ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ডে মাফিয়ারাজ্য

ইয়ামিনুল হাসান আলিফ

ইয়ামিনুল হাসান আলিফ

আগস্ট ১১, ২০২৪, ০৩:৫৪ পিএম

তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ডে মাফিয়ারাজ্য
  • বিদায়ী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, শ্রমিক নেতা মকবুল  মামুন গংয়ের নেতৃত্বে অপরাধরাজ্য গড়ে ওঠে তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ডে
  • ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান থেকে মাসে ২০ থেকে ৩০ কোটি টাকা চাঁদাবাজি  
  • ফুল বাগানের নামে বহুতল মার্কেট গড়ে দোকান বিক্রি-ভাড়া দিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ
  • চাঁদাবাজি, জায়গা দখল, মাদকের ‘সেইফ জোন’-এ পরিণত করা হয় তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ডকে

রাজধানীর তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ডে অবস্থান করা সোহেল আহমেদ (ছদ্মনাম) নামে এক ট্রাকচালকের সাথে কথা হয় আমার সংবাদের। তিনি জানান, মহাসড়কে বিভিন্ন স্থানে চাঁদা দিতে হয় তাদের। আর বড় অঙ্কের চাঁদা দিতে হয় তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ডে। মাসে ২০ থেকে ৩০ কোটি টাকার চাঁদাবাজি হচ্ছে এই ট্রাকস্ট্যান্ড ঘিরে। কেন চাঁদা চাওয়া হচ্ছে এমন প্রশ্ন করার সুযোগও থাকছে না ভুক্তভোগীদের।

কারণ, কথা বললেই নির্যাতন শুরু হয়। রাজধানীর ব্যস্ততম এই এলাকার ট্রাকস্ট্যান্ড ঘিরে শুধু চাঁদাবাজিই নয়, গড়ে উঠেছে এক মাফিয়া সাম্রাজ্য। যার মূল নিয়ন্ত্রণ সদ্য পদ হারানো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, স্থানীয় কমিশনার ও কয়েক শ্রমিক নেতার হাতে। চাঁদাবাজি, দোকান দখল, মাদক ব্যবসার ‘সেইফ জোন’ হিসেবে গড়ে উঠেছে এই ট্রাকস্ট্যান্ড। ট্রাকস্ট্যান্ডের মালিকানায় তৈরি হওয়া বহুতল মসজিদের তিনটি ফ্লোরে গড়ে ওঠা মার্কেটের শত শত দোকান দখল করে তা ভাড়া দিয়ে সেই টাকা আত্মসাৎ করছে এই চক্রটি। অবৈধ স্থাপনা তৈরি করে মার্কেট এবং বহুতল ভবন নির্মাণ করে মাসে কোটি কোটি টাকা চাঁদাবাজির পাশাপাশি ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ও পিকআপের ভরপুর থাকা তেজগাঁও টার্মিনালের ভিতরে গাড়ি প্রবেশ করলে প্রতি গাড়ি থেকে ১২০ টাকা করে চাঁদা নেয়া হয়।

ভুক্তভোগীরা জানান, সদ্য সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পৃষ্ঠপোষকতায় ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মগবুল হোসেন, ট্রাক ড্রাইভার্স ইউনিয়নের সভাপতি মনির তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাশেম গংয়ের নেতৃত্বে দোকান দখল, গাড়ি প্রতি চাঁদা আদায়, মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। চাঁদা না দেয়ার চেষ্টা করা হলে কিংবা প্রতিবাদ করা হলে শ্রমিকদের ওপর নির্যাতন চালায় এই মাফিয়ারা। আওয়ামী লীগের পতনের পরও চেষ্টা করা হচ্ছে এই অপরাধ সাম্রাজ্য টিকিয়ে রাখার।

গত বুধবার তেজগাঁও স্ট্যান্ড সংলগ্ন মসজিদের মাইকে সাধারণ শ্রমিকরা মোটর শ্রমিক ও মালিকদের বিনীতভাবে অনুরোধ করেন চাঁদা প্রদান না করতে। আর এতেই ক্ষিপ্ত হয় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নিয়োগ করা ওই দখলদার বাহিনী। মসজিদের মাইক ব্যবহার করায় ওই চাঁদাবাজদের নির্দেশে সন্ত্রাসী বাহিনী মসজিদের খতিবকে ব্যাপকভাবে মারধর করে। পরে শ্রমিকরা তাকে উদ্ধার করেন। 

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ফুল বাগান করার জন্য রেলওয়ে থেকে জমি নেয়া হয়। তবে সে জমিতে ফুলের বাগান না করে বহুতল ভবন তৈরি করে সেখানে দোকান ও পজিশন বিক্রি, অ্যাডভান্স ও ভাড়া বাবদ কোটি কোটি টাকা লোপাট করেছে মকবুল-মামুনগং। প্রশাসন ম্যানেজ রাখতে বড় অংশের টাকা নিয়মিত দেয়া হতো সদ্য ক্ষমতাচ্যুত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে। ফলে এর বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে পারেনি। কেউ প্রতিবাদের চেষ্টা করলে মারধর করার পাশাপাশি প্রশাসন দিয়েও করা হতো হয়রানি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক নেতা বলেন, এরা দেশের সুনাম ক্ষুণ্ন করেছে। রপ্তানি পণ্যের অনেক পণ্য সুবিধামতো সরিয়ে রাখতো এরা। এতে গার্মেন্ট ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরে এসব পণ্য খোলা বাজারে ইসলামপুর-গুলিস্তানসহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করত। ১৫ বছর আগে খেতে না পারলেও এসব শ্রমিক এখন ঢাকা শহরে একাধিক বাড়ি-গাড়ির মালিক। দুদক তদন্ত করলে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ বের হয়ে আসবে। 

এ বিষয়ে সাধারণ শ্রমিকরা বলছেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনার পতনের পর দেশের কোথাও আর কোনো চাঁদাবাজদের ঠাঁই দেয়া হবে না। পরিবহনের সব সেক্টর থেকে চাঁদাবাজদের উৎখাত করতে হবে। শুধু ট্রাকস্ট্যান্ডই নয়, জনগণের প্রত্যাশা পুরো দেশই হবে চাঁদাবাজমুক্ত।
 

Link copied!