ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

বর্ষার আগেই নদীভাঙনে দিশাহারা ভুক্তভোগীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

মে ১৯, ২০২৫, ১২:১৯ এএম

বর্ষার আগেই নদীভাঙনে দিশাহারা ভুক্তভোগীরা

বর্ষার আগেই দেশের বিভিন্ন নদীতে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। ফলে নদীপাড়ের ভুক্তভোগী মানুষরা হয়ে পড়েছে দিশাহারা। সাম্প্রতিক সময়ে ব্রহ্মপুত্রের তীব্র ভাঙনে কয়েকশ বিঘা আবাদি জমি বিলীন হয়েছে। কোনোভাবেই শান্ত হচ্ছে না ব্রহ্মপুত্র। বরং ভাঙন তীব্রতায় একে একে গ্রাস করছে বসতভিটা, আবাদি জমি, স্থাপনা ও গ্রামীণ সড়ক।

কুড়িগ্রামের উলিপুরের বেগমগঞ্জ ইউনিয়নে এমনই পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ব্রহ্মপুত্র সেখানে সর্বগ্রাসী রূপ ধারণ করেছে। আর লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে মেঘনা নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলোতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। 

গত কয়েক দিনের ভাঙনে উত্তর ও দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের মেঘনার তীরের ফসলি জমি ও বসতভিটা বিলীন হচ্ছে। হুমকির মুখে রয়েছে দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে পাকা রাস্তা, দুই শতাধিক বসতবাড়ি, ফসলি জমি, হোটেল-রেস্টুরেন্টসহ অর্ধশতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। 

তাছাড়া সিরাজগঞ্জে শুষ্ক মৌসুমেই যমুনা নদীর হঠাৎ ভাঙনে বসতি ও ফসলি জমি বিলীন হচ্ছে। ইতোমধ্যে ভাঙন দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত হয়েছে। তাতে ঘরবাড়ি, মসজিদ, মাদ্রাসাসহ নানা স্থাপনা হুমকির মুখে পড়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, নদী ভাঙনে ফসলি জমির পাশাপাশি ঘরবাড়ি ও গাছপালা নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে। ব্রহ্মপুত্রের তীব্র ভাঙনে হুমকিতে আছে রসুলপুর গ্রামের মার্কাজ মসজিদ, মাদ্রাসা, ঈদগাহ মাঠসহ বেগম নুরুন্নাহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। শুকনা মৌসুমে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে স্থানীয় বাসিন্দারা দিশাহারা হয়ে পড়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ভাঙন প্রতিরোধে এক হাজার জিও ব্যাগ ফেলার উদ্যোগ নিলেও তা কোনো কাজে আসছে না। বরং সব গিলে নিচ্ছে ভয়ংকর হয়ে ওঠা ব্রহ্মপুত্র। 

ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে গ্রামের অনেক পরিবার এখন ভূমিহীন। গত দুই বছরে ব্রহ্মপুত্র আর ধরলার ভাঙনে প্রায় হাজার বিঘা আবাদি জমি বিলীন হয়েছে। কিন্তু ভাঙন প্রতিরোধে পাউবোর পক্ষ থেকে বালুর বস্তা ফেলা ছাড়া স্থায়ী কোনো প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। যদিও ভাঙন প্রতিরোধে স্থায়ী এবং অস্থায়ী প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে পাউবো। ধরলার উজান থেকে বেগমগঞ্জ পর্যন্ত প্রায় আট কিলোমিটার ভাঙনকবলিত তীরের প্রায় ছয় কিলোমিটার এলাকায় প্রতিরক্ষামূলক কাজের টেন্ডার সম্পন্ন হয়েছে। 

সূত্র জানায়, লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে মেঘনা নদীর পাড় বর্ষা আসার আগেই ভাঙনের কবলে পড়েছে। কয়েক দিনের ভাঙনে উত্তর ও দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের মেঘনার তীরের ফসলি জমি ও বসতভিটা বিলীন হচ্ছে। প্রতি বছরই বর্ষার সময় মেঘনায় ভাঙন দেখা দেয়। আর তাতে ঘরবাড়ি ও জমি হারিয়ে অনেকে নিঃস্ব জীবন কাটাচ্ছে। নদীতে স্থায়ী বাঁধের দাবিতে বিভিন্ন সময় আন্দোলনও হয়েছে। কিন্তু স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হয়নি। বরং নদীর স্রোত, অপরিকল্পিত ড্রেজিং এবং অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে ভাঙন আরও বেড়েছে। 

এই অবস্থা চলতে থাকলে উত্তর চরবংশী, দক্ষিণ চরবংশী ও চরআবাবিল ইউনিয়ন নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। গত কয়েক বছরে একটি সাইক্লোন শেল্টার, কয়েকটি কবরস্থান, মসজিদ, ঈদগাহ ও একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদীতে বিলীন হয়েছে। বর্তমানে ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে উত্তর চরবংশী, দক্ষিণ চরবংশী ও উত্তর চরআবাবিল ইউনিয়ন পরিষদের পশ্চিম দিকে চর ইনদ্রুরিয়া, চরঘাসিয়া, জালিয়ারচর গ্রামের ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি।  তাছাড়া সিরাজগঞ্জে শুষ্ক মৌসুমেই যমুনা নদীর হঠাৎ ভাঙনে বসতি ও ফসলি জমি বিলীন হচ্ছে। 

ভাটপিয়ারী গ্রামে নদীর পশ্চিম তীরে ভাঙন ইতোমধ্যে দুই   কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত হয়েছে। তাতে ঘরবাড়ি, মসজিদ, মাদ্রাসাসহ নানা স্থাপনা হুমকির মুখে পড়েছে। মাত্র কয়েক দিনের ভাঙনে ফসলি জমির পাশাপাশি ঘরবাড়ি ও গাছপালা নদীগর্ভে চলে গেছে। আর বর্ষার আগেই এ ভাঙন চলতে থাকলে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও ভাটপিয়ারী, শিমলা, পাঁচঠাকুরিসহ আশেপাশের গ্রামগুলো মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়বে। 

সূত্র আরও জানায়, পদ্মা সেতু প্রকল্প পূর্ব পাশের রক্ষা বাঁধটির পুরো দুই কিলোমিটার ভাঙনের মুখে পড়েছে। বাঁধের কাছে বিভিন্ন স্থানে নদীর গভীরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় ও ভাঙন দেখা দেয়ায় তা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। আগামী বর্ষা মৌসুমে বাঁধের বিভিন্ন স্থানে ভাঙনের আশঙ্কা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। নদী ভেঙে বাঁধের কাছে চলে আসায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। 

বর্তমানে ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে নাওডোবা-পালেরচর সড়ক, মঙ্গল মাঝি-সাত্তার মাদবর বাজার ও চারটি গ্রামের অন্তত পাঁচ শতাধিক বসত বাড়ি। গত বছর নভেম্বরে ওই বাঁধের জাজিরা প্রান্তের নাওডোবার জিরোপয়েন্ট এলাকায় ১০০ মিটার অংশ নদীতে ভেঙে পড়েছে। তারপর বাঁধটিতে সমীক্ষা চালায় পাউবো ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ (বিবিএ)। 

সমীক্ষায় দেখা যায়, এক কিলোমিটার অংশে বাঁধের কাছে নদী গভীর। সেখানে তলদেশ থেকে মাটি সরে যাচ্ছে। আর বাকি এক কিলোমিটার অংশের বাঁধের কাছে নদী চলে এসেছে। সেখানেও মাটি ভেঙে নদীতে পড়ছে।

এদিকে এ প্রসঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ড সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কংক্রিটের ব্লক ও জিও ব্যাগ ফেলে নদী ভাঙন রোধ করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। আর পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকা রক্ষা বাঁধটি সেতু বিভাগ ১২ থেকে ১৩ বছর আগে নির্মাণ করেছিল। ওই বাঁধে সমীক্ষা চালানো হয়েছে, তাতে বাঁধটি এই মুহূর্তে ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত হয়েছে। বাঁধটি মজবুতকরণ করার জন্য একটি প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) প্রস্তুত করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। মজবুতকরণ করা না হলে দুই কিলোমিটার বাঁধটি ভাঙনের ঝুঁকি রয়েছে।

Link copied!