Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪,

‘ইসলামী দাওয়াহ ইনিস্টিউটের জাতীয় সেমিনার’

রাসুলের আদর্শের প্রতিচ্ছবি নিজেদের কাজে ও কর্মে ফুটিয়ে ফুলতে হবে: বিচারপতি আব্দুর রউফ

মো. মাসুম বিল্লাহ

নভেম্বর ৩, ২০২২, ১০:৩৮ পিএম


রাসুলের আদর্শের প্রতিচ্ছবি নিজেদের কাজে ও কর্মে ফুটিয়ে ফুলতে হবে: বিচারপতি আব্দুর রউফ

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিচারপতি মুহাম্মদ আব্দুর রউফ বলেছেন, কুরআন ও হাদিস দিয়ে সহজ-সরল ভাবে ইসলামের দাওয়াত সকলের সামনে উপস্থাপন করতে হবে। রাসুলের আদর্শের প্রতিচ্ছবি নিজেদের কাজে ও কর্মে ফুটিয়ে ফুলতে হবে। একজন ঈমানদার ও মুসলিম হিসেবে ইসলাম আদর্শকে সকলের কাছে পৌঁছে দেওয়া আমাদের দায়িত্ব।

বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর)রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম মিলনায়তনে  ইসলামী দাওয়াহ ইনিস্টিটিউটের উদ্যোগে আয়োজিত “রাসূলুল্লাহ (সা)-এর দাওয়াতের কৌশলঃ প্রেক্ষিত বাংলাদেশ” শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ ড. মুহাম্মদ আবু ইউসুফ খানের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি’র সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর ও বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি’র সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আব্দুর রব। সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়ার দাওয়াহ এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবুল কালাম পাটওয়ারী।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিচারপতি মুহাম্মদ আব্দুর রউফ বলেন, সৃষ্টিজগৎ সম্পর্কে আমাদের জানার বাহিরেও অনেক কিছু রয়েছে। আমরা সেগুলোকে না দেখেও বিশ্বাস করি। ইসলামের বয়স কতদূর জানতে চাইলে অনেকে বিভিন্ন ধরনের উত্তর প্রদান করেন। যেমন- অনেকে বলেন আমাদের সৃষ্টি জগতের শুরু হযরত আদম (আ) থেকে অথবা কেউ কেউ বলেন হযরত মুহাম্মদ (সা) থেকে ইসলাম। মূলত সৃষ্টির শুরু থেকেই ইসলাম কার্যকর। আল্লাহ মানুষকে সকল কিছু ধারণ করবার জ্ঞান ও সামর্থ্য দিয়েছেন। কুরআন ও হাদিস দিয়ে সহজ-সরল ভাবে ইসলামের দাওয়াত সকলের সামনে উপস্থাপন করতে হবে। রাসুলের আদর্শের প্রতিচ্ছবি নিজেদের কাজে ও কর্মে ফুটিয়ে ফুলতে হবে। একজন ঈমানদার ও মুসলিম হিসেবে ইসলাম আদর্শকে সকলের কাছে পৌঁছে দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। আল্লাহ তা‍‍`আলা আমাদেরকে দাওয়াতে দ্বীনের এই মহান দায়িত্ব পালনে সাহায্য করুন।

অধ্যাপক ড. আব্দুর রব বলেন, আমাদের দেশের তরুণ প্রজন্মের কাছে দাওয়াত দিতে হবে। কারণ তরুণরা আজ পথভ্রষ্ট হচ্ছে। তাদের জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে ইসলামী অলিম্পিয়াড করতে হবে। মা বোনদের মাঝে দাওয়াত দিতে হবে। সমাজকল্যাণ মূলক কাজ আরও বৃদ্ধি করতে হবে। মক্তব শিক্ষা আবারও চালু করতে হবে। মসজিদকে ইসলামের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কাজের কেন্দ্র বানাতে হবে।  

