ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Amar Sangbad

ইনস্টাগ্রাম

Amar Sangbad

এক্স

Amar Sangbad


লিংকডইন

Amar Sangbad

পিন্টারেস্ট

Amar Sangbad

গুগল নিউজ

Amar Sangbad


হোয়াটস অ্যাপ

Amar Sangbad

টেলিগ্রাম

Amar Sangbad

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Amar Sangbad


ফিড

Amar Sangbad

ঢাকা শনিবার, ০২ আগস্ট, ২০২৫
Amar Sangbad

চার জেলায় ফের বন্যার আশঙ্কা

আমার সংবাদ ডেস্ক

আমার সংবাদ ডেস্ক

মে ২১, ২০২৫, ১২:১১ এএম

চার জেলায় ফের বন্যার আশঙ্কা
  • শেরপুরে বিপৎসীমার ১০৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত 
  • সিলেটে জলাবদ্ধতা, জনজীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা

ভারতের মেঘালয় ও আসামে টানা ভারী বর্ষণের ফলে শেরপুরের চেল্লাখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ১০৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে জেলার নিম্নাঞ্চলে আকস্মিক বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। 

গতকাল মঙ্গলবার সকালে শেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আখতারুজ্জামানএ তথ্য নিশ্চিত করেন। 

পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, সোমবার রাত ১০টায় চেল্লাখালী নদীর পানি ছিল বিপৎসীমার ৩৯ সেন্টিমিটার ওপরে। রাতে তা কিছুটা কমলেও মঙ্গলবার ভোর থেকে মুষলধারে বৃষ্টি ও উজানে অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে আবারও পানি দ্রুত বাড়তে থাকে। সোমেশ্বরী নদীর পানি বেড়ে গিয়ে নির্মাণাধীন চাপাতলী সেতুর পাশের নিচু এলাকায় প্রবেশ করায় আশপাশের কয়েকটি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 

এদিকে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সতর্ক বার্তায় বলা হয়েছে, ২০ মে পর্যন্ত জেলার নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হতে পারে, যা জন-জীবন ও কৃষিতে বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হতে পারে। 

শেরপুর কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন জানান, জেলার ৯৪ শতাংশ বোরো ধান কাটা শেষ হয়েছে। বাকি ধান দ্রুত কাটার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে এবং ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় মাইকিং শুরু হয়েছে। 

ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, উজানের পানি ও বৃষ্টির কারণে নদ-নদীর পানি বেড়েছে। গত চার দিন ধারে থেমে থেমে ভারী বৃষ্টির ফলে নদীর পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি পৌঁছেছে। আকস্মিক বন্যার শঙ্কা রয়েছে, তবে এখনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে এবং প্রশাসনের সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। 

আবহাওয়া বিষয়ক ওয়েবসাইট আবহাওয়া ডটকমের প্রধান আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ জানিয়েছেন, আগামী ২৪ ঘণ্টায় ময়মনসিংহ বিভাগের শেরপুর ও নেত্রকোনা এবং সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ ও সিলেট জেলায় পাহাড়ি ঢল নামতে পারে। সেই সঙ্গে এসব এলাকায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কাও রয়েছে। চেল্লাখালীর পাশাপাশি ভোগাই নদী, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র ও সোমেশ্বরী নদীর পানিও বিপৎসীমার কাছাকাছি রয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।

সিলেট : সিলেটে গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকেই থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। এতে জনজীবনে দেখা দিয়েছে অস্থিরতা। সকাল থেকে ভারী বৃষ্টির কারণে মহানগরের বেশ কিছু নিচু এলাকায় সাময়িক জলাবদ্ধতা দেখা গেছে।  

আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, সিলেটে মঙ্গলবার ভোর ৬টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত ৯ ঘণ্টায় ১৮৪ মি.মি বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। সিলেট ও আশপাশের উপজেলাগুলোতে সকাল থেকেই টানা বৃষ্টি হচ্ছে। এদিকে গেল কয়েকদিন ধরে সিলেটের নদ নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। যদিও বিপৎসীমার নিচে রয়েছে সব নদীর পানি। তবে ভারতের মেঘালয় ও আসামে টানা ভারি বর্ষণ খবর পাওয়া গেছে। এতে সিলেটের মানুষের মধ্যে বন্যার আতঙ্ক চেপে বসেছে। 

সিলেটে সকাল থেকে বৃষ্টি হওয়ায় কারণে রাস্তাঘাট অনেকটাই ফাঁকা। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বের হচ্ছেন না। অনেকেই বৃষ্টিতে ভিজে কর্মস্থলে যেতে দেখা গেছে আবার আটকে পড়ছেন রাস্তায়। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারী নদ-নদীর পানি বৃষ্টির কারণ হলেও তা বন্যার কারণ হবে না। সিলেট পার্শ্ববর্তী মেঘালয় ও আসামের ভারী বর্ষণ হলে সিলেট অঞ্চলে বন্যা দেখা দিতে পারে।

অন্যদিকে, আবহাওয়া অধিদপ্তর আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারী বর্ষণ ও দমকা হাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে। সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ সজিব হোসাইন জানান, আগামী ২৪ ঘন্টা বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে।


দিকে কয়েক দিনের টানা বজ্রবৃষ্টি ও ভারতের মেঘালয় রাজ্য থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় ভোগাই ও চেল্লাখালী নদীর পানি ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে অকাল বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। 

মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় চেল্লাখালী নদীর পানি বারোমারী বাজার পয়েন্টে বিপৎসীমার ১২৬ সেন্টিমিটার ওপরে এবং ভোগাই নদীর পানি বিপৎসীমার ২৬৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় নদীর পানি আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। চেল্লাখালী নদীর বারোমারী পয়েন্টের গেজ পাঠক আলমগীর হোসেন এবং ভোগাই নদীর পৌরসভা পয়েন্টের গেজ পাঠক মুকুল মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

সূত্রে জানা গেছে, গত ৩-৪ দিন ধরে নালিতাবাড়ী উপজেলায় এবং ভারতের মেঘালয় রাজ্যে টানা বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এতে করে নদীগুলোর পানি হঠাৎ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং নদী উপচে বেড়িবাঁধ ভেঙে গেলে ঘরবাড়ি ও ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। তবে নতুন করে বৃষ্টিপাত না হলে ঢলের পানি ভাটির দিকে সরে যাবে, ফলে বন্যা পরিস্থিতির সম্ভাবনা কমে যাবে। অতিরিক্ত বৃষ্টির ফলে বোরো ধান কাটতে হিমশিম খাচ্ছেন কৃষকরা। মাড়াই ও শুকানোর কাজও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। উপজেলা কৃষি বিভাগ আগাম সতর্কবার্তা দিয়ে কৃষকদের ধান কাটার পরামর্শ দিয়েছে। অনেক কৃষক ইতোমধ্যে ধান কাটলেও, আবহাওয়ার কারণে অনেক জমির ধান এখনো কাটতে পারেননি। রোদ না থাকায় কাটা ধানও ঠিকভাবে শুকানো যাচ্ছে না। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, “এই উপজেলায় প্রায় ৯৬ শতাংশ বোরো ধান ইতোমধ্যে কাটা হয়েছে। বাকি ৪ শতাংশ ধান খারাপ আবহাওয়ার কারণে এখনো কাটা সম্ভব হয়নি। রোদ না থাকায় কৃষকেরা ধান শুকাতেও পারছেন না।” 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা আক্তার ববি বলেন, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ভোগাই ও চেল্লাখালী নদীর পানি বেড়ে গেছে। এতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে অকাল বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্র খোলা, শুকনো খাবার বিতরণ ও স্বেচ্ছাসেবক দল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সবাইকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

Link copied!