Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৬ মে, ২০২৫,

বন্ধ রয়েছে রেলের বিপুলসংখ্যক ট্রেন

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

মে ২৬, ২০২৫, ১২:১৬ এএম


বন্ধ রয়েছে রেলের বিপুলসংখ্যক ট্রেন

দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ের বিপুলসংখ্যক ট্রেন। মূলত ইঞ্জিন ও কোচ সংকটে বাংলাদেশ রেলওয়ের স্বল্প ও মাঝারি দূরত্বের ৭০টি ট্রেনের চলাচল বন্ধ রয়েছে। তার মধ্যে ৩৩টি কমিউটার ট্রেন, ২১টি লোকাল, ১০টি মিশ্র, চারটি মেইল ও দুটি শাটল ট্রেন রয়েছে। 

বিগত ২০২০ সালে করোনা মহামারির সময় সারা দেশেই ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। তারপর ট্রেন চালু হলেও বিপুলসংখ্যক ট্রেন তখন থেকেই বন্ধ রয়েছে। বন্ধ ট্রেনের মধ্যে সান্তাহার-পঞ্চগড় রুটের উত্তরবঙ্গ মেইল একটি। বন্ধ হয়ে যাওয়া ট্রেনগুলো চালু করতে ইঞ্জিন সংগ্রহ জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ রেলওয়ে সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বর্তমানে সারা দেশে বাংলাদেশ রেলওয়ের মোট ১২০টি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করে। তার মধ্যে পূর্বাঞ্চলে ৫৮টি এবং পশ্চিমাঞ্চলে ৬২টি। আর কমিউটার ও মেইল ট্রেন চলাচল করে ১২৮টি। তার মধ্যে পূর্বাঞ্চলে ৬০টি এবং পশ্চিমাঞ্চলে চলে ৬৮টি। তাছাড়া সারা দেশে ৮টি কনটেইনার ট্রেন এবং ১৯টি গুডস ট্রেন চলাচল করে। সব মিলিয়ে বর্তমানে চালু আছে ২৭৫টি ট্রেন। আর বর্তমানে রেলের বহরে মোট ২৯৭টি ইঞ্জিন রয়েছে। তার মধ্যে মিটারগেজ ইঞ্জিন ১৬৭টি ও ব্রডগেজ ইঞ্জিন ১৩০টি। 

রেলট্র্যাকে যুক্ত হওয়ার পর একটি ইঞ্জিনের অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল ২০ বছর ধরা হয়। বর্তমানে অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল রয়েছে রেলওয়েতে এমন ইঞ্জিনের সংখ্যা ১৪৭টি। বাকি ১৫০টি ইঞ্জিনের মধ্যে ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সি ৫০টি ও ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সি ১৬টি ইঞ্জিন রয়েছে। অবশিষ্ট ৮৪টি ইঞ্জিনের বয়স ৪০ বছর পেরিয়ে গেছে। সব মিলিয়ে বর্তমান রেলওয়ের বহরে থাকা ইঞ্জিনগুলোর মধ্যে ৫১ শতাংশের অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল পেরিয়ে গেছে।

সূত্র জানায়, বর্তমানে পূর্বাঞ্চল রেলে মোট ৩২টি ট্রেন বন্ধ রয়েছে। তার মধ্যে ময়মনসিংহ-দেওয়ানগঞ্জ বাজার রুটের ২টি লোকাল, ময়মনসিংহ-ভৈরববাজার রুটের ৪টি লোকাল, সিলেট-ছাতকবাজার রুটের ৪টি লোকাল, আখাউড়া-সিলেট রুটের ২টি মেইল, লাকসাম-চাঁদপুর রুটের ২টি কমিউটার, লাকসাম-নোয়াখালী রুটের ২টি কমিউটার, চট্টগ্রাম-নাজিরহাট রুটের ৬টি কমিউটার, চট্টগ্রাম-চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় রুটের ৪টি কমিউটার, ঢাকা-হাই-টেক সিটি রুটের ২টি কমিউটার ও ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটের ৪টি কমিউটার ট্রেন।

আর পশ্চিমাঞ্চল রেলে গোয়ালন্দ-ঈশ্বরদী ও ঈশ্বরদী রাজবাড়ী রুটে একটি করে মিশ্র ট্রেন, রাজবাড়ী-গোয়ালন্দঘাট রুটে একটি লোকাল, ঈশ্বরদী-পার্বতীপুর রুটে ২টি লোকাল, পার্বতীপুর-চিলাহাটি রুটে ২টি মিশ্র, রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ রুটে ২টি শাটল, রাজবাড়ী-ভাঙ্গা রুটে ২টি কমিউটার, ঢাকা-ভাঙ্গা রুটে ২টি কমিউটার, সান্তাহার-পঞ্চগড় রুটে ২টি মেইল, পার্বতীপুর-লালমনিরহাট রুটে ২টি কমিউটার, পার্বতীপুর-পঞ্চগড় রুটে ২টি কমিউটার, লালমনিরহাট-পার্বতীপুর রুটে ২টি কমিউটার, রংপুর-লালমনিরহাট রুটে একটি কমিউটার, কাউনিয়া-রমনাবাজার রুটে একটি কমিউটার, রমনাবাজার-রংপুর রুটে আরও একটি কমিউটার ট্রেন বন্ধ রয়েছে।

তার বাইরে লালমনিরহাট পার্বতীপুর রুটে ২টি করে লোকাল ও মিশ্র ট্রেন, পার্বতীপুর-পঞ্চগড় রুটে ২টি করে লোকাল ও মিশ্র ট্রেন, লালমনিরহাট-বুড়িমারী রুটে ২টি করে লোকাল ও মিশ্র ট্রেন এবং সান্তাহার-লালমনিরহাট রুটে ২টি লোকাল ট্রেন। তাছাড়া দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে চলাচলকারী বন্ধন, মিতালি এবং মৈত্রী ওই তিন জোড়া অর্থাৎ ৬টি ট্রেন চলাচল বন্ধ আছে।

এদিক রেল ইঞ্জিন প্রসঙ্গে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক আফজাল হোসেন জানান, রেলওয়ে ইঞ্জিন সংগ্রহে কাজ করে যাচ্ছে। মিটার গেজ ও ব্রড গেজ মিলিয়ে সারা দেশে এখন আরও ৯০টির মতো ইঞ্জিন প্রয়োজন। নতুন ইঞ্জিন কেনার জন্য পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। প্রথম ধাপে এডিবির অর্থায়নে মিটার গেজের জন্য ৩০টি ইঞ্জিন কেনার প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।

Link copied!