মবিরতির সময় পরীক্ষা আওতার বাইরে ছিল। কিন্তু কাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষাসহ দাপ্তরিক সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকবেন শিক্ষকরা। একই সাথে প্রতিশ্রুত সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তনের দাবি জানিয়েছেন। 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া। এতে বলা হয়, প্রত্যয় স্কিম বাস্তবায়ন করা হলে বর্তমানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী, যারা আগামী দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতার মতো মহান পেশায় আসতে আগ্রহী, তারাও এর ভুক্তভোগী হবেন। কাজেই আমাদের এ আন্দোলন আগামী দিনের তরুণ সমাজের স্বার্থরক্ষার পক্ষে এবং উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থা ধ্বংসের চক্রান্তের বিরুদ্ধে। আমরা এখনো আশা করি যে, সরকার অবিলম্বে এই যৌক্তিক দাবি মেনে নেবে, যাতে আমরা ক্লাসে ফিরে যেতে পারি। অন্যথায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের ১ জুলাই থেকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সারা দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালিত হবে। 

নিজামুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘সরকারের একটি কায়েমি গোষ্ঠী প্রধানমন্ত্রীকে বিভ্রান্ত করে প্রত্যয় স্কিম চালু করিয়েছে। এই স্কিম বৈষম্যমূলক। আমরা শিক্ষকরা আত্মমর্যাদা নিয়ে বাঁচতে চাই। আমরা বিভিন্নভাবে সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছি। কিন্তু তারা কোনো আগ্রহ দেখাননি। সর্বাত্মক আন্দোলনে যাওয়া ছাড়া আমাদের আর কোনো পথ ছিল না।’ এর আগে গত ১৩ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে প্রত্যয় স্কিমের প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকেই এর বিরুদ্ধে সরব বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। কিছু কর্মসূচি পালনের পর ৪ জুন অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেন শিক্ষকরা। এরপরও দাবির বিষয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না দেখে ৪ জুন ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী গত সপ্তাহ টানা তিন দিন অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। প্রত্যয় স্কিমের বিরুদ্ধে গত সপ্তাহে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটেও শিক্ষকনেতারা জোরালো বক্তব্য দেন। 

এদিকে সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিমের প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবিতে গতকাল রোববার পূর্ণদিবস কর্মবিরতির পাশাপাশি প্রতিবাদ সমাবেশও করেছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। দাবি আদায়ে আজ সোমবার থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও সর্বাত্মক কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন। সর্বাত্মক কর্মবিরতি হিসেবে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি কর্মসূচির ঘোষণা করেছে। যেখানে কর্মবিরতির অংশ হিসেবে বলা হয়েছে, সব বিভাগের ক্লাস বন্ধ থাকবে, অনলাইন-সান্ধ্যকালীন ক্লাস ও শুক্র-শনিবারের প্রফেশনাল কোর্সের ক্লাস বন্ধ থাকবে, সব পরীক্ষা বর্জন করা হবে, বিভাগীয় চেয়ারম্যান বিভাগীয় অফিস-সেমিনার-কম্পিউটার ল্যাব ও গবেষণাগার বন্ধ রাখবেন, একাডেমিক কমিটি-সমন্বয় ও উন্নয়ন কমিটি ও প্রশ্নপত্র সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হবে না, অনুষদের ডিনরা তাদের কার্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষাসহ সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম বন্ধ রাখবেন, নবীনবরণ অনুষ্ঠানের কর্মসূচি গ্রহণ করা যাবে না, কোনো বাছাই বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হবে না, বিভিন্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালকরা ইনস্টিটিউটের কার্যালয়, ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রাখবেন, সান্ধ্যকালীন, শুক্র ও শনিবারের ক্লাস বন্ধ থাকবে, বিভিন্ন গবেষণাকেন্দ্রের পরিচালকরা কোনো সেমিনার, কনফারেন্স ও ওয়ার্কশপের কর্মসূচি গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকবেন, বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষরা প্রাধ্যক্ষ কার্যালয় বন্ধ রাখবেন এবং প্রধান গ্রন্থাগারিক কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার বন্ধ রাখবেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অংশ নিবেন না বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের কোনো অনুষ্ঠানে। 

এদিকে সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিমের প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবিতে গতকাল পূর্ণদিবস কর্মবিরতির পাশাপাশি প্রতিবাদ সমাবেশও করেছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। দাবি আদায়ে আজ থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও সর্বাত্মক কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন। এদিকে পরিস্থিতি বিবেচনায় যথাসময়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিম বাতিল দাবিতে কর্মবিরতির মাধ্যমে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় অচল করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষকরা। আজ ১ জুলাই থেকে শিক্ষকদের এ কর্মবিরতি শুরু হচ্ছে। এ আন্দোলনের দিকে নজর রাখছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পরিস্থিতি বিবেচনা করে যথাসময়ে মন্ত্রণালয় থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচায় এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা নিয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।  

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সর্বজনীন পেনশনের আওতায় কারা আসবে, সেটা সরকারের নির্বাহী বিভাগের সিদ্ধান্ত। সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় সেটার সঙ্গেই আছে। শিক্ষকরা দাবি-দাওয়া সরকারের কাছে জানাচ্ছেন, সরকারই এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এখানে কিছু করার নেই। মন্ত্রী আরও বলেন, শুধু বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সর্বজনীন পেনশনের আওতায় আনা হচ্ছে সেটাও নয়। সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী এ পেনশনের আওতায় আসবেন। হয়তো এ বছর শিক্ষকরা আসছেন, আগামী বছর অন্যরা আসবেন। তবে পর্যায়ক্রমে সবাই আসবেন। 

শিক্ষকদের চলমান আন্দোলনে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ হয়ে সেশনজটে পড়লে মন্ত্রণালয় কোনো ব্যবস্থা নেবে কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তাদের দাবি-দাওয়া আদায়ে তারা আন্দোলন করছেন। সে অধিকার তাদের আছে। অনেকে বলেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের নিয়ন্ত্রণ করে সরকার। এ আন্দোলনের মাধ্যমে তো এটা বোঝা যাচ্ছে যে, তারা স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশ করতে পারেন।’  ‘শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে আমি বলব আমরা বিষয়টির দিকে নজর রাখছি। এখনো সর্বাত্মক আন্দোলন শুরু হয়নি। তাদের কর্মসূচি শুরু হোক, পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমরা পদক্ষেপ নেব’— বলেও উল্লেখ করেন শিক্ষামন্ত্রী। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না—  এমন প্রশ্নের জবাবে মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, শিক্ষকরা আমাদের সঙ্গে বসেছিলেন। তারা প্রচলিত পদ্ধতি এবং সর্বজনীন পেনশন প্রত্যয় স্কিমের কাঠামোর তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন। সেটা আমরা দেখেছি। তবে এটা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোনো সিদ্ধান্ত বা এখতিয়ারে না থাকায় আমরা তাদের সুনির্দিষ্ট কোনো আশ্বাস দিইনি। দেয়াটা আমাদের জন্য সমীচীনও নয়।
 

Link copied!