Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০১ মে, ২০২৫,

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

মে ১, ২০২৫, ১২:১৩ এএম


ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে
  • বিমানবাহিনীতে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান সংযোজনে সরকার সহযোগিতা করবে

আমরা এমন এক বিশ্বে বাস করি, যেখানে যুদ্ধের প্রস্তুতি না রাখাটা আত্মঘাতী উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থার মধ্যে রয়েছে। পত্রিকায় দেখলাম, হয়তো গুজব, আজকেই শুরু হয়ে যাবে যুদ্ধ। আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। গতকাল বুধবার ঢাকায় বিমানবাহিনীর বার্ষিক মহড়া অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

ড. ইউনূস বলেন, অনেকের মতো আমিও যুদ্ধবিরোধী মানুষ। পৃথিবীতে যুদ্ধ হোক, এটা কামনা করি না। যুদ্ধ প্রস্তুতি অনেক সময় যুদ্ধের দিকে নিয়ে যায়। কাজেই যুদ্ধ প্রস্তুতি নিয়েও একটা ঘোরতর আপত্তি। কিন্তু এমন বিশ্বে আমরা বাস করি, প্রতিনিয়ত যুদ্ধের হুমকি আমাদের ঘিরে থাকে। তো সেখানে প্রস্তুতি না নিয়ে থাকা এটা অসম্ভব হয়ে পড়ে।

তিনি বলেন, প্রস্তুতি নিতে হলে আধা-আধি প্রস্তুতির কোনো জায়গা নাই। এটা এমন এক পরিস্থিতি, জয়ই একমাত্র অপশন। পরাজয় এখানে কোনো অপশন হতে পারে না। কাজেই আমাদের প্রস্তুতি কত উচ্চপর্যায়ে নিতে পারি, তার চেষ্টা থাকতেই হবে,’ যোগ করেন তিনি।

যুদ্ধ একটি ব্যয়বহুল ব্যাপার উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমাদের অর্থনীতি দুর্বল অবস্থায় আছে। এমনিতেই বাংলাদেশ মজবুত অর্থনীতির দেশ হয়ে গড়ে উঠতে পারেনি। তার মধ্যে বিগত সরকারের যথেচ্ছাচারের কারণে যা ছিল তা-ও লুটপাট হয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে আমাদের সামগ্রিক স্ট্র্যাটেজি ঠিক করতে হবে। শান্তির দিকে হাত বাড়িয়ে রাখতে হবে সবসময়। কিন্তু প্রস্তুতিও থাকতে হবে।

বিমানবাহিনীর মহড়া দেখে খুবই ভালো লেগেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এগুলো আমরা সিনেমাতে দেখি। বাস্তবে দেখার খুব একটা সুযোগ হয় না। আজকে আপনাদের কারণে সেটা বাস্তবে দেখলাম।

বিমান বাহিনীতে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান সংযোজনে সরকার সহযোগিতা করবে

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বিমান বাহিনীতে ভবিষ্যতে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান, হেলিকপ্টার, পরিবহন বিমান, রাডার, সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল, ইউএবি, সংযোজনের জন্য সরকার বিমান বাহিনীকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দেবে।

গতকাল বুধবার বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ঘাঁটি বীর উত্তম এ কে খন্দকারে বিমান বাহিনীর অনুশীলন পর্যবেক্ষণ করেন। অনুষ্ঠানে বিমান বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশ্যে দেয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী আয়োজিত এই আকাশ বিজয় মহড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। এই মহড়া কেবল একটি সাময়িক অনুশীলন নয় এবং এটি আমাদের সার্বভৌমত্ব রক্ষা, বিমান বাহিনীর পেশাদারিত্ব ও দক্ষতার পরিচয় বহন করে। মহড়া অংশগ্রহণকারী সব সদস্যকে তাদের নিষ্ঠা, শৃঙ্খলা এবং পেশাগত উৎকর্ষের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ১৯৭১ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর বিপুল প্রতিকূলতা সত্ত্বেও একটি অটার বিমান, একটি অ্যালুয়েট হেলিকপ্টার, একটি ডাকোটা বিমানসহ ৫৭ সদস্য নিয়ে জন্ম নিয়েছিল ‘কিলো ফ্লাইট’। যা বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর নিউক্লিয়াস হিসেবে চির স্মরণীয় থাকবে। ‘বর্তমান বিশ্বে দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য আন্তর্জাতিক মান সম্পূর্ণ প্রশিক্ষণ ও অনুশীলন গুরুত্ব বহন করে। এ প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সদস্যরা নিয়মিতভাবে বহুমাত্রিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম ও অনুশীলনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে নিজেদের জ্ঞান এবং দক্ষতাকে উপযোগী করতে সদা সচেষ্ট রয়েছে। যা এই মহড়ার মাধ্যমে আমাদের কাছে স্পষ্ট হয়েছে।’

তিনি বলেন, দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতার প্রতি যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একটি আধুনিক বিমানবাহিনী গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সময়োপযোগী পরিকল্পনা ও দূরদর্শী নেতৃত্বের মাধ্যমে সমসাময়িক এবং ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি ও কার্যকর আকাশ প্রতিরক্ষার পাশাপাশি বিস্তীর্ণ সমুদ্র এলাকায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা দেয়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। ‘বিমান বাহিনীতে ভবিষ্যতে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান, হেলিকপ্টার, পরিবহন বিমান, রেডার, সারফেস টু এয়ার মিসাইল, ইউএবি সংযোজনের জন্য সরকার বিমানবাহিনীকে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করবে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আজকের এই অনুশীলন বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর আত্মবিশ্বাস, প্রস্তুতি এবং অর্পিত দায়িত্ববোধের বাস্তব রূপায়ণ। দেশের বিমানবন্দরে সুষ্ঠু পরিচালনা ও নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত বিমান বাহিনীর সদস্যদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ‘বিমান বাহিনীর সব সদস্যদের প্রতি যুগোপযোগী ক্ষমতা অর্জন, দক্ষতা অর্জন এবং পেশাগত কারিগরি সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রতি অব্যাহত মনোযোগ বজায় রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।’

তিনি বলেন, দেশপ্রেম এবং পেশাদারিত্বে আগামী দিনের নিরাপদ এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার মূল ভিত্তি। আমাদের সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় আমরা একটা নিরাপদ, উন্নত এবং শক্তিশালী বাংলাদেশ গড়ে তুলব। আপনাদের প্রতি জাতির আস্থা ও ভালোবাসা অটুট থাকুক।  

Link copied!