অধ্যাপক ড. আবুল কালাম পাটওয়ারী তার প্রবন্ধে বলেন, রাসূল (সা) ছিলেন শ্রেষ্ঠ দাঈ-ইলাল্লাহ বা আল্লাহর প্রতি আহবান কারী। তিনি মানুষকে আল্লাহর একত্ববাদ ও কল্যাণের দিকে আহবান করতেন। সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ করতেন। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ঈমানদারদের জন্য দাওয়াতের এই কাজকে ফরজ করে দিয়েছেন। ইসলামের দাওয়াতের ক্ষেত্রে আল্লাহ যে পন্থা বা পদ্ধতি নির্ধারণ করে দিয়েছেন এবং রাসুল (সা) তার জীবনে দাওয়াতের ক্ষেত্রে যে সকল পদ্ধতি অবলম্বন করেছেন আমাদেরও সেভাবে দাওয়াতি কাজ করতে হবে। তিনি হেকমত বা কৌশলের সাথে দাওয়াত দিয়েছেন। প্রথমে গোপনীয়তার সাথে দাওয়াতি কাজ করেন এসময় তিনি নিজের পরিবার, আত্মীয় স্বজন ও পরিচিত বন্ধুদের দাওয়াত প্রদান করেন। পরবর্তীতে তিনি প্রকাশ্যে ও ছোট ছোট সভার মাধ্যমে দাওয়াত প্রদান করেন। রাসুল (সা) যে আদর্শের দিকে আহবান করেছিলেন তা তিনি আগে নিজের হৃদয়ে ধারণ করেছিলেন ফলে সেই আদর্শের প্রতিচ্ছবি তার কাজে ও কর্মে ফুটে উঠেছিল। পরবর্তীতে সাহাবায়ে কেরাম সেই আলোকে ইসলামের সুমহান আদর্শকে চারিদিকে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। আমাদেরকেও ঈমান ও নৈতিক চরিত্রের বলে বলীয়ান হয়ে দাওয়াতে দ্বীনের কাজ আঞ্জাম দিতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যক্ষ আবু ইউসুফ খান বলেন, ইসলামের আদর্শের জন্য কোন আপোষ নয়। আমাদের দাওয়াত হিকমতের সাথে করতে হবে। দাওয়াতের জ্ঞান অর্জন করতে হবে। রাসুল সাঃ আদর্শ অনুসরণ করে প্রত্যেক মুসলিমকে দায়ী হিসেবে গড়ে তুলে সকল মানুষের মধ্যে দাওয়াতি কাজ করতে হবে।

প্রকৌশলী সৈয়দ আব্দুল আজিজ বলেন, যে সমাজে আমরা বসবাস করি সেই সমাজে ১ কোটির বেশি অমুসলিম আছে। তাদেরকে দাওয়াত দেয়ার দরকার এবং দাওয়াতের কৌশল নির্ধারণ করার দরকার।  

এছাড়াও সেমিনারে অতিথিবৃন্দ তাদের আলোচনায় বলেন, বাংলাদেশে যারা দাওয়াতি কাজ তথা দাঈ-ইলাল্লাহর কাজ করেন তাদেরকে রাসূল (স)-এর দাওয়াতের পদ্ধতি ও কৌশল সম্পর্কে জানতে হবে। বিশেষ করে আল-কুরআন, হাদীস, সীরাতুন্নবী (স) এবং সাহাবী, তাবিঈ ও পূর্ববর্তী আলেমদের দাওয়াতী কৌশল জানতে হবে। বাংলাদেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, সামাজিক ও ধর্মীয় অবস্থাকে সামনে রেখে ইসলামের সুমহান আদর্শের দাওয়াত দিতে হবে। মানুষের সাথে কঠোরতার পরিবর্তে ইসলামের সহজ নীতি গ্রহণ করতে হবে। ইসলামের ছোট ছোট বিষয়ে পারস্পরিক হিংসা, বিদ্বেষ থেকে বিরত থেকে ইসলামের মূলনীতির ক্ষেত্রে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

ইএফ

Link copied